দেশের করোনা ক্যালেন্ডারের গত দু সপ্তাহের তুলনায় চলতি সপ্তাহে নমুনা পরীক্ষা ও শনাক্তের হার কমলেও বেড়েছে মৃত্যুর সংখ্যা। গত ২৪ জানুয়ারি থেকে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত মৃত্যুর সংখ্যা যেখানে ছিল ১৪০ জন। সপ্তাহ ঘুরতেই এসে দাঁড়িয়েছে ২২৬ এ। শতকরা হারে প্রায় ৬২ ভাগের কাছাকাছি বেড়েছে এ সংখ্যা।
তবে নমুনা পরীক্ষা কমেছে ৭ দশমিক ৪ শতাংশ। এছাড়া সপ্তাহের ব্যবধানে শনাক্তের হার কমেছে ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ।
সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) স্বাস্থ্য অধিদফতরের উপপরিচালক ও কোভিড ইউনিটের প্রধান ডা. মো. জাকির হোসেন খান স্বাক্ষরিত বিশেষ বুলেটিনে এসব তথ্য জানানো হয়।
এতে বলা হয়, জানুয়ারির ১০ থেকে ১৬ তারিখ অব্ধি ১ লাখ ৮৯ হাজার ৬৩০টি নমুনা পরীক্ষায় আক্রান্ত শনাক্ত হয় ২৪ হাজার ১১ জন। এক সপ্তাহে মৃত্যু হয় ৪২ জনের। নমুনা পরীক্ষা ৩৪ শতাংশ বেড়ে পরবর্তী সপ্তাহ ১৭ থেকে ২৩ জানুয়ারি শনাক্ত এসে দাঁড়ায় ৬৭ হাজার ৪২৫ জনে। তার সঙ্গে মৃত্যু হয় ৭৯ জনের। পরে একই মাসের ২৪ থেকে ৩০ তারিখ পর্যন্ত এক সপ্তাহে প্রায় ২৪ শতাংশ নমুনা সংগ্রহ বেড়ে শনাক্ত দাঁড়ায় এক লাখ ১৯৬ জনে। তার সঙ্গে মৃত্যু হয় ১৪০ জনের।
এদিকে এ সপ্তাহে (৩১ জানুয়ারি -৬ ফেব্রুয়ারি) নমুনা পরীক্ষা হয় ২ লাখ ৯৩ হাজার ৮৫ জনের। যা গত সপ্তাহের তুলনায় ৭ দশমিক ৪ শতাংশ কম। এছাড়া গত সপ্তাহের তুলনায় ২৩ দশমিক ৯ শতাংশ কমে এ সপ্তাহে শনাক্ত হয় ৭৬ হাজার ২ শত জন রোগী। এছাড়া গত সপ্তাহ থেকে এ সপ্তাহে সুস্থ হওয়ার হারও ৩ শত ভাগের বেশি। তবে সে তুলনায় মৃত্যুর হার বেড়েছে ৬১ দশমিক ৪ শতাংশ। এক সপ্তাহের ব্যবধানে একশ জনের বেশি বেড়েছে মৃত্যু। গত সপ্তাহে যেখানে ছিল ১৪০ তা এ সপ্তাহে এসে দাঁড়িয়েছে ২২৬ এ।
আরও বলা হয়, রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে সোমবার (৭ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ৩৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ৯ হাজার ৩৬৯ জনের। শতকরা হারে ২১ দশমিক ০৭ শতাংশ।
তাছাড়া গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৯ হাজার ৫০৭ জন। সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী শনিবার (৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে রোববার (৬ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ তালিকার ১৪ জনের বয়সই ৬১ থেকে ৭০ এর মধ্যে। তার মধ্যে সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে ৮ হাজার ৩৪৫ জনের। শতকরা হারে ২১ দশমিক ৫০ শতাংশ। তবে ৩১ বছরের কম নাগরিকদের মৃত্যুর হার সে তুলনায় অনেক কম। তাছাড়া, সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ৮ হাজার ১৫৯ জন।
বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, চলতি বছরের ৩১ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মৃত ২২৬ জনের মধ্যে ১৬১ জনই ছিলেন নন-ভ্যাক্সিনেটেড। এর মধ্যে ২৮ দশমিক ৮ ভাগ অর্থ্যাৎ মাত্র ৬৫ জন ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন। প্রথম ডোজ ভ্যাকসিন নেওয়াদের মধ্যে চল্লিশজন দ্বিতীয় ডোজ নিলেও তাদের কারোই নেওয়া হয়নি বুস্টার ডোজ।
করোনা থেকে মুক্তি পেতে হলে টিকার কোন বিকল্প নেই বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। দেশব্যপী টিকার সঠিক ব্যবস্থাপনা করতে চাচ্ছে স্বাস্থ্য বিভাগও। স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেছেন, টিকাদান কার্যক্রম সফলভাবে চলছে।
এখন পর্যন্ত ১০ কোটি মানুষ টিকার প্রথম ডোজ পেয়েছেন বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী। এছাড়া আরও ৭ কোটি দ্বিতীয় ডোজ এবং শিক্ষার্থীদের দেড় কোটির মতো টিকা দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
দেশে করোনাভাইরাসে সংক্রমিত (কোভিড-১৯) প্রথম রোগী শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। তার ১০ দিন পর ১৮ মার্চ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।