বীজের মূল্য কমাতে সাহায্য করার জন্য, আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ইরি) বাংলাদেশ এবং বীজ প্রত্যয়ন সংস্থা (এসসিএ) দ্বারা পরিচালিত কর্মশালায় গবেষকরা ধানের জাত ছাড়করণ প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয় করার পরামর্শ দিয়েছেন। কর্মশালাটি ইউএসএআইডি ফান্ডেড এফটিএফ বাংলাদেশ ইরি রাইস ব্রিডিং পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ প্ল্যাটফর্ম অ্যাক্টিভিটি-এর অধীনে আজকে গাজীপুরে বীজ প্রত্যয়ন সংস্থা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বাংলাদেশে ধানের বীজের জাত ছাড়ার ব্যবস্থা থাকলেও মানসম্পন্ন বীজ এখনও অনেক ব্যয়বহুল। কৃষকরা মানসম্পন্ন ধান বীজ ব্যবস্থাপনার একবারে শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে আছে এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সরকারী ও বেসরকারী খাতের ধান বীজের উৎসের উপর নির্ভর করে। একই সময়ে, বেসরকারী খাত ধানের বীজের জাত নিবন্ধন করার ক্ষেত্রে দীর্ঘ প্রক্রিয়া, সিস্টেমের জটিলতা এবং ব্যবসা করার প্রতিযোগীতাহীন খরচের মতো চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়। ২০১৪ থেকে ২০১৯ পর্যন্ত, ধানের বীজ প্রকাশে বেসরকারি খাতের অবদান মাত্র ১০.৮১% থেকে ১০.৮৪%, যা এই সীমাবদ্ধতার কারণে প্রবৃদ্ধি প্রায় স্থবির।
এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য, ইরি বাংলাদেশের চিফ অফ পার্টি ডঃ সিরাজুল ইসলাম ধান বীজ ব্যবস্থার পরিষেবা প্রদানের সুবিধার্থে তারা যে উদ্যোগ নিচ্ছেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত বলেছেন।
বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সির উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আমিনা বেগম আলোচনা করেছেন যে কীভাবে বীজ প্রত্যয়ন এজেন্সি সরকারী ও বেসরকারী খাতকে সময়মত মানসম্পন্ন বীজের প্রাপ্তিতে সুবিধা দেয়।
“চীন ও ভারতের পরেই বাংলাদেশ বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ ধান (নন-মিলড চাল) উৎপাদনকারী দেশ। বিগত বছরগুলোতে বাংলাদেশ আধুনিক এবং উচ্চ-ফলনশীল ধানের জাত উদ্ভাবন করেছে, দ্রুততম সময়ের মধ্যে উচ্চ-ফলনশীল ধানের জাতগুলি কৃষকদের মাঝে পৌঁছে দিয়েছে এবং সেচ অবকাঠামোর দ্রুত সম্প্রসারণ করেছে,” বলেন ডঃ সিরাজুল ইসলাম।
“বীজ সার্টিফিকেশন সিস্টেম স্বয়ংক্রিয়করণ এই সাফল্যগুলোকে অনন্য মাত্রা প্রদান করবে। এই স্বয়ংক্রিয়করণ ধানের জাত নিবন্ধনের সময়, খরচ এবং জটিলতা হ্রাস করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি,” তিনি যোগ করেছেন।
ডঃ মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম, ইরি-এর প্রজেক্ট লিড বলেন, “বীজ নিবন্ধন এবং বীজ অবমুক্তকরণ প্রক্রিয়ার জন্য স্বয়ংক্রিয়করণ এখন অতি প্রয়োজনীয় একটি বিষয়। এটি সময় হ্রাস করবে, নিবন্ধন সংক্রান্ত জটিলতা হ্রাস করবে এবং অবমুক্তকরণ প্রক্রিয়ার দক্ষতা বৃদ্ধি করবে। এছাড়াও, এটি বীজ আমদানির অনুমতি (আইপি) এর সাথেও সম্পর্কিত। যদি বীজ নিবন্ধন প্রক্রিয়া স্বয়ংক্রিয় করা যায়, তাহলে আইপি প্রক্রিয়ার সাথে দ্রুততম সময়ে সংযুক্ত করা যাবে।”
কর্মশালার সময় বক্তারা একটি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম তৈরি করার সুপারিশ করেন যা নিবন্ধন প্রক্রিয়া সহজ করবে। তারা এসসিএ-তে তথ্য প্রযুক্তি (আইটি) বিভাগ প্রতিষ্ঠার গুরুত্ব এবং এসসিএ কর্মকর্তাদের স্থিতিশীল চাকরির নিয়োগের বিধানের উপর জোর দিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (ব্রি) মহাপরিচালক ড. মোঃ শাহজাহান কবির। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ব্রি-এর গবেষণা পরিচালক ড. মোহাম্মদ খালেকুজ্জামান এবং ইরি-এর প্রজেক্ট লিড ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম। কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন বীজ প্রত্যয়ন সংস্থার ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মুহাম্মদ এমদাদুল হক, পিএইচডি।