বিশ্ব বেতার দিবস আজ। বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালিত হবে। এ বছর বিশ্ব বেতার দিবসের প্রতিপাদ্য- ‘সবাই মিলে বেতার শুনি, বেতারেই আস্থা রাখি।’
সরকারের তথ্য মন্ত্রণালয়ের পৃষ্ঠপোষকতায় ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশে বিশ্ব বেতার দিবস পালিত হচ্ছে, যেখানে বাংলাদেশ বেতার, প্রাইভেট এফএম এবং কমিউনিটি রেডিও অংশগ্রহণ করছে।
দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।
রাষ্ট্রপতি বাণীতে বলেন, তথ্যের অবাধ প্রবাহ নিশ্চিত করতে বেতার একটি শক্তিশালী গণমাধ্যম। একটি স্বাধীন গণতান্ত্রিক দেশে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, সব ধরণের মতামতের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ এবং স্বতন্ত্র বিষয়বস্তু মিডিয়া বৈচিত্র্যের অন্যতম অনুসঙ্গ। স্বাধীন গণমাধ্যম দেশ ও জাতির কল্যাণ ও মুক্তির আলোকবর্তিকা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার সব সময়ই দেশে গণমাধ্যমের বিকাশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তিনি বলেন, দুর্যোগের এই সময়ে সঠিক বার্তা, দিকনির্দেশনা, সর্বোপরি করোনা মোকাবিলায় সরকার গৃহীত নানা উদ্যোগ এবং এই মহামারি থেকে সুরক্ষা পেতে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে এসেছে বেতার, অর্জন করেছে আস্থার জায়গা।
সারাবিশ্বে বেতার এখনও অন্যতম জনপ্রিয় গণমাধ্যম। বেতারের রয়েছে পৃথিবীর দুর্গম স্থানে পৌঁছানোর শক্তি। তথ্যপ্রযুক্তির অবাধ প্রসারের ফলে সম্প্রচার জগতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। গ্রামগঞ্জ ও দুর্গম এলাকায় এষনও বেতার তথ্য আদান-প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ গণমাধ্যম।
বাংলাদেশ বেতারের জন্মকালের সঙ্গে বাংলাদেশের রয়েছে এক ঐতিহাসিক মিল। বাংলাদেশে বেতারের যাত্রা শুরু ১৯৩৯ সালের ১৬ ডিসেম্বর। এর ঠিক ৩২ বছর পর এ দিনটিতেই চূড়ান্ত বিজয় লাভের মাধ্যমে স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রে পরিণত হয় বাংলাদেশ।
অন্যদিকে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ বেতার ছিল মুক্তিযোদ্ধাদের অপরিহার্য সঙ্গী। বাংলাদেশ বেতার মুক্তিযুদ্ধে দেশে বীর সেনাদের অন্যতম এক অনুপ্রেরণার মাধ্যম। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে বেতার কেন্দ্র। যুদ্ধের সময় এটি হয়ে যায় স্বাধীন বাংলা বেতারকেন্দ্র। আর সাফল্যের পর সাফল্যের খবর শুনিয়ে সহজেই কেড়ে নেয় মুক্তিকামী মানুষের মন।
মহান মুক্তিযুদ্ধকালীন মুক্তিযুদ্ধের দ্বিতীয় ফ্রন্ট নামে খ্যাত ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র’ ছিল বাঙালি জাতির মুক্তি সংগ্রামের এক বলিষ্ঠ প্রচার কাণ্ডারি। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত কালজয়ী গান ও অনুষ্ঠানগুলো একদিকে মুক্তিযোদ্ধাদের মনোবলকে শক্তিশালী করেছে, অন্যদিকে দেশের জনগণকে স্বাধীনতার দিকে অনুপ্রাণিত করে।
এর আগে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ পাকিস্তানী স্বৈরশাসকের বাঁধার মুখে ৮ মার্চে বেতারে প্রচার করা, মুক্তিকামী বাঙালিকে উদ্বুদ্ধকরণ এবং সর্বোপরি স্বাধীনতা অর্জনে বাংলাদেশ বেতার সবসময় এদেশের জনগণের পাশে থেকেছে।
বাংলাদেশে কমিউনিটি রেডিওর সাফল্যও অনেক। দক্ষিণ এশিয়ায় একমাত্র বাংলাদেশে কমিউনিটি রেডিও বিষয়ক একটি পূর্ণাঙ্গ নীতিমালা প্রণীত হয়েছে। এক হাজার জন যুব নারী ও যুবকের অংশগ্রহণে নতুন ধারার এ গণমাধ্যমটি দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।