দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের পর বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় গত ১৬ মাসের মধ্যে চলতি বছরের জুলাই মাসে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু ও রোগী শনাক্ত হয়েছে। জুলাইয়ের আগে ১৫ মাসে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ১৯ হাজার ৩৬৯ জন। আর শুধুমাত্র জুলাই মাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ২৫৮ জন।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বরিশাল বিভাগে এসে যাতায়াত, চলাচল, কেনাকাটাসহ লোকসমাগম বাড়ায় এখানে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয় বিশ্লেষকরা।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগের তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের ১১ মার্চ থেকে বরিশাল বিভাগে করোনায় আক্রান্ত, সুস্থ ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান শুরু করে স্বাস্থ্য বিভাগ।
পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, সংক্রমণ শুরু থেকে চলতি বছরের ২ আগস্ট পর্যন্ত বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৩৪ হাজার ৬২৭ জন, যাদের মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ১৯ হাজার ৪৩৬ জন। আর মারা গেছেন ৪৮৭ জন।
এরমধ্যে শুধু চলতি বছরের জুলাই মাসেই আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ হাজার ২৫৮ জনে। আর মৃত্যু হয়েছে ১৫৮ জনের। যা মোট আক্রান্ত ও মৃত্যুর অর্ধেকের কাছাকাছি ।
স্থানীয় বিশ্লেষক ও প্রবীণ সাংবাদিক আনিসুর রহমান খান স্বপন বার্তা২৪.কমকে জানান, কোরবানির ঈদ ঘিরে মানুষ স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত না করেই ঘোরাফেরা, কেনাকাটা ও যাতায়াত করেছে। এতে করে করোনার সংক্রামণের হার বেড়েছে।
তিনি বলেন, কেননা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কোরবানি উপলক্ষে বরিশালে যাতায়াত করছে কয়েক লাখ মানুষ। আর বিশেষ করে বরিশাল শহরের উপর দিয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত দিয়ে আসা লোকজন দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন রুটে যাতায়াত ও কেনাকাটা করছে। ফলে বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকা জেলায় আক্রান্তের হার বেশি।
করোনার উপসর্গ থাকা রোগীদের নমুনা পরীক্ষার হার বাড়ালে করোনা পজেটিভ সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলেও ধারণা করছেন তিনি।
বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য বিভাগের সহকারী পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বার্তা২৪.কমকে জানান, লোকসমাগম বাড়লেই যেকোনো সংক্রামণই বাড়ে। বর্তমানে করোনা পরিস্থিতিতে বেশি বেশি স্বাস্থ্যবিধি মানার পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করতে হবে। না হলে সংক্রামণের হার দিনে দিনে বাড়তেই থাকবে৷ পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মানা ও সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা ছাড়া করোনা প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়।