চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ৭নং মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে সমর্থকদের ওপর হামলা এবং বহিরাগত সন্ত্রাসীদের অনুপ্রবেশ রোধে নির্বাচনি এলাকার সাতটি পয়েন্টে পুলিশ চেকপোস্ট বসানোর দাবি জানিয়েছেন অটোরিকশা প্রতীকের স্বতন্ত্রী প্রার্থী কাজী মিজানুর রহমান। একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেছেন, নির্বাচনী এলাকায় বহিরাগত সন্ত্রাসীরা স্থানীয় সহায়তায় অবস্থান করছে এবং তারা ভোটারদের মারধর ও হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। এতে নির্বাচনী পরিবেশ বিঘ্নিত হচ্ছে।
রোববার (১২ মার্চ) দুপুরে কাজী মিজানের পক্ষ থেকে প্রধান নির্বাচন কমিশন বরাবর করা এক আবেদনপত্রের মাধ্যমে এসব দাবি ও অভিযোগ তুলে ধরা হয়।
কাজী মিজানুর রহমান তার আবেদনে আরও অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষের লোকজন বহিরাগত সন্ত্রাসীদের মাধ্যমে হামলা ও প্রভাব খাটিয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করছে। এতাবস্থায় চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদ এলাকার ৭টি গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে পুলিশ চেকপোস্ট বসানোর দাবি জানান তিনি।
পুলিশ চেকপোস্ট বসানোর জন্য র্নিধারিত পয়েন্টগুলো হলো- দশানী-মোহনপুরের সীমানা মুখে ছারাকান্দি বেড়িবাঁধ, নয়ানগর বটতলা মোহনপুরের সীমানা বেড়িবাঁধ, পাঁচানী চৌরাস্তা মোহনপুর সীমানা, উত্তর পাঁচানী বউবাজার মোহনপুর সীমানা, নীলের চর (মিলারচর) মোহনপুর সীমানা, লেদামদি মাথাভাঙ্গা মোহনপুর সীমানা এবং মোহনপুর লঞ্চঘাট পয়েন্ট।
এ বিষয়ে রোববার দুপুরে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কমিশনার আনিছুর রহমানের সঙ্গে কথা হলে তিনি সংবাদমাধ্যমকে জানান, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করা হবে। প্রয়োজনে ওই নির্বাচনী এলাকায় ভোটের সুষ্ঠু পরিবেশ রক্ষায় সব ধরনের কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হবে। একই সাথে ওই নির্বাচনি এলাকায় হামলার ঘটনা তদন্ত করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।
গত শনিবার বিকেলে মোহনপুর ইউনিয়নের মোহনপুর বাজার এলাকায় অটোরিকশা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। হামলার অভিযোগ উঠে অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. হাবিবুর রহমান হাফিজ তপদারের (মোটরসাইকেল প্রতীক) সমর্থকদের বিরুদ্ধে।
হামলায় গুরুতর আহত হন- চেয়ারম্যান প্রার্থী কাজী মিজানুর রহমানের অটোরিকশা প্রতীকের সমর্থক শাহিনা আক্তার ও কাজী হাসান। এ ঘটনায় স্থানীয়দের অভিযোগ, হামলায় স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. হাবিবুর রহমান হাফিজ তপদারের অনুসারী ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সদস্য সাজেদুল হক চৌধুরী দীপুর নেতৃত্বে এ হামলা চালানো হয়।
হামলার পর স্বতন্ত্র প্রার্থী কাজী মিজানুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, হামলার তিন ঘটনায় আলাদা তিনটি মামলার প্রস্তুতি চলছে। তাতে মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী হাবিবুর রহমান হাফিজ তপাদার সমর্থিত শাহীন খালাসী, আল আমিন ও কাজী শরীফসহ নয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন তিনি।
ওই হামলার ঘটনার পর থেকে নির্বাচনী এলাকায় ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বহিরাগতদের আনাগোনায় মোহনপুরের পরিস্থিতি দিনদিন উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। একই সাথে আগামী ১৬ মার্চের ভোট অবাধ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে করা সম্ভব হবে কিনা, ভোটাররা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবে কিনা- এসব ব্যাপারে সন্দেহ দেখা দিয়েছে।
চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার ৭নং মোহনপুর ইউনিয়ন পরিষদে চেয়ারম্যান পদে উপ-নির্বাচনে এবার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন নয়জন প্রার্থী। তারা হলেন- আব্দুল হাই (নৌকা), কাজী মিজানুর রহমান (অটোরিকশা), আবুল কাসেম (আনারস), ফয়সাল আহমেদ (টেলিফোন), শরীফ মাহমুদ সায়েম (টেবিল ফ্যান), আবু হানিফ অভি (ঢোল), বদিউল আলম (চশমা), হাবিবুর রহমান (মোটর সাইকেল) এবং সেলিম মিয়া (ঘোড়া)।