রাজধানীর শ্যামপুর এলাকায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) পরিচয়ে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ির কাছ থেকে প্রায় ৪০ ভরি স্বর্ণ ও তিন লাখ ৪৬ হাজার টাকা ডাকাতির সময় একটি চক্রের চারজনকে হাতেনাতে গ্রেফতার করেছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে বরখাস্ত হওয়া পুলিশ সদস্য ও সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য জড়িত বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেফতারকৃরা হলেন, মো. আলম (৬২), মো. আলমগীর হোসেন (৩৯), মো. পলাশ শেখ (৩৫), মো. সাব্বির হোসেন (৩৪)। তাদের মধ্যে মো. আলম বরখাস্তকৃত পুলিশ সদস্য ও মো. আলমগীর হোসেন সেনাবাহিনীর সদস্য বলে পরিচয় দেন।
বুধবার (২৯ নভেম্বর) রাজধানীর মিন্টু রোডে ডিএমপি কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপস) ড. খ. ম মহিদ উদ্দিন।
মহিদ উদ্দি্ন বলেন, ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা বাজারের জ্যোতি জুয়েলার্সের মালিক তপন কুমার সাহা (৪২)। তিনি ঢাকার তাঁতী বাজার তার মামা প্রাণতোষ কর্মকারের 'রাজকোট বুলিয়ন এন্ড জুয়েলার্স' প্রতিষ্ঠান থেকে স্বর্ণ ও মালামাল কিনে নিজের প্রতিষ্ঠান ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা নিয়ে যায়।
গতকাল ২৮ নভেম্বর মঙ্গলবার বিকালে তিনি ফরিদপুর থেকে ঢাকা তাতী বাজার আসেন এবং অর্ডারের ৩৮ দশমিক ৯৭০ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার এবং মামার কাছ থেকে ধার হিসেবে ৩ লাখ ৪৬ হাজার টাকা একটি হাত ব্যাগে নিয়ে তার ফরিদপুর যাওয়ার জন্য পোস্তগোলার উদ্দেশ্যে সিএনজিতে রওনা হন। পথে শ্যামপুর থানার ঢাকা মাওয়া রোডে পোস্তগোলা ব্রীজের পূর্ব পাশের ঢালে পৌছালে কেরানীগঞ্জের দিক থেকে আসা একটি সাদা রংয়ের মাইক্রোবাস হঠাৎ সিএনজির গতিরোধ করে। তারপর আসামিরা মাইক্রোবাস থেকে নেমে নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দেয় এবং সিএনজি থেকে তাকে টেনে হেচড়ে মাইক্রোতে উঠিয়ে নেয় এবং তার হাত পা ও চোখ বাধার চেষ্টা করে।
সে বাধা দিলে তাকে কিলঘুষি মেরে আহত করে। এক পর্যায়ে তাকে মেরে ফেলার ভয় দেখিয়ে তার নিকট থেকে স্বর্ণালংকর ও নগদ টাকা ভর্তি ব্যাগ এবং ২টি মোবাইল কেড়ে নেয়।
ভুয়া ডিবি সদস্যদের আটক করার প্রক্রিয়া জানিয়ে তিনি আরও বলেন, আসামিরা গাড়িটি নিয়ে ঢাকার দিকে যেতে থাকে। কিছু দূরে যাওয়ার পরেই রাস্তায় যানজটে গাড়িটি ঘুরিয়ে উল্টাপথে আসার সময় কর্তব্যরত সার্জেন্ট গাড়িটি সিগন্যাল দিয়ে থামায় এবং গাড়ির কাগজপত্র দেখতে চায়।
তখন পলাতক আসামি মাসুদ সার্জেন্টের কাছে নিজেকে সেনাবাহিনীর অফিসার পরিচয় দেয়। অপহৃত ব্যক্তি তপন কুমার তখন পুলিশকে দেখে চিৎকার দিলে আসামিরা পালানোর চেষ্টা করে। এস ময় শ্যামপুর থানার পুলিশের টহল টিম ঘটনাস্থলে আসলে ডিউটিরত সার্জেন্ট অন্যান্য সার্জেট, টিআই এবং পুলিশসহ শ্যামপুর থানা পুলিশ মিলে আসামিদের আটক করেন।
আটককৃতদের কাছ থেকে সর্বমোট ৩৮ দশমিক ৯৭০ ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার এবং ৩ লাখ ৪৬ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়।
আসামিদের আদালতে পাঠানো হয়েছে বলেও জানানো হয়।