নারীর টানে প্রিয়জনদের সাথে পবিত্র ঈদুল ফিতরের ঈদ করতে উত্তরাঞ্চলের ঘরমুখো মানুষ স্বস্তিতেই পার হচ্ছেন সিরাজগঞ্জের ৪৫ কিলোমিটার মহাসড়ক। সড়কে যানবাহনের চাপ থাকলেও কোথাও ধীরগতি বা যানজট নেই। তবে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে আরও বেড়েছে যানবাহনের চাপ।
উত্তরবঙ্গের যাত্রীরা জানান, অন্যান্য বছরের তুলনায় ঈদযাত্রায় সিরাজগঞ্জের যানজট পোহাতে হচ্ছে না। এই মহাসড়কে এতটা স্বস্তির যাত্রা হবে ভাবতেই পারেনি।
এদিকে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা রাজশাহীগামী বনলতা এক্সপ্রেসের শাহিন আলম, শওকত আলীসহ অনেকে বলেন, এ বছর প্রথম ঈদযাত্রায় কোনো প্রকার যানজট ও ধীরগতি ছাড়াই সিরাজগঞ্জের মহাসড়ক পাড় হতে পেরেছি। এবারের সিরাজগঞ্জ মহাসড়কের ঈদযাত্রা সত্যিই যেকোনো বছরের চেয়ে সুন্দর হয়েছে।
বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিমের কড্ডার মোড় এলাকা থেকে সার্জেন্ট তাহাজ্জৎ হোসেন বলেন, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে। তবে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম মহাসড়কের কোথাও কোনো যানজট বা ধীরগতি নেই। এছাড়া যানবাহন যেন এলোমেলোভাবে ঢুকে যানজট সৃষ্টি করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখা হচ্ছে।
হাটিকুমরুল হাইওয়ে থানা পুলিশের ট্রাফিক পরিদর্শক মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, ভোর থেকে মহাসড়কে গাড়ির চাপ আরও বেড়েছে। তবে কোথাও কোনো ধীরগতি বা যানজটের মতো অবস্থা তৈরি হয়নি। এছাড়া যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা তৎপর রয়েছি। পাশাপাশি হাটিকুমরুল গোলচত্বর এলাকায় ওয়াচ টাওয়ার বসিয়ে যান চলাচল মনিটরিং করা হচ্ছে।
সিরাজগঞ্জের ট্রাফিক পরিদর্শক (প্রশাসন) সালেকুজ্জামান খান সালেক বলেন, বৃহস্পতিবার ভোরের দিক থেকে পরিবহনের চাপ আরও বেড়েছে। তবে মহাসড়কে চাপ থাকলেও কোনও যানজট বা ধীরগতি নেই। আশা করছি উত্তরবঙ্গের ঘরে ফেরা মানুষের এবারের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ হবে। এছাড়াও যানবাহন ও ঘরে ফেরা মানুষের ভোগান্তি কমাতে ও সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমরা সর্বোচ্চ সচেষ্ট রয়েছি।
সিরাজগঞ্জ পুলিশ সুপার আরিফুল রহমান মন্ডল (বিপিএম বার, পিপিএমবার) জানান, এবার পবিত্র ঈদুল ফিতরের ঈদযাত্রা যানজটমুক্ত ও মহাসড়ক নিরাপদ রাখতে জেলা পুলিশ, জেলা ট্রাফিক বিভাগ ও হাইওয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে প্রায় ৮০০ পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। জেলার ৪৫ কি.মি মহাসড়কের ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে প্রস্তুত রয়েছে জেলা ট্রাফিক বিভাগ ও হাইওয়ে পুলিশ।
রাজশাহী রেঞ্জের এডিশনাল ডিআইজি মো. রশীদুল হাসান জানান, ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন ও সুন্দর করতে টানা ১১ দিন ২৪ ঘণ্টা মহাসড়কে থাকবে পুলিশ। এই ১১ দিন ২৪ ঘণ্টা আমাদের সাহায্য করছে ফায়ার ব্রিগেড, মেডিকেল টিম, রোডস অ্যান্ড হাইওয়ে (সড়ক ও জনপথ) এবং সেতু কর্তৃপক্ষ।
তিনি আরও বলেন, ঈদের ৬ দিন আগে এবং পরে চারদিনসহ মোট ১১ দিনের একটি পরিকল্পনা নিয়ে আমরা জেলা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশদের নিয়ে কাজ করছি। ঈদের আগে ঢাকা শহর থেকে যারা যাবেন এবং ঈদের পরে যারা কর্মস্থলে ফিরবেন তারা যেন মহাসড়কে নির্বিঘ্নে নিরাপত্তার সঙ্গে যাতায়াত করতে পারে সেটি নিশ্চিত করার জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।