আধুনিক পদ্ধতিতে শসা চাষে সফল নরসিংদীর জাকির

, জাতীয়

শরীফ ইকবাল রাসেল,ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট,বার্তা২৪.কম,নরসিংদী | 2024-04-01 11:40:37

গতানুগতিক চাষাবাদ থেকে বেরিয়ে এসে আধুনিক পদ্ধতিতে পরীক্ষামূলক শসা চাষাবাদের প্রথমবারেই সফলতা পেয়েছেন নরসিংদীর কৃষক জাকির খান। কৃষি বিভাগ বলছে, আধুনিক চাষাবাদের নিয়মনীতি মেনে ফসল বপন করা হলে কৃষকরা অল্প জমিতে বেশী লাভবান হতে পারেন। 

কৃষি নির্ভর এদেশে যুগ যুগ ধরেই কৃষকরা খাদ্যশস্য চাষাবাদ করে আসছেন। কৃষকদের প্রাচীনকালের গতানুগতিক চাষাবাদের পরিবর্তন নিয়ে কাজ করে আসছে কৃষি বিভাগ। কৃষি বিভাগের উদ্ভাবিত আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের ফলে দেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ। শুধু তাই নয়, খাদ্যে উদ্বৃত্ত হচ্ছে বেশ কয়েক বছর ধরে। এবার তেমনি নরসিংদীর পলাশ উপজেলার চরনগরদী গ্রামের এক যুবক জাকির খান। বিগত বেশ কিছু দিন ধরে বাবা দাদার পেশা কলা, পেপে, ধান ও সবজি সহ অন্যান্য ফসল চাষাবাদ করে আসছেন। এবার তিনি পরীক্ষামূলকভাবে আধুনিক পদ্ধতিতে শসা চাষ করেছেন। প্রথমবারেই এই চাষাবাদে তিনি সফলতার পরিচয় দিয়েছেন। বাড়ির পাশে মাত্র ২০ শতাংশ জমিতে চাষ করেছেন উন্নত মানের শসার। আর এই জমি থেকেই এখন দৈনিক এক থেকে দেড়শো কেজি শসা উত্তোলন করতে পারছেন।

বিষমুক্ত এ শসা খেতে সুস্বাদু হওয়ায় স্থানীয় বাজারে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আর তাই ব্যবসায়ীরা বাড়ি থেকে ভালো দাম দিয়েই শসা নিয়ে যাচ্ছেন। উপযুক্ত সময়ে বপন করে নিয়ম মেনে পরিচর্যা করায় দামও পাচ্ছেন ভালো। এবার ভালো হওয়ায় ভবিষ্যতে আরও বেশী করে চাষাবাদের লক্ষ্য তাদের।  

কৃষক জাকির খান জানান, তিনি একটি ব্যক্তি মালিকানাধীন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। এরপরও বাবা খোরশেদ খানের গড়া কৃষি দেখাশোনা করেন। এরই অংশ হিসেবে এই শসা জমিতে সময় দেন। তিনি এবারের ফলনে খুশি, তাই আগামীতে আরও বেশী জমিতে শসা চাষের আগ্রহ তার।

জাকির খানের বাবা খোরশেদ খান জানান, আমরা একজন প্রান্তিক চাষি। অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এবার প্রথমবারের মতো শসা চাষে ভালো ফলন হওয়ায় খুবই খুশি। আর সময়মতো ফলন হওয়ায় বাজারে ভালো দামও পাওয়া যাচ্ছে। চরনগরদী বাজারে আমার একটি দোকান থাকায় ছেলে জাকিরই বেশী দেখাশোনা করে থাকে। জমিতে ফেরোমিন ফাঁদ ব্যবহার করায় বিষ দিতে হচ্ছেনা। যার ফলে নিরাপদ খাদ্য হিসেবে এই শসা সকলেরই পছন্দের।

ক্রেতা হৃদয় দাস জানান, দৈনিক বাজারের অংশ হিসেবে সবজির সাথে শসা একটি বিশেষ অনুসঙ্গ। খেতে সুস্বাদু হওয়ায় স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত শসাকেই বেছে নেন। আর আমরাও স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত শসা ক্রয় করলে এলাকার কৃষকরা উৎসাহী হয়ে উঠবেন।  

স্থানীয় চরনগরদী বাজারের সবজি ব্যবসায়ী কবির হোসেন জানান, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত এই শসা বিষমুক্ত হওয়ায় এর চাহিদাও বেশী, তাই সাধারণ মানুষও দশ টাকা বেশী ধরেই নিয়ে যাচ্ছেন।

শসা খেতের শ্রমিক ফারুক মিয়া জানান, উন্নতমানের একটি কৃষি খামারের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে প্রথমবারের মতো এই শসা চাষে সফলতা পাওয়া গেছে। আগামীতে আরও বেশী করে চাষের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান তিনি।

পলাশ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আয়েশা আক্তার জানান, কৃষকরা গতানুগতিক চাষাবাদ থেকে বেরিয়ে আধুনিক পদ্ধতির নিয়ম মেনে চাষাবাদ করলে অল্প জমিতেও চাষাবাদ করে বেশী ফলনে লাভবান হতে পারেন। তাই সকল কৃষককে কৃষি অফিসের পরামর্শ নিয়ে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদের আহ্বান জানান এই কর্মকর্তা।

কৃষিখাতে গতানুগতিক চাষাবাদ থেকে বেরিয়ে এসে কৃষি বিভাগের পরামর্শে আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদে দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি হবে এমন আশা সচেতন মহলের।

এ সম্পর্কিত আরও খবর