লাফার্জহোলসিম সিমেন্টে গ্যাস সরবরাহ চুক্তি আর নবায়ন নয়

, জাতীয়

সেরাজুল ইসলাম সিরাজ, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট বার্ত২৪.কম | 2024-02-02 01:09:15

লাফার্জহোলসিম সিমেন্ট কারখানার গ্যাস সরবরাহ চুক্তি নবায়ন করবে না বাংলাদেশ। কোম্পানিটির ২০ বছর মেয়াদী গ্যাস সরবরাহ চুক্তির মেয়াদ ২০২৬ সালের ১৭ জানুয়ারি শেষ হয়ে যাচ্ছে।

বহুজাতিক কোম্পানিটির সঙ্গে ২০০৩ সালের ১৯ জানুয়ারি গ্যাস সরবরাহ চুক্তি করে জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমস লিমিটেড। চুক্তি অনুযায়ী ২০ বছর মেয়াদ পুর্তির ১৮ মাস পুর্বে কোনও পক্ষ থেকে চুক্তি নবায়ন অথবা বর্ধিত করার নোটিশ দেওয়া না হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ৫ বছর বেড়ে যাবে চুক্তির মেয়াদ।

জালালাবাদ গ্যাস ট্রান্সমিশন অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন সিস্টেমস লিমিটেডের (জেজিটিডিসিএল) পক্ষ থেকে গত ২৫ জানুয়ারি চুক্তি নবায়ন না করার চিঠি দেওয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে চুক্তি অনুযায়ী ২০২৪ সালের ১৭ জুলাই তারিখের পুর্বেই নবায়ন না করার চিঠি দেওয়ার শর্ত রয়েছে। মেয়াদ শেষে জেজিটিডিসিএল আর নবায়ন করতে চায় না। জেজিটিডিসিএল ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোঃ আতিকুর রহমান এতে স্বাক্ষর করেছেন।

বহুজাতিক কোম্পানিটির সঙ্গে অনেকদিন ধরেই গ্যাস বিল নিয়ে টানাপোড়েন চলছে। বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে গ্যাসের দাম বাড়ালে টানাপোড়েন শুরু হয়।

এরপর একাধিক দফায় গ্যাসের দাম বাড়ালেও তারা বর্ধিত মৃল্য পরিশোধে থেকে বিরত ছিল। চুক্তির সময় ধার্য গ্যাস দরের ৮.৩১ (ঘনমিটার) বেশি বিল দিতে অপরাগতা জানায়। ২০২০ সালের ৪৪৯ তম বোর্ড সভায় বর্ধিত বিল পরিশোধের জন্য চুড়ান্ত নোটিশ প্রদানের সিদ্ধান্ত হয়।

গ্যাস দর নিয়ে দ্বন্দ্বের বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়। এ মামলায় আদালতের রায়ে কোম্পানিটিকে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) নির্ধারিত দর অনুযায়ী গ্যাস বিল বাবদ ৯০ কোটি ২৫ লাখ টাকা পরিশোধের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়।

রায়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশকে এককালীন ও ত্রৈমাসিক কিস্তিতে এ অর্থ পরিশোধের নির্দেশনা দেন। সর্বশেষ গত বছরের ১৩ আগস্টের কিস্তিসহ ৯০ কোটি ২৫ লাখ টাকার বিল পরিশোধ করেছে।

জেজিটিডিসিএল তার বোর্ড সভায় উল্লেখ করেছে, বিইআরসি ঘোষিত বিদ্যমান দর রয়েছে প্রতি ঘনমিটার ৩০ টাকা, ১০.৬৭ টাকা হারে গ্যাস সরবরাহ করে কোম্পানি বিপুল পরিমাণ ক্ষতির সম্মুখিন হবে। বিতরণ চার্জ বাদ দিলে ১৯.১৫ টাকা হারে লোকসান হবে। এতে করে প্রতি মাসে ২৬ কোটি ৯০ লাখ টাকা লোকসান গুণতে হবে।

হোলসিম সুইজারল্যান্ড ও লাফার্জ প্যারিসভিত্তিক কোম্পানি। লাফার্জের বিশ্বের ৬৪টি দেশে, ৭০টি দেশে হোলসিমের কার্যক্রম ছিল। কোম্পানি দুটি ২০১৪ সালে একীভূত হয় লাফার্জ হোলসিম নাম ধারণ করে। বাংলাদেশে সিলেটের ছাতকে লাফার্জহোলসিমের সিমেন্ট কারখানা রয়েছে। এছাড়া কোম্পানিটির নারায়ণগঞ্জের মেঘনাঘাটে দুটি ও খুলনার মোংলায় একটি গ্রাইন্ডিং স্টেশন রয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর