উচ্ছেদ অভিযানে ভূমিহীন হল শত শত পরিবার

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, পটুয়াখালী | 2023-09-01 00:53:41

পটুয়াখালীর লাউকাঠি নদীরপাড় সংলগ্ন খাস জমির সব স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছে জেলা প্রশাসন পটুয়াখালী।

শুক্রবার (২১ জানুয়ারি) থেকে শুরু হয়ে এখন পর্যন্ত উচ্ছেদ অভিযান চলমান রয়েছে। পটুয়াখালী সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা মো.শাহিন মাহমুদ এই উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জনাব মোঃ মনিরুজ্জামান।

উচ্ছেদ অভিযানের ফলে শত শত পরিবার রাস্তার পাশে মাঠে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। করনা ভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি ও উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনার ফলে নিম্নআয়ের মানুষ দের সামান্য ঘরে থাকা হলো না। ছোট ছোট শিশু ও বৃদ্ধ মানুষদের নিয়ে এই শীতের মধ্যে রাস্তার পাশে খোলা মাঠে অবস্থান করছে পরিবারগুলো।

লতা ইসলাম বলেন,আমার জন্মের পর থেকে দেখেছি এখানে আমাদের ঘরবাড়ি প্রধানমন্ত্রী ভূমিহীনদের জন্য ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছে, আর আমরা নিজেরা ঘর স্থাপন করে বসে আছি সেগুলো ভেঙ্গে রাস্তায় নামিয়ে দিচ্ছে। একদিন আগে মাইকিং করেছে আমাদের এখান থেকে চলে যেতে হবে। কোন নোটিশ দেয় নি এত জরুরি ভাবে ভেঙে আমাদের রাস্তায় কেন নামানো হলো আমরা সেটাই বুঝতে পারছি না। আমাদের পূর্ণবাসন করুন, আমাদের থাকার জায়গা দিন, আমাদের এই জায়গা ছাড়া কোথাও থাকার মত যায়গা নেই।

ফিরোজা বেগম বলেন, শেখ হাসিনা আপনি আমার বইন আমারে ঘরছাড়া কইরেন না, আপনার বাবার নাম শেখ মুজিব আমার বাবার নাম ও শেখ চেয়ারম্যান। আমি একদিন ছিলাম বড় ঘরের মেয়ে এখন নদীর পাড়ে ঘর উঠিয়ে থাকি। আপনি আমারে ঘরছাড়া কইরেন না।

তিনি আরোও বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনার সহযোগিতা কামনা করছি, আপনি মানুষদের ঘর করে দিচ্ছেন আর আমাদেরকে কেন রাস্তায় নামিয়ে দিচ্ছেন। বছরের পর বছর আমরা এখানে ঘর উঠিয়ে থাকি আমাদের কেন এখান থেকে উঠিয়ে দেয়া হচ্ছে। আমাদের থাকার জায়গা দিন আমরা সেখানে চলে যাব। এই শীতের মধ্যে আমরা কিভাবে রাত্রিযাপন করব। গরীব মানুষের জন্য আপনি ছাড়া কেউ নেই।

পরিবারগুলো আরও বলেন,এখানের ৫০০ বেশি পরিবার সদস্যরা ১৯৮৬ সাল থেকে জেলা প্রশাসন কর্তৃক বন্দোবস্ত নিয়ে বসবাস করেছেন ২০১২ সাল থেকে জেলা প্রশাসনের দেওয়া বন্ধবস্ত বন্ধ করে দেয়। আমাদের বন্দোবস্ত দিবে তো দূরের কথা আমাদের এখন উচ্ছেদ করছে। একটু খালি জায়গা দিল এই মাল-সামানা নিয়ে ঘর উঠিয়ে থাকতে পারি। রাস্তায় থাকা ছাড়া উপায় নেই

পটুয়াখালী সদর উপজেলা ভূমি কর্মকর্তা শাহিন মাহমুদ বলেন, পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মো. কামাল হোসেন এর নেতৃত্বে সরকারি খাস জমি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। আমরা এর আগে তাদেরকে মাইকিং করে জানিয়ে দিয়েছি। এছাড়াও উচ্ছেদ অভিযান এর আগে তারা আমার অফিসে এসেছিল তখন আমি তাদেরকে জানিয়ে দিয়েছি সকল ধরনের অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেওয়ার জন্য। ইতিমধ্যে অনেক পরিবার তারা তাদের স্থাপনা সরিয়ে নিয়েছে। বাকি যেগুলো আছে সেগুলো আমরা উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর