সিলেটের বিভিন্ন সীমান্ত এলাকা দিয়ে অবৈধভাবে প্রতিনিয়তই আসছে ভারতীয় চিনিসহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রতিনিয়ত অভিযান চালিয়ে চোরাকারবারিদের গ্রেফতার করলেও তা বন্ধ হচ্ছে না। সিলেটের সঙ্গে ভারতের দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। বেশির ভাগ সীমান্তই দুর্গম এলাকায়। ফলে দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনীর টহলও কম। এই সুযোগে চোরাকারবারীরা অবাধে চিনিসহ বিভিন্ন ভারতীয় পন্য দেশে নিয়ে এসে বিক্রি করছে।
পুলিশ বলছে, প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে চোরাচালান উদ্ধারসহ অভিযান চালিয়ে জড়িতের আটক করছে পুলিশ। জানা যায়, পুলিশের পৃথক দুটি অভিযানে সিলেটের তিনটি থানায় প্রায় ৩৬৮ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করে পুলিশ। থানাগুলো হলো- গোয়াইনঘাট, গোলাপগঞ্জ ও জৈন্তাপুর।
রোববার (১ অক্টোবর) গোয়াইনঘাটে ৫০ কেজি ওজনের ১৪২ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করেছে পুলিশ। উপজেলার পশ্চিম জাফলং ইউনিয়নের পান্তুমাই গ্রাম থেকে ভারতীয় এসব চিনি জব্দ করা হয়। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে চোরাকারবারিরা পালিয়ে যায়।
এ ঘটনায় এসআই পিন্টু সরকার বাদী হয়ে গোয়াইনঘাট থানায় চোরাচালান আইনে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় পলাতক আসামী ডালিম মিয়া (২২), শাকিল (১৮), সালেহ আহমেদ (২২), জুয়েল (২২), আব্দুল মজিদ (৪২), সিদ্দিককে (৫০) আসামি করা হয়েছে।
এব্যাপারে গোয়াইনঘাট থানা অফিসার ইনচার্জ কেএম নজরুল বলেন, সব ধরনের অপরাধমুক্ত করতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এই অভিযান ও ভারতীয় চিনি উদ্ধার তারই ধারাবাহিকতার অংশ। যেকোনো মূল্যে অপরাধমুক্ত থানা এলাকা গড়ে তুলতে পুলিশ বিভাগ কাজ করে আসছে।
এর আগে শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গোলাপগঞ্জ উপজেলা থেকে ১৮৬ বস্তা চিনি জব্দ করে গোলাপগঞ্জ মডেল থানা পুলিশ। এসময় দুই চোরাকারবারিকে আটক করা হয়।
আটককৃতরা হলেন- সিরাজগঞ্জ জেলার রায়গঞ্জ উপজেলার মুজাফফরপুর গ্রামের মোহাম্মদ হাসন আলী শেখ এর ছেলে মো. সবুর আলী শেখ (৩৫) ও একই গ্রামের মোহাম্মদ হোসেন আলী শেখ এর ছেলে মোহাম্মদ কাউসার আলী শেখ (২৫)।।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামীরা জানায়, পলাতক আসামি আব্দুল হক ও আলমের মাধ্যমে শুল্ক ও কর ফাঁকি দিয়ে ভারতীয় চিনি সংগ্রহ করে সিলেট শহরের বিভিন্ন স্থানে বাজারজাত হতো। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে এসআই ফায়াজ উদ্দিন ফয়েজ বাদী হয়ে গোলাপগঞ্জ মডেল থানায় মামলা দায়ের করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেন গোলাপগঞ্জ মডেল থানার মিডিয়া অফিসার এসআই পার্থ সারথী দাস।
একইভাবে শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটায় জৈন্তাপুর থানা পুলিশের অভিযানে আলুবাগান মোকামবাড়ি এলাকার তারা মিয়ার বসতঘর থেকে ৪০ বস্তা ভারতীয় চিনি উদ্ধার করা হয়। এসময় পুলিশের উপস্থিতি টের পেয়ে আসামিরা পালিয়ে যান।
চোরাচালানের বিষয়য়ে জানতে চাইলে সিলেট জেলার সহকারি পুলিশ সুপার ও মিডিয়া ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা মো. সম্রাট তালুকদার বলেন, জেলার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় জেলা পুলিশ নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তাছাড়া সীমান্তে চোরাচালান রোধ ও জড়িত অপরাধীদের চিহ্নিতকরণ এবং গ্রেফতারে জেলা পুলিশ গুরুত্বের সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে।