পবিত্র ঈদ-উল-আজহা (কোরবানি) উপলক্ষে লোকসমাগম বাড়ায় বরিশাল তথা গোটা দক্ষিণাঞ্চলে আবারও বাড়তে শুরু করেছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা।
কোরবানির আগে যে আক্রান্তের হার ছিল তারচেয়ে কোরবানির পরে তা বেড়েছে কয়েকগুণ। অবশ্য কোরবানির ছুটি শেষে নমুনা সংগ্রহ এবং ফলাফলও বাড়ছে। একই সাথে বাড়ছে উপসর্গ নিয়ে মৃত্যুর সংখ্যাও।
বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় গত ২৪ ঘণ্টায় ৭৬৬ জনের শরীরে করোনা শনাক্ত হয়েছে। যার হার ৪১ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আর গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগে করোনায় ও উপসর্গে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের।
বরিশাল স্বাস্থ্য বিভাগ সূত্রে জানা যায়, কোরবানির আগে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় চলতি মাসের ২১ জুলাই আক্রান্ত হয়েছিলো ২৭৪ জন, ২২ জুলাই ১৪৯ জন, ২৩ জুলাই ১৮৩ জন, ২৪ জুলাই ১৫০ জন কিন্তু ২৫ জুলাই একলাফে আক্রান্ত বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৬৬ জনে।
আর ২২ জুলাই থেকে ২৫ জুলাই পর্যন্ত করোনা উপসর্গ নিয়ে শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৪০ জন এবং বিভাগে করোনায় আক্রান্ত হয়ে ২১ জনের মৃত্যু হয়েছে।
সর্বশেষ আক্রান্ত নিয়ে বিভাগে (গত বছরের ৯ এপ্রিল থেকে চলতি বছরের ২৫ জুলাই পর্যন্ত) মোট আক্রান্ত হয়েছেন ২৮ হাজার ৯১১ জন, সুস্থ ১৭ হাজার ৭৫৯ জন ও মৃত্যু হয়েছে ৪২০ জনের।
আর বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে শুরু করে চলতি বছরের ২৫ জুলাই সকাল ৮ টা পর্যন্ত শেবাচিম হাসপাতালের করোনা ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মোট ১০০১ জনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে করোনার উপসর্গ নিয়ে ৭২৪ জন ও করোনা পজেটিভ হয়ে ২৭৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
মানিক হাওলাদার নামে করোনা পজেটিভ এক রোগী জানান, চাচাতো ভাইয়ের ছেলে কোরবানির উদ্দেশ্যে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়িতে এসেছে। কোরবানির পরের দিন থেকে তাঁর শ্বাসকষ্ট বেড়েছে। তারপর নমুনা পরীক্ষা করতে দেই। পড়ে পজেটিভ আসে।
স্থানীয় বিশ্লেষক ও প্রবীণ সাংবাদিক আনিসুর রহমান খান স্বপন বার্তা২৪.কম কে জানান, কোরবানি কে ঘিরে মানুষ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত না করেই ঘোরাফেরা, কেনাকাটা ও যাতায়াত করেছে। এতে করে করোনার সংক্রামণের হার বাড়বে। কেননা, দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কোরবানি উপলক্ষে বরিশালে যাতায়াত করছে কয়েকলাখ মানুষ। আর বিশেষ করে বরিশাল শহরের ওপর দিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা লোকজন দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে যাতায়াত করছে। ফলে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনে আক্রান্তের হার বেশি।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী পরিচালক ডাক্তার শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বার্তা২৪.কম কে জানান, লোকসমাগম বাড়লেই করোনা সংক্রামণ বাড়ে। এসময় স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হয়। না হলে সংক্রামণের হার বেশি বাড়ে। পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মানা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা ছাড়া করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব নয় বলেও মনে করছেন তিনি।