ভাড়া দিমু কেমনে?

, জাতীয়

নিউজ ডেস্ক, বার্তা ২৪ | 2023-08-31 16:55:53

মনির হোসেন। একটি ফ্যাশন হাউজে কাজ করেন। স্ত্রী-সন্তান ও বৃদ্ধা মাকে নিয়ে ভাড়া থাকেন রাজধানীর ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার পশ্চিম মাটিকাটায়। কঠোর বিধিনিষেধে তার ফ্যাশন হাউজ বন্ধ হয়ে গেছে। এখন ভাড়া পরিশোধ করবেন কিভাবে আর সংসারের খরচ চালাবেনই বা কিভাবে সেই চিন্তায় অস্থির তিনি।

মনির বলেন, খায়া না খায়া কিংবা ধার-দেনা কইরা না হয় থাকলাম। ভাবতেছি ভাড়া দিমু কেমনে?

হাছান শেখ। রিকশাভ্যানে গার্মেন্টসের পোশাক বিক্রি করেন। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে ভাড়া থাকেন ভাষাণটেক এলাকার দেওয়ান পাড়ায়। হাছান জানান, ভ্যান নিয়ে এক দুই দিন যাও বের হয়েছেন- বেচা-কেনা খুব একটা হয়নি। বাসা ভাড়া তো দূরে থাক তার ভ্যানের গ্যারেজ ভাড়াও দিতে পারবেন কিনা সন্দেহ।

হাছান বলেন, সামনে কোরবানি ঈদ, বেচাকেনা ভালো হইবে দেখে ধার করে বেশি করে জামা-কাপড় কিনেছি। এখন তো বেচতে পারতাছি না। ধারের টাকাই দেবো নাকি ভাড়া দেবো!

রাহিজা আক্তার। মানুষের বাসায় ছুটা বুয়ার কাজ করেন। ভাড়া থাকেন অসুস্থ স্বামী-সন্তান নিয়ে উত্তর ভাষাণটেক এলাকায়। কঠোর বিধিনিষেধ শুরু হওয়ায় কাজ থেকে তাকেও বাদ দিয়ে দিয়েছে। স্বামীর ওষুধ কিনবেন নাকি চাল কিনবেন এনিয়েই দুশ্চিন্তায় তিনি। বাসা ভাড়ার কথা এখনো ভাবতেও পারছেন না।

রাহিজা বলেন, চাল কিনতে পারি না- ওষুধ কিনতে পারি না; ঘরভাড়া কেমনে দিমু।

মনির হোসেন, হাছান শেখ ও রাহিজা আক্তারই শুধু নন; তাদের মতো কর্মহীন হয়ে পড়া শত শত মানুষ এখন দুশ্চিন্তায়। সামনে অন্ধকার দেখছেন তারা। সাধারণত মাসের ১ থেকে ১০ তারিখের মধ্যে গুনতে হয় বাসাভাড়ার টাকা। বেসরকারি চাকরিজীবী, শপিং মল, মার্কেট, শোরুম, কারখানা, পোলট্রি ফার্ম, অধিকাংশ ভাড়াটেরই এমন অবস্থা করোনার এই দুর্যোগকালে।

ঢাকা দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় বসবাস করেন প্রায় দুই কোটি মানুষ। এর মধ্যে ৮০ ভাগ লোকই ভাড়া বাসায় থাকেন। বেশিরভাগ মানুষের আয়ের অর্ধেকটা চলে যায় বাড়ি ভাড়ায়। করোনায় লকডাউনের কারণে দশ দিন ধরে সংকুচিত তাদের আয়-উপার্জনের পথ।

অনেক ভাড়াটিয়া এখনও বাড়িভাড়া দিতে পারেননি। ঘরবন্দি থাকা শ্রমজীবী ও চাকরিজীবী মানুষ এখন হিমশিম খাচ্ছে। আয়ের পথ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তারা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর