নজিরবিহীন উৎসবমুখরতা আর জনগণের পূর্ণ ম্যান্ডেটে নারায়ণগঞ্জ নগরীর তৃতীয়বারের মতো মেয়রের মুকুট পেলেন ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভি। প্রায় দ্বিগুণ ভোটে তৈমুরকে হারিয়েছেন তিনি। নতুন মোড়কে পুরাতন মেয়রের শপথ গ্রহণ অব্দি অপেক্ষা করতে হবে পালা নগরবাসীকে।
রোববার (১৬ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে বিশাল ব্যবধানে জয় নিশ্চিত করেছেন আহাম্মদ আলী চুনকার জ্যেষ্ঠ কন্যা আইভী। ১৯২টি কেন্দ্রে তিনি পেয়েছেন সর্বমোট ১,৫৯০৯৭ ভোট। তার নিকটতম হ্যাভি ওয়েট প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার পেয়েছেন ৯২,১৬৬ ভোট। ক্ষমতাসীন দলের আমলে নারায়ণগঞ্জের মত ভীতি সঞ্চারকারী স্থানে এমন সুষ্ঠ নির্বাচন আশার আলো দেখাবে বলে মনে করছেন নগরের সচেতন নাগরিকরা। নির্বাচনে আইভী-তৈমুর কোনও ইশতেহার না দিলেও অনেক প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তারা।
নগরবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি, দ্বিখণ্ডিত শীতলক্ষ্যাকে একটি সেতুতে এক করা। একপাশের শহর আর অন্য পাশের বন্দরকে যেন এক করে দেন নগর অভিভাবকরা। সেই হাল ধরার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিলেন বিগত দুই টার্মের নির্বাচিত ও বর্তমান মেয়র আইভী।
প্রচারণার সময় তিনি বলেছিলেন, ‘দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে চেষ্টা করব প্রধানমন্ত্রীকে দিয়ে কদম রসুল ব্রিজটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করানোর। কারণ এটা অলরেডি অনেক কাজ হয়ে গিয়েছে। অল্প একটু বাকি আছে। ওই কাজটিকে প্রাধান্য নিয়ে অন্যান্য কাজগুলো করব।’
তৃতীয়বারের মত নাসিকের গদিতে বসতে চলেছেন আইভী। নতুন এই মেয়াদে কতটুকু সফল হবেন সেটা দেখতে হলে অপেক্ষা করতে হবে আনুষ্ঠানিকভাবে নাসিকের কার্যক্রম শুরু হওয়া পর্যন্ত।
এর আগে সকাল ৮টায় ভোট গ্রহণ শুরু হয়। নারায়ণগঞ্জ সিটির ১৯২ কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট হয়েছে। নির্ধারিত সময় অধিকাংশ কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ শেষ হলেও কয়েকটি কেন্দ্রের সামনে লাইনে থাকা ভোটাররা ৪টার পরেও ভোট দিয়েছেন। ভোট গ্রহণে কোথাও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি। তবে বেশকিছু কেন্দ্র ভোটারের আঙুলের ছাপ না মেলায় ভোট দিতে দেরি হয়েছে।
২০১১ সালের ৫ মে প্রতিষ্ঠিত নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন। সিটি করপোরেশন প্রতিষ্ঠার পর ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম নির্বাচনে ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী এক লাখ ৮০ হাজার ৪৮ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনের শেষ মুহূর্তে বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্তে ভোট থেকে সরে দাঁড়ান অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার।
২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসেবে সেলিনা হায়াৎ আইভী ১ লাখ ৭৫ হাজার ৬১১ ভোটে আবার নির্বাচিত হন। সেবার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির সাখাওয়াত হোসেন পান ৯৬ হাজার ৪৪ ভোট।
এবার অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকারকে বড় ব্যবধানে তৃতীয় বারের মতো মেয়র হলেন আইভী।