‘রিকশা উপহার পাওয়ায় দুবেলা ভাত খেতে পারব’

, জাতীয়

সোহেল মিয়া, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাজবাড়ী | 2023-08-29 21:16:41

রাজবাড়ীর সদর উপজেলার শ্রীপুরের বাসিন্দা রিকশাচালক হারুণ শেখ। সহায়-সম্বল না থাকায় রিকশা চালিয়েই কোনো রকমে জীবন ধারণ করেন তিনি। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তিও হারুণই। অভাবের সংসারে তার রয়েছে একটি প্রতিবন্ধী সন্তান। দিনভর রিকশা চালিয়ে যা আয় হয়, সেটা দিয়েই চলে সংসার। রিকশার প্যাডেল ঘোর সাথে সাথে ঘোরে ভাগ্যের চাকা। যেদিন চাকা ঘোরে না সেদিন বন্ধ থাকে আয়ও। তাই রিকশাটিই তার বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন।

কিন্তু বিধাতা বিমুখ! হঠাৎ একদিন চুরি হয়ে যায় হারুণ শেখের বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন রিকশাটি। রিকশা হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন তিনি। আকাশ ভেঙ্গে পড়ে তার মাথায়। একটি নতুন রিকশা কিনবে এমন সামর্থও নেই তার। তার এই অসহায়ত্বের কথা তুলে ধরে রাজবাড়ীর সবচেয়ে জনপ্রিয় ও জনকল্যাণমূখী সামাজিক সংগঠন রাজবাড়ী হেল্পলাইনের ফেসবুক পেইজে একটি পোস্ট করেন ব্র্যাক ব্যাংকের ম্যানেজার ওমর ফারুক।

এরপরই খুলে যায় রিকশাচালক হারুণ শেখের ভাগ্যের চাকা। রাজবাড়ী হেল্পলাইন ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বুধবার (১৯ জানুয়ারি) রাজবাড়ী প্রেস ক্লাবের বিপরীতে অবস্থিত একটি রিকশার গ্যারেজ থেকে হারুণ শেখের হাতে তুলে দেওয়া হয় ব্যাটারিচালিত একটা রিকশা। রিকশাটি পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি।

অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে হারুণ শেখ বার্তা২৪.কমকে বলেন, রিকশাটিই ছিল আমার জীবনধারণের একমাত্র সম্বল। রিকশা ছাড়া আমার আর কোনো সম্পদ নেই। রিকশাটি চুরি হয়ে যাওয়ার পর আমি হতাশ হয়ে পড়ি। একটি রিকশা কিনবো, এমন সামর্থ্যও আমার নেই। প্রতিবন্ধী সন্তানকে নিয়ে আমি পুরোপুরি মানবেতর জীবনযাপন করতে থাকি। রাজবাড়ী হেল্পলাইন ফাউন্ডেশন আমাকে যে রিকশাটি উপহার দিল, তাতে আমি অন্তত দুবেলা দু’মুঠো ভাত খেতে পারবো। যারা রিকশাটি কিনে দিয়েছেন, আমি তাদের জন্য মন থেকে দোয়া করছি।

রিকশা হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সভাপতি জয়ন্ত কুমার দাস, এডমিন প্যানেলের সদস্য হিটু মামুন, মোখলেছুর রহমান, ফারুক উদ্দিন, আজাদ বিপ্লব, সোলায়মান হিমেল, ব্র্যাংক ব্যাংকের রাজবাড়ী শাখার ম্যানেজার ওমর ফারুক, প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার শাহিন আহম্মেদ, আশরাফুল আলম, জাকির হোসেন প্রমুখ।

রাজবাড়ী হেল্পলাইন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ক্যাপ্টেন ডা. সুমন হুসাইন বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমরা যা কিছু করি, তা আমাদের সামাজিক দায়বদ্ধতার জায়গা থেকেই করি। রাজবাড়ী হেল্পলাইন ফাউন্ডেশন সমাজের অসহায়-দুস্থ মানুষের সেবায় কাজ করে যাচ্ছে। আমরা যারা এই সংগঠনটির সাথে জড়িত আছি আমাদের সবার চাওয়া সমাজের প্রতিটা মানুষই যেন ভালো থাকে, সুখে থাকে। সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর