টাঙ্গাইল-২ আসনের সংসদ সদস্য তানভীর হাসানের (ছোট মনির) বড় ভাই ও টাঙ্গাইল শহর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার (বড় মনির) বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন মির্জা আফরোজ এশা।
এশার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের ঘটনায় সৌরভ পাল (২৯) নামের একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতারকৃত সৌরভ পাল টাঙ্গাইল পৌর শহরের থানাপাড়া এলাকার শ্যামল পালের ছেলে। শনিবার রাতে ওই এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
রোববার (১৯ নভেম্বর) টাঙ্গাইল মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু ছালাম মিয়া এ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শনিবার রাতে নিহত এশার বড় বোন মির্জা লুনা বাদী হয়ে সৌরভ নামে এক যুবক এবং নিহতের আপন বড় ভাই মির্জা জিয়াউর হাসান জনির নামে আত্মহত্যা প্ররোচনার মামলা দায়ের করেন।
এর আগে মির্জা আফরোজ এশার (২২) নিজ বাসা থেকে ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার বিকালে সদর উপজেলার করটিয়া ইউনিয়নের করের বেতকার (বোয়ালী) নিজ বাসার তৃতীয় তলায় এশার মরদেহটি পাওয়া যায়। এশা করের বেতকা গ্রামের মৃত লতিফ মির্জার মেয়ে। এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা এ নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে ধুম্রজাল।
ওসি আবু ছালাম মিয়া জানান, শনিবার রাতে আত্মহত্যা প্ররোচনার অভিযোগ এনে এশার বড় বোন মির্জা লুনা আপন বড় ভাই জনি ও সৌরভ নামের একজনকে আসামি করেন। মরদেহ টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। আজ রোববার ময়নাতদন্ত করা হবে। ময়নাতদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোঃ শরফুদ্দীন বলেন, টাঙ্গাইল সদর মডেল থানায় এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। পুলিশ রাতেই একজনকে গ্রেফতার করেছে। আইনগত সকল বিষয়ে আমরা সজাগ থেকে এ হত্যার বিষয়ে কাজ করে যাচ্ছি। ময়নাতদন্ত শেষে রিপোর্ট পেলে এই হত্যার বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৫ এপ্রিল রাতে টাঙ্গাইল সদর থানায় এশা বাদি হয়ে গোলাম কিবরিয়ার (বড় মনির) বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়ের করেন। মামলায় এশা ধর্ষণের কারণে অন্তঃসত্ত্বা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন। পরে ৬ এপ্রিল দুপুরে আদালতে ২২ ধারায় জবানবন্দী দেন ওই কিশোরী। মামলা দায়েরের পর গোলাম কিবরিয়া উচ্চ আদালত থেকে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন লাভ করেন। পরে নিম্ন আদালতে হাজির হলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
গত ৩০ জুন টাঙ্গাইল শহরের একটি বেসরকারি ক্লিনিকে এশা পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। পরে আদালতের নির্দেশে এশার গর্ভে জন্ম নেয়া শিশুর ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষার প্রতিবেদনে জন্ম নেওয়া ওই শিশুটির পিতা বড় মনি নন।
পরে আদালত গত ৯ অক্টোবর বড় মনিরকে ১১ জুলাই উচ্চ আদালতের দেওয়া জামিন বহাল রাখেন। পরে তিনি মুক্তি লাভ করেন। ধর্ষণের এই মামলাটি টাঙ্গাইলের পুলিশ ব্যুারো অব ইনভেস্টিগেশন (পিপিআই) তদন্ত করছে।