চা শিল্পকে বাঁচাতে চোরাচালান বন্ধের দাবি বাগান মালিকদের

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, সিলেট | 2024-02-11 18:21:49

দেশের চা শিল্পকে বাঁচাতে চোরাচালান বন্ধের পাশাপাশি কেজি প্রতি চায়ের ন্যূনতম নিলাম মূল্য ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা নির্ধারণ করার দাবি জানিয়েছেন বাগান মালিক ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

রোববার (১১ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ২৬টি বাগান মালিকদের পক্ষে টি প্ল্যান্টার্স সিলেট ডিভিশন আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ম্যাক্সন বাদার্স টি এস্টেটের ডিরেক্টর অপারেশন মুফতি মোহাম্মদ হাসান এ দাবি জানান।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, অন্যান্য শিল্পের উৎপাদিত পণ্যের তুলনায় চা নিলাম মূল্য উৎপাদন মূল্যের অনেক কম। বাগানের ব্যবহৃত রোগবালাই দমনে ঔষধসহ অন্যান্য পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ কয়েকগুণ বেড়েছে কিন্তু তার চেয়েও বেশি মাত্রায় কমেছে চায়ের নিলামমূল্য।

উৎপাদন মূল্যের চেয়েও চা-নিলাম মূল্য কম উল্লেখ করে মুফতি এম হাসান বলেন, বাগানের রোগবালাই দমনে ব্যবহৃত ঔষধ, সার এবং বিভিন্ন পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদন খরচ কয়েকগুণ বেড়েছে কিন্তু নিলামমূল্য তার চেয়েও বেশি মাত্রায় কমেছে। ভালো মানের চা ২২০ টাকা বা এর চেয়ে কিছু বেশি দামে বিক্রি হলেও উৎপাদন খরচের চেয়ে বেশি ছিলো। এর বিপরীতে বর্তমানে নিলাম মূল্য ১৭০ টাকা ১৭৫ টাকা থেকে নেমে ১০০ বা ১১০ টাকায় এসেছে। এমনকি ১০০ টাকার নিচেও নিলামে বিক্রি হচ্ছে। চায়ের এই নিলামমূল্য দিয়ে লাভের প্রশ্নই উঠে না, উৎপাদন খরচও বহন করা কোনোভাবে সম্ভব নয়।

এ অবস্থা থেকে চা শিল্পকে বাঁচাতে দেশের বাইরে থেকে আসা চায়ের চোরাচালান বন্ধের পাশাপাশি পঞ্চগড় এলাকায় চা উৎপাদনের মান এবং বিধিসম্মতভাবে চা বাজারজাতের ব্যবস্থা, চা বাগানকে বহুমুখী আয়ের উৎস সৃষ্টি কল্পে চা পযর্টন স্থাপন, কৃষি ঋণ পরিশোধের হার কমানো ও শর্তাবলী সহজ করাসহ আরও কয়েকটি দাবি জানান।

তিনি বলেন, চা শিল্পের ওপর কয়েক লাখ শ্রমিক, কর্মচারীর জীবন জীবিকা নির্ভরশীল। পরোক্ষভাবে আরও কয়েক লাখ লোক চা শিল্পের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন। অথচ বর্তমানে চা শিল্প কঠিনতম পরিস্থিতিতে নিমজ্জিত যা এই শিল্পের টিকে থাকার ভিত নাড়িয়ে দিচ্ছে।

অবস্থার উত্তরণে তিনি প্যাকেজিংয়ের নিম্নতম পরিমাণ ২৫ শতাংশ থেকে ৫০ শতাংশ করা, ভাল প্যাকেটজাত চা বা টি ব্যাগ রফতানি করার সুযোগ সৃষ্টি করা, বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করার শিডিউল রি-স্ট্রাকচার করার সুযোগ, রুগ্ন, ছোট বা যেসব ছোট বাগানের উৎপাদন কম সেসব বাগানকে ৫ বছরের জন্য ট্যাক্স হলিডে দিয়ে তাদের উৎপাদন বাড়ানোর সুযোগ, বাগানগুলোতে আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য আইন রক্ষাকারী বাহিনীর তড়িৎ ব্যবস্থা গ্রহণের পদক্ষেপ, বিশেষ করে বাগানের জায়গা দখলকারীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্য বাগান মালিকরা সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।

এসময় চা-বাগান মালিকদের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন ম্যাকসন গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ খছরুজ্জামান, রেহানা চা-বাগানের পরিচারক শফিকুল বারী, খাদিম চা-বাগানের জেনারেল ম্যানেজার নোমান হায়দার, মালনি ছড়া চা-বাগানের ম্যানেজার আজম আলী, মাথিউরা ও মুমিন ছড়া চা-বাগানের ম্যানেজার রুকন উদ্দিন খান, এম আহমদ টি অ্যান্ড ল্যান্ড কোম্পানির জেনারেল ম্যানেজার সৈয়দ মহিউদ্দিন, এম আহমদ গ্রুপের পরিচালক সাজিদ চৌধুরী প্রমুখ।

এ সম্পর্কিত আরও খবর