রাজধানীর বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে কাচ্চি ভাই রেষ্টুরেন্টসহ পুরো ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। তারপর থেকে প্রশাসনসহ বিভিন্ন মহলের তৎপরতা দেখা যায় ঢাকার রেস্তোরাঁগুলোতে। ভবনের নিরাপত্তা, রেস্তোরাঁ চালানোর অনুমতি যাচাইসহ নানা রকমের অভিযানের পর থেকে বন্ধ হতে থাকে বেইলি রোডসহ রাজধানীর অনেক হোটেল রেস্তোরাঁ।
প্রতি বছর রমজান মাস এলেই রাজধানীতে যে কয়েকটি ইফতার বাজার মানুষের নজর কারে তারমধ্যে অন্যতম বেইলি রোডের ইফতার বাজার। তবে এবছর দেখা গেছে তার উল্টো চিত্র। ক্রেতার অভাবে তেমন জমেইনি বেইলি রোডের ইফতার বাজার। ব্যবসায়ীরা বলছে ভয়াবহ আগুনের পর জৌলুস হারিয়েছে বেইলি রোডের ইফতার বাজার।
শুক্রবার (১৫ মার্চ) দুপুর থেকে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় বিগত বছরগুলোর তুলনায় দোকানের সংখ্যা যেমন কম। ঠিক তেমনি ক্রেতার আনাগোনাও ছিলো সীমিত। ফুটপাতে কোন দোকান নেই বললেই চলে। হাতেগোনা এক দুইটা দোকান থাকলেও ভীড় নেই তেমন। এছাড়াও বেইলি রোডের প্রসিদ্ধ নবাবী ভোজ এর দুইটি শাখা, ফখরুদ্দিন বিরিয়ানিসহ বেশ কিছু রেস্তোরাঁ বন্ধ রয়েছে।
বেইলি রোডে অবস্থিত পিঠা ঘরের ম্যানেজার রাকিব খান বার্তা২৪.কমকে কে জানান, কাচ্চি ভাই রেষ্টুরেন্ট ভবনে আগুন লাগার পরে রাজউক, ফায়ার সার্ভিসসহ বিভিন্ন সরকারি অভিযানের পর থেকে দোকানের সংখ্যা কমে গেছে এই রোডে। দোকান কমার পাশাপাশি কাস্টমারের সংখ্যাও কমে গেছে। রোজা শুরু হয়েছে আজকে চারদিন হলো কিন্তু গত তিন দিনে ৩০ ভাগ কাস্টমারও আসেনি। আজকে যেহেতু শুক্রবার ছুটির দিন তাই আশাকরি আজকে কিছু কাস্টমার আসবে। এখন দেখা যাক আমরা অপেক্ষা করছি ভালো কিছু হবে বাকি দিন গুলোতে।
বেইলি রোডের নাসরিন হাউসে অবস্থিত ব্রাঞ্চ এট বেইলি রেস্টুরেন্টের ম্যানেজার মো: আলী হোসেন জানান, এক সময় মানুষ শখের বসে এই বেইলি রোডে ঘুরতে আসতো কিন্তু এখন সেই শখ মানুষের মধ্যে হারিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে আগুন লাগার পর থেকে এক ধরনের সুনসান নীরবতা বিরাজ করছে বেইলি রোডের রেস্তোরাঁগুলোতে। প্রতি বছর বেইলি রোডের ইফতার বাজার ঢাকাবাসীর কাছে অন্যতম আকর্ষণীয় স্থান হলেও। এবার বেইলি রোডের ইফতার বাজার একদমই জমে উঠছে না। গতবছরের তুলনায় তাই বাধ্য হয়ে এবছর অনেক ইফতার আইটেম কমিয়ে দিয়েছি। তাছাড়া দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে অনেকেই হোটেল রেস্টুরেন্টে থেকে ইফতার করাও কমিয়ে দিয়েছে।
তবে ব্যবসায়ীদের প্রত্যাশা সবকিছুর যেমন একটা শেষ আছে, ঠিক তেমনি আবারও সময়ের সাথে সাথে হয়তো আবারো স্বরুপে ফিরবে বেইলি রোডের ইফতার বাজার। বেইলি রোড ফিরে পাবে তার আগের জৌলুস!