ঘুষ দাবি করে ক্লোজ হলেন এস আই, ওসি বলছেন রুটিন ওয়ার্ক

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট বার্তা২৪.কম কুড়িগ্রাম | 2023-10-04 23:13:05

ঘুষ চাওয়ার অভিযোগে কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী থানার এস আই আই আইয়ুব আলীকে ক্লোজ করা হয়েছে। মঙ্গলবার(৩ সেপ্টেম্বর) রাতে তাকে কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়।

মামলার রেকর্ড ও ওয়ান্টেভুক্ত আসামী না হলেও এক ব্যক্তিকে আটক করে থানায় এনে ছেড়ে দেয়ার জন্য এক লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ উঠেছে ক্লোজ হওয়া এস আই আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে।

ক্লোজের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনচার্জ প্রাণকৃষ্ণ দেবনাথ।

তবে ঘুষ দাবির অভিযোগে ওই এস আইকে ক্লোজ করা হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এটা রুটিন ওয়ার্ক।’

অপরদিকে ওসি(তদন্ত) নাজমুস সাকিব সজীব বলছেন, ওই এস আইকে প্রশাসনিক কারনে কুড়িগ্রাম পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। এরপর যেটা হবে সেটা উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়।

কিন্তু একাধিক বিশ্বস্ত সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার শিমুলবাড়ী ইউনিয়নের ভুরিয়ারকুটি গ্রামের মৃত গমির উদ্দিনের ছেলে মজিদুল হকের (৫০) সঙ্গে একই এলাকার বছির উদ্দিনের জমি-জমা সংক্রান্ত বিষয়ে ঝগড়া হয়।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত সেপ্টেম্বর মাসের ১৯ তারিখে ফুলবাড়ী থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন বছির উদ্দিন। পরে ঘটনাটি স্থানীয় জনপ্রতিনিধির মাধ্যমে মিমাংসার সিদ্ধান্ত করা হয়।

এটি জানার পরেও অভিযোগের তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই আইয়ুব আলী বিভিন্ন সময় বিবাদীকে নানাভাবে হয়রানিসহ নগদ ছয় হাজার টাকা ঘুষ গ্রহন করেন এবং আরও মোটা অংকের টাকা দাবী করেন।

এক পর্যায়ে পুলিশের এস আই আইয়ুব আলী মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮ টায় মজিদুল হককে তার বাড়ী থেকে তুলে এনে থানার একটি কক্ষে আটক রাখেন এবং তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে বলে তার পরিবার ও জনপ্রতিনিধি লায়লা বেগমের কাছে এক লাখ টাকা দাবী করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।

পরে বিষয়টি উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানী সরকারকে অবগত করা হলে তিনি বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার রাত ৯ টার দিকে ফুলবাড়ী থানায় গিয়ে চ্যালেঞ্জ করেন।

এক পর্যায়ে অভিযুক্ত এসআই আইয়ুব আলীকে ফুলবাড়ী থানা অফিসার ইনচার্জের সামনে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি সদুত্তর দিতে পারেননি।

শিমুলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত আসনে ইউপি সদস্য লায়লা বেগম জানান, ‘তিনি আমার নিকট থেকে ইতিপূর্বে মজিদুলের বিষয়ে মামলা হবে না এই মর্মে ছয় হাজার টাকা ঘুষ নেন। এরপর মামলার মিমাংসা এবং আটক মজিদুল হককে ছেড়ে দেয়ার কথা বলে এক লাখ টাকার দাবি করেন।’

শিমুলবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শরিফুল আলম মিয়া সোহেল জানান, ‘অবৈধভাবে আমার ইউনিয়নের মজিদুল হককে এসআই আইয়ুব থানায় এনে আটক করে রাখেন। বিষয়টি পুলিশ সুপার মহাদয়কে জানানো হলে ১৪ ঘন্টা পরে মজিদুলকে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং রাতেই অভিযুক্ত এস আইকে ক্লোজ করা হয়।’

এ ব্যাপারে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বীরমুক্তিযোদ্ধা গোলাম রব্বানী সরকার জানান, ‘ক্ষমতার অপব্যবহার করে একজন গরীব অসহায় মানুষকে থানার একটি রুমে আটক করে রাখা হয়েছে এবং আমার সঙ্গেও অসৌজন্যমূলক আচরণ করা হয়েছে। আমি বিষয়টি পুলিশ সুপারকে জানিয়েছি।’

এ সম্পর্কিত আরও খবর