২০ বছরেও দলিল পাননি আদর্শ গ্রামের বাসিন্দারা

ঢাকা, জাতীয়

সাদের হোসেন বুলু, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-08-31 09:33:07

ঢাকা শহরের অদূরে নবাবগঞ্জের গালিমপুর ইউনিয়নে অবস্থিত আদর্শ গ্রাম প্রকল্প-২। দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্যে ভূমিহীন-গৃহহীনদের জন্য সরকারি উদ্যোগে গড়ে তোলা হয়েছে এই গ্রাম। এখানে ৪৫টি পরিবারের প্রায় ৪০০ মানুষের বসবাস। আদর্শ গ্রাম নাম হলেও চরম দুর্ভোগে জীবনযাপন করছেন এই গ্রামের বাসিন্দারা।

২০ বছর অতিবাহিত হলেও ভূমিহীন, গৃহহীন ও ছিন্নমূল এসব মানুষগুলো স্বামী-স্ত্রীর যৌথ নামে ভূমির মালিকানার কবুলিয়ত (কাগজ) ও দলিল বুঝে পায়নি। উপজেলা ভূমি অফিসে বার বার কাগজপত্র জমা দিলেও কর্তৃপক্ষ কাগজপত্র হারিয়ে ফেলে বলে অভিযোগ করছেন আদর্শ গ্রামের বাসিন্দারা।

স্থানীয় আওয়ামলীগ নেতা বাবুল ও লুৎফর মেম্বার জানান, দরিদ্র মানুষের কল্যাণে স্থানীয়ভাবে দারিদ্র্য বিমোচনের লক্ষ্য নিয়ে ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার নবাবগঞ্জের গালিমপুর ইউনিয়নের নোয়াদ্দা এলাকায় নির্মাণ করে গালিমপুর আদর্শ গ্রাম-২।

সূত্র জানায়, স্থানীয় একটি বিত্তশালী প্রভাবশালী চক্র ও ভূমি অফিসের কতিপয় কর্মকর্তাদের যোগসাজসে চরম দুর্ভোগে জীবনযাপন করছেন ভূমিহীন ৪৫টি পরিবারের সদস্যরা।

আদর্শ গ্রাম প্রকল্প-২ এর বাসিন্দা জহুরা বেগম (৬৫) ও সোরহার (৭২) বার্তা২৪কে বলেন, ‘৪০০ লোকের বসবাস আমাদের এখানে। আমাদের নিজস্ব মসজিদ, মন্দির ও কবরস্থান, শ্মশান নেই। বর্ষা মৌসুমে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা তৈরি হওয়ায় চরম বিপাকে পড়তে হয়।

‘যাতায়াতের জন্য সড়ক না থাকায় শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশা ও শ্রেণীর মানুষকে বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। ফলে শিক্ষাসহ বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে পিছিয়ে পড়ছেন গ্রামের সদস্যরা।’

জমির দলিল পেতে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চান এই গ্রামের বাসিন্দা পরশ মিয়া। বার্তা২৪কে তিনি বলেন, ‘প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের সমস্যা তৈরি হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর নিকট আমাদের দাবি, অবহেলিত মানুষের কথা চিন্তা করে জমির দলিল দ্রুত বুঝে পাওয়ার ব্যবস্থা করে দেন। যাতায়াতের জন্য একটি সড়ক করে দেন।’

‘আমরা নিবিঘ্নে চলাফেরা করতে চাই। ছেলে মেয়েদের লেখা পড়ার জন্য প্রাথমিক বিদ্যালয় খুবই প্রয়োজন। নচেৎ আমাদের আগামী প্রজন্ম অনেকটাই পিছিয়ে পড়বে।’

গালিমপুর ইউপি চেয়ারম্যান তপন মোল্লা বার্তা২৪কে বলেন, ‘আমি বিভিন্ন সময় উপজেলা ভূমি অফিসে গিয়ে কাগজপত্র জমা দিয়েছি। কিন্তু কোনো সুরাহা হয়নি। কিছু দিন পর কাগজ হারিয়ে যায়। বিষয়টি দুঃখ জনক।’

এ বিষয়ে ঢাকা জেলা প্রশাসক আবু ছালেহ ফেরদৌস খাঁন বার্তা ২৪ কে বলেন, বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে খোঁজ নিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর