দেশে দিন দিন বেড়েই চলেছে করোনার নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনে মৃত্যুর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে আরও ১৮ জনের। এ সময়ে নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন আরও ১৬ হাজার ৩৩ জন। যা মহামারি শুরুর পর থেকে দৈনিক শনাক্তের হিসাবে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করোনাবিষয়ক নিয়মিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) এসব তথ্য জানানো হয় এসব তথ্য।
বাংলাদেশ প্রাইভেট মেডিকেল কলেজ এসোসিয়েশন (বিপিএমসিএ) এর আয়োজনে 'কোভিড-১৯ এর নতুন ভ্যারিয়েন্ট ওমিক্রনের পরিস্থিতি মোকাবিলায়' বেসরকারি হাসপাতালের প্রস্তুতি নিয়ে মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) এক ভার্চুয়াল সভায় যোগ দেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. জাহেদ মালিক।
তিনি বলেন, ‘এখন আমরা অনেকটাই প্রস্তুত। হাসপাতালগুলো আগের থেকে বেশি সুসজ্জিত হয়েছে’।
এছাড়াও তিনি বলেন, মৃত্যুর হার আগে থেকে অনেকটাই কমে গেছে। গতকাল থেকে আজকে (মঙ্গলবার) ১.৬৫ শতাংশে নেমে এসেছে মৃত্যুর হার।
জাহেদ মালিক জানান, ৯ কোটি প্রথম ডোজ আর ৬ কোটি ডোজ মিলিয়ে এখন পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে ১৫ কোটি ডোজ টিকা। নিশ্চিত করেন বুস্টার ডোজের ব্যবস্থাপনার কথাও। যার ফলে হাসপাতাল গুলো থেকে অনেকটা চাপ কমে আসবে বলেও মনে করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
ওই সভায় বিপিএমসিএ’র সভাপতি এম এ মবিন খান বলেন, সারা দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ব্যাপকহারে বৃদ্ধি পেলেও ওমিক্রন ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের মতো ভয়াবহ নয়। করোনা নিয়ে ভীতির কিছু নেই। ওমিক্রন মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালগুলো।
দেশে ২০২০ সালের ৮ মার্চে প্রথম শনাক্ত হয় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী। ওই মাসেই প্রথম মৃত্যুর তথ্য দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। একই বছরের শেষ দিকে কিছুটা কমে আসে সংক্রমণের হার। তবে গত বছরের এপ্রিল থেকে জুন-জুলাই পর্যন্ত মারমুখী আকার ধারণ করে করোনার ডেল্টা ভ্যারিয়েন্ট। গত বছরের ডিসেম্বরের ২০ তারিখ পর্যন্ত পরিস্থিতি কিছুটা শিথিল থাকলেও চলতি বছরের শুরুতেই বাঁধ ভেঙে বাড়তে শুরু করে ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টসহ করোনার সংক্রমণ।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, সারাদেশের সরকারি হাসপাতালগুলো শয্যার ভর্তি রয়েছে ২৫ শতাংশ রোগী। রাজধানীতে সরকারি হাসপাতালে ৪ হাজার শয্যা আছে। যার মধ্যে হাজারের কিছু বেশি রোগী ভর্তি রয়েছেন সেগুলোতে। অন্যদিকে বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৫০০ জনের মতো। দেশে যে হারে সংক্রমণ ধরা পড়ছে, তাতে অল্প সময়ের মধ্যে হাসপাতালে শয্যার চাহিদা অনেক বেড়ে যাবে বলে জানান তিনি।
সকলের চিকিৎসা নিশ্চিত করার আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, "যারা অসুস্থ হয় তাদের চিকিৎসা যেন নিশ্চিত করতে পারি"।
একই সভায় দেশের মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্টদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার বিষয়ে স্বাস্থ্যশিক্ষা বিভাগের পরিচালক (শিক্ষা) এইচএম এনায়েত হোসেন বলেন,কলেজগুলো ওখন সব বন্ধ আছে। ক্লাসও চলছে অনলাইনে। তার বিভাগ এ দুটোর সমন্বয় করার চেষ্টা করছে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, "স্বাস্থের শিক্ষার্থীদের এখন পর্যন্ত তেমন কোনও সংকটের তথ্য পাওয়া যায় নি"।