দেশের আদালতসমূহে স্ট্যাম্পের তীব্র সংকট

, জাতীয়

মবিনুল ইসলাম, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2023-09-10 19:58:35

 

দেশের আদালতসমূহে জুডিশিয়াল, নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি’র তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। স্ট্যাম্প স্বল্পতায় জুডিশিয়াল, নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ও কোর্ট ফি’র দামও বেড়েছে। এভাবে আর মাসখানেক চললে টাকা দিয়ে স্ট্যাম্প না পাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

দেশের আদালতসমূহে স্ট্যাম্পের সরবরাহ কমে যাওয়ায় সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। উচ্চ দামে কোর্ট ফি ও স্ট্যাম্প কিনতে হওয়ায় ভুক্তভোগী বিচারপ্রার্থীদের মামলার খরচ বেড়েছে। কোর্ট ফি আদালতে দাখিল করতে না পারায় মামলার কার্যক্রম বিলম্বিত হচ্ছে।

অ্যাডভোকেট এমদাদুল হক লাল বার্তা২৪কে জানান, ১০ টাকার কোর্ট ফি ১৩ টাকা কিনতে হচ্ছে। আগে এটা ১১ টাকায় পাওয়া যেত। ১শ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ১শ’ ২০ থেকে ১শ’ ৩০ টাকায় কিনতে হচ্ছে।

তিনি বলেন, মানি মোকদ্দমা, ক্ষতিপূরণ মোকদ্দমা, সাকসেশন মোকদ্দমায় ব্যাংকে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে টাকা জমা দিয়ে কোর্ট ফি কিনতে হয়। কিন্তু ট্রেজারিতে টাকা জমা দিয়েও কোর্ট ফি মিলছে না। এতে করে মামলার কার্যক্রম বিলম্ব হচ্ছে।

ঢাকা জজকোর্টের স্ট্যাম্প ভেন্ডর শমসের বার্তা২৪কে জানান, ব্যাংকে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে টাকা জমা দিয়ে ২ মাসেও কোর্ট ফি পাওয়া যাচ্ছে না। সব ধরনের কোর্ট ফি সংকটের কথা জানান তিনি।

বাংলাদেশ স্ট্যাম্প ভেন্ডর সমিতির মহাসচিব নজরুল ইসলাম বার্তা২৪কে বলেন, তিনি ট্রেজারিতে কথা বলে জেনেছেন, কাগজের পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকায় নাকি স্ট্যাম্প ছাপানো সম্ভব হচ্ছে না।

স্ট্যাম্প ছাপানোর পদ্ধতি সম্পর্কে তিনি বলেন, বিদেশ থেকে কাগজ আনার পর এটি গাজিপুর সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেসে ছাপা হয়। বাংলাদেশ ডাক বিভাগের মাধ্যমে তা সারাদেশের ট্রেজারিতে পাঠানো হয়। ভেন্ডরগণ ব্যাংকে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করে চালান ট্রেজারিতে জমা দিলে ট্রেজারি শাখা ভেন্ডরদের স্ট্যাম্প সরবরাহ করে।

তিনি আরও বলেন, শুধু ঢাকায় প্রায় ১ হাজারসহ সারা দেশে প্রায় লক্ষাধিক স্ট্যাম্প ভেন্ডর আছেন। স্ট্যাম্পের সরবরাহ না থাকায় তাদের আয় রুজিও কমে গেছে। সরকার রাজস্ব থেকেও বঞ্চিত হচ্ছে।

নজরুল বলেন, ঢাকার আদালতে একটি একশ টাকার নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ১২০ থেকে ১৩০ টাকা ও ১০ টাকার স্ট্যাম্প ১৩ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ঢাকার বাইরে এ সংকট আরও তীব্র। কোন কোন স্থানে এটি একশ টাকার স্ট্যাম্প দেড়শ টাকায়ও বিক্রি হচ্ছে বলে শোনা যায়।

স্ট্যাম্প সংকটের বিষয়ে জানতে ঢাকার জেলা প্রশাসন কার্যালয়ে ট্রেজারি শাখার হেডক্লার্ক বাবুল মিয়া স্ট্যাম্প সংকটের কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, গত জুন মাসের ১৮ তারিখ সর্বশেষ কোর্ট ফি ডেলিভারি দেওয়া সম্ভব হয়েছিল। এরপর আর কোন কোর্ট ফি সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর