আমেরিকায় না গেলে কিচ্ছু যায় আসে না বলে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ নিজের পায়ে চলবে, কারো মুখাপেক্ষী হয়ে না। কে আমাদের ভিসা দেবে না, কে আমাদের স্যাংশন দেবে তা নিয়ে মাথাব্যাথা করে কোনো লাভ নাই।
তিনি বলেন, ২০ ঘণ্টা প্লেন জার্নি করে, আটলান্টিক পার হয়ে ওই আমেরিকায় না গেলে কিচ্ছু যায় আসে না। পৃথিবীতে অনেক মহাসাগর আছে, মহাদেশ আছে। সেই মহাদেশে আমরা যাতায়াত করব, বন্ধুত্ব করবো। আমাদের অর্থনীতি আরো মজবুত হবে। আরো উন্নত হবে। আরো চাঙ্গা হবে।
শনিবার (৩ জুন) বিকালে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় উদ্বোধন উপলক্ষে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান সহ কেন্দ্রীয় ও জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা সমাবেশে বক্তব্য রাখেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভোট যারা চুরি করে, ভোট নিয়ে যারা খেলছে, জনগণের ভাগ্য নিয়ে যারা খেলছে, কানাডার হাইকোর্ট ওই বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে ঘোষণা করে।
যুক্তরাষ্ট্রের দিকে ইঙ্গিত করে শেখ হাসিনা বলেন, জনগণের ভাগ্য নিয়ে যারা খেলছে, আমি তাদের (আমেরিকা) বলবো— ওই সন্ত্রাসী দলের দিকে নজর দিন। কানাডার হাইকোর্ট বিএনপিকে সন্ত্রাসী দল হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। সন্ত্রাসী ও দুর্নীতির দায়ে আমেরিকা তারেক জিয়াকে ভিসা দেয় নাই। তারা (বিএনপি) আবার তাদের (আমেরিকা) কাছে ধর্না দেয়। এতোকিছু বলতে চাই না। শুধু এটাই বলবো— যারা অর্থনীতিবিদ, জ্ঞানী-গুণী আছেন… আমরা তো লেখাপড়া এত বেশি জানি না। শুধু দেশের মাটি মানুষকে চিনি। বাংলাদেশ, নদী-নালা, খাল-বিল চিনি। বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণ কোথায়, কী করলে ভালো হবে সেটা জানি। সেটাই মাথায় রেখে দেশকে উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদায় নিয়েছি।
জনগণের প্রতি আস্থা-বিশ্বাস আছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণ জানে একমাত্র নৌকায় ভোট দিলেই তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। নৌকায় ভোট দিয়ে স্বাধীনতা পেয়েছে, উন্নয়ন পেয়েছে। নৌকায় ভোট দিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ পেয়েছে।
নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, জনগণের সঙ্গে, জনগণের কল্যাণে ত্যাগ স্বীকার করলে— জনগণ কিন্তু সেটার মর্যাদা দেয়। এই কথাটাই মনে রাখতে হবে। আওয়ামী লীগ ত্যাগ করতে এসেছে, ভোগে বিশ্বাস করে না। সেই কথাটা মাথায় রেখে জনগণের সেবক হিসেবে আমি কাজ করে যাচ্ছি। সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। অশুভ শক্তি বাংলাদেশের ভাগ্য নিয়ে যেন ছিনিমিনি খেলতে না পারে, এদের করাল গ্রাস থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব।
ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বেনজীর আহমেদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক পনিরুজ্জামান তরুণের সঞ্চালনায় উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন— আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সালমান ফজলুর রহমান, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কামরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান।