নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. সেলিনা হায়াৎ আইভী বলেছেন, ‘এই মাসটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। ৮ মার্চ বিশ্ব নারী দিবস। তবে আমি মনে করি, প্রতিদিনই আমাদের নারী দিবস। যে নারী ঘরে থাকেন তিনিও অনেক কাজ করেন। নারীরা জন্মগতভাবে যোদ্ধা। যে নারী সন্তানকে জন্ম দিতে পারে সে পিছিয়ে থাকতে পারে না। সাহসের সাথে কাজ করতে হবে। তোমাদের ডিকশনারি থেকে না শব্দটি উঠিয়ে দিতে হবে।’
রোববার (১৩ মার্চ) দুপুরে নারায়ণগঞ্জ শহরের মর্গ্যান গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভাষাসৈনিক মমতাজ বেগম মেধাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে এইসব কথা বলেন তিনি।
আইভী বলেন, ‘আগে মেয়েরা কথা বলতে পারতো না। রিকশায় চড়লে চারদিক ঢেকে রাখতো, ঘোড়ার গাড়ি ঢেকে রাখা হতো। সেই সময় একজন নারীর লেখাপড়া করা, প্রতিবাদী হওয়া কিন্তু সহজ ব্যাপার ছিল না। এখনও আমরা প্রতিবাদ করতে ভয় পাই। অথচ সেই সময় এত কঠিন মুহুর্তে নিজের সবকিছু বিসর্জন দিয়ে মমতাজ বেগমের দেশপ্রেম অনেক প্রখর ছিল।’
তিনি বলেন, ‘কেন জানি মনে হয়, আগের চেয়ে হালকা ব্যক্তিত্ব আর ভালোবাসা নিয়ে এখন আমরা ঘুরে বেড়াই। যাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য এত শক্তিশালী সেইসাথে আমরা তুলনা করলে মনে হয় আমরা হারিয়ে যাচ্ছি। আমরা হারিয়ে যেতে চাই না। আমার স্কুলের শিক্ষার্থীর গোছানো কথাবার্তা শুনে আশাবাদী হই। আশা করি, সবাই সত্য ও ন্যায়ের পথে আসবে।’
এ সময় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি আরও বলেন, ‘কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার হতে চায় কিন্তু কেউ রাজনীতিবিদ হতে চায় না। মেধা-বুদ্ধি দিয়ে এই দেশের সেবায় কাজ করতে চাই সেইটা কেউ বলতে চায় না। কারণ রাজনীতিবিদদের নিয়ে একটি নেতিবাচক আলোচনা আছে। সবাই কিন্তু এক রকম না। তাই তোমাদের চিন্তা-ভাবনাও পরিবর্তন করতে হবে। নারীরা যেখানে গিয়েছে সেটা হোক রাষ্ট্রপ্রধান বা ঝাড়ুদার সব জায়গায় নিজ মেধা ও বুদ্ধি দিয়ে স্ব স্ব অবদান রেখেছে। পুরুষশাসিত সমাজে পুরুষের মাঝখানে থেকে প্রতিযোগিতা করে আগাতে হয়। এই পুরুষদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে আমাদের জায়গা করে দিতে হবে।
আইভী বলেন, ‘যে অসৎ সে সত্য কথা বলতে ভয় পায়। অন্যায় কাজ করলে সাহস থাকে না। সাহস নিয়ে অকপটে সত্য কথা বলতে হবে। দেশপ্রেম আমাদের ভেতর জাগাতে হবে। প্রীতিলতা, বেগম রোকেয়ার কথা চিন্তা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথা মাথায় রাখতে হবে। তিনি নারীদের অভূতপূর্ব জাগরণ সৃষ্টি করেছেন। এজন্য তাকে স্যালুট দিতে হবে।’