বাড়ি ছেড়েছেন লাঞ্ছিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই

  • ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কুমিল্লা
  • |
  • Font increase
  • Font Decrease

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

নিরাপত্তাহীনতার কারণে বাড়ি ছেড়েছেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে লাঞ্ছিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই ওরফে কানু (৭৮)।

রোববার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলেই তিনি কুমিল্লা থেকে ফেনীতে চলে যান বলে জানা গেছে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে লাঞ্ছিত করার ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনা ঝড় বইছে।

বাড়ি ছাড়ার বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই বলেন, তিনি এখন ফেনীতে তার ছেলের সঙ্গে অবস্থান করছেন। মারধর করায় সেখানে চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশ ও প্রশাসন নিরাপত্তা নিশ্চিত করলে চৌদ্দগ্রামে বাড়িতে ফিরে আসবেন বলেও জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

ওইদিনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আব্দুল হাই বলেন, গতকাল দুপুরে তিনি ওষুধ কিনতে বাড়ির কাছে বাজারে গিয়েছিলেন। এ সময় স্থানীয় জামায়াত কর্মী আবুল হাসেমের নেতৃত্বে ১০-১২ জন তাকে ধরে জুতার মালা পরিয়ে দেন। সেই সঙ্গে তাকে দ্রুত এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়।

আব্দুল হাইয়ের বাড়িতে গিয়ে তার স্ত্রী রেহানা বেগমের সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, গতকালের ঘটনায় আত্মসম্মানে আঘাত পেয়েছেন তার স্বামী। এ কারণে ঘটনার পর পরই তিনি এলাকা ছেড়ে ফেনী চলে যান। মূলত জামায়াত নেতা হোসেন মজুমদার নেতৃত্বে নিযার্তন করা হয়।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দুই দফায় তাদের বাড়িতে হামলা হয়। হামলাকারীরা তাদের এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ করার কারণেই তাদের বাড়িতে হামলা হয় বলে দাবি করেন তিনি।

অভিযোগের বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমির মো. মাহফুজুর রহমান বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় জামায়াতের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। প্রবাসী আবুল হাসেম আমাদের দলের কেউ না। তবে সমর্থক কিংবা অনুসারী হলেও হতে পারে। এ বিষয়ে আরও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

চৌদ্দগ্রাম থানার ওসি এটিএম আক্তারুজ্জামান বলেন, ঘটনার পর ভিডিও ফুটেজ দেখে এরই মধ্যে ৭/৮ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে জড়িতদের গ্রেফতারের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাদের গ্রেফতারে অভিযান চালাচ্ছে পুলিশের একাধিক টিম। তবে ঘটনার পর থেকে জড়িতদের কেউই এলাকায় নেই।

জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা সফিউল আহমেদ বাবুল বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কানু আওয়ামী লীগ করেও বিভিন্ন সময়ে মিথ্যা মামলা হামলার শিকার হয়েছেন। কারাগারে গেছেন। তার ভুলক্রটি থাকলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ ছিল।

তিনি আরও বলেন, এভাবে একজন মুক্তিযোদ্ধাকে প্রকাশ্যে জুতার মালা গলায় দিয়ে লাঞ্ছিত করার প্রতিবাদ জানানোর ভাষা আমাদের জানা নেই। আমরা সরকারকে বলবো ১২ ঘণ্টার মধ্যে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে হবে। না হয় সারাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা প্রতিবাদ করতে রাস্তায় নামবেন।

চৌদ্দগ্রাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রহমত উল্লাহ বলেন, মিডিয়ার মাধ্যমে খবর পেয়ে আমরা ওনার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করেছি। বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানুর সাথেও কথা হয়েছে উনি ফেনীতে আছেন। উনার সাথে যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি অবশ্যই অনাকাঙ্ক্ষিত। উনাকে আইনিভাবে সহায়তা করার জন্য যে যে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন আমরা সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।