দেশে করোনা সংক্রমণের বিপর্যস্ত অবস্থার মধ্যেই আজ থেকে আগামী ২৩ জুলাই সকাল ৬টা পর্যন্ত বিধিনিষেধ শিথিল করেছে সরকার। ঈদুল আজহা উদযাপন উপলক্ষে সরকার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে সব ধরনের গণপরিবহন এবং শপিং মলসহ দোকানপাট খোলা থাকবে।
গত দুই সপ্তাহ ধরে মৃত্যুও বেড়েছে রেকর্ড পরিমাণ। গত চার দিন ধরে দৈনিক গড়ে ২১৬ জন মারা যাচ্ছে। এমনকি গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে দৈনিক নতুন মৃত্যু ও রোগী শনাক্তে বিশ্বের শীর্ষ ১০ দেশের তালিকার মধ্যে বাংলাদেশ অবস্থান করছে।
বিধিনিষেধ শিথিলে সরকারের এ সিদ্ধান্ত সঠিক হয়নি বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, এতে করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া ও পরিস্থিতি আরও জটিল হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মুখপাত্র অধ্যাপক ডা. রোবেদ আমিন গণমাধ্যমকে বলেছেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও স্বাস্থ্য অধিদপ্তর মনে করে এই বিধিনিষেধ শিথিল করা সাপেক্ষে আমাদের সংক্রমণ বৃদ্ধি হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে যেন গণপরিবহন, বাজার ও পশুর হাট এবং শপিং মলগুলো খোলা রাখা হয় সেটা স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বারবার কঠোরভাবে বলার চেষ্টা করছে।
তিনি বলেন, পরিবহনে যাত্রীর সংখ্যা অর্ধেক করা না হলে সংক্রমণের মাত্রা কমার কোনো সুযোগ থাকবে না। ঢাকায় ১৭-২১ জুলাই পর্যন্ত কোরবানির পশুর হাট বসবে, সেখানে স্বাস্থ্যবিধি না মানলে সংক্রমণ বাড়তে পারে। তাই বিধিনিষেধ শিথিল করা হোক বা না হোক, আমাদের ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতেই হবে।
জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ সহিদুল্লা গণমাধ্যমকে বলেছেন, সরকার পর্যটন কেন্দ্র, বিয়েশাদি, জনসমাবেশ বন্ধ রেখেছে। এটার সঙ্গে যদি আমরা সবাই সত্যিকার অর্থে অপ্রয়োজনে বের না হই ও মাস্কটা পরি আর কোরবানির হাটে যতটা সম্ভব না যাওয়া ও অনলাইনে পশু কেনাবেচা করা যায়, যারা যাবে তারা স্বাস্থ্যবিধি মানবে আমি মনে করি সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে এটা হবে মন্দের ভালো। আর সেটা না হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
এদিকে চলমান কঠোর লকডাউন আরও ১৪ দিন বাড়ানোর সুপারিশ করেছে কোভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটি। সেই সঙ্গে লকডাউন শিথিল করায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে কমিটি। পাশাপাশি কুরবানি পশুর হাট বন্ধের প্রস্তাব করা হয়েছে। বুধবার রাত ১১টার দিকে গণমাধ্যমে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে গৃহীত সুপারিশের বিষয়ে জানানো হয়।