পবিত্র ঈদ-উল-ফিতরে মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন ও আনন্দময় করতে ২২ নির্দেশনা দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি)।
বৃহস্পতিবার (০৪ এপ্রিল) সকালে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে ঈদ-উল-ফিতর-২০২৪ এর ঈদযাত্রা প্রস্তুতি সম্পর্কিত ডিএমপি ট্র্যাফিক বিভাগের সংবাদ সম্মেলনে এসব নির্দেশনা জানান ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মো. মুনিবুর রহমান।
নির্দেশনাগুলো হলো:
টার্মিনালের ভিতর হতে বাসে যাত্রী উঠা-নামার কাজ করতে হবে। কোনো অবস্থাতেই টার্মিনাল হতে বের হয়ে রাস্তা হতে বাসে যাত্রী-নামানোর কাজ করানো যাবে না।
গণপরিবহনগুলো নির্ধারিত সংখ্যার অতিরিক্ত যাত্রী বহন করবে না। বিশেষ করে ছাদে কোনো যাত্রী ঝুঁকি নিয়ে গমন করবেন না ।
দূরপাল্লার গণ-পরিবহনগুলো মহানগরীর মধ্যে যাত্রী উঠা-নামার কাজ করবে না। এক্ষেত্রে গেইট লক পদ্ধতি অবলম্বন করা আবশ্যক (মহানগরীর ভিতরে)।
যাত্রার শুরুতে যাত্রীদের নিজ নিজ মালামাল সযত্নে নিরাপদে রাখার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে।
যাত্রাকালে যাত্রীদের অপরিচিত কোনো ব্যক্তি হতে কোনো খাদ্য গ্রহণ না করার জন্য বলা হচ্ছে।
মোটরসাইকেলে যারা দূরপাল্লার যাত্রী থাকবেন তাদের অবশ্যই যাত্রাকালীন সময়ে হেলমেট পরিধান করতে হবে।
ঝুঁকি পরিহার করার জন্য মোটরসাইকেল যাত্রীদের অতিরিক্ত মালামাল বহন না করা জন্য আহ্বান জানানো হচ্ছে।
দূরপাল্লার যাত্রার ক্ষেত্রে ঢাকা হতে মোটরসাইকেলে দুইয়ের অধিক যাত্রী না উঠার জন্য বলা হলো ।
যারা নিজ গাড়ি যোগে অথবা মোটরসাইকেল যোগে ঢাকা হতে দূরপাল্লার যাত্রায় অংশীদার হবেন তারা নিজ নিজ মালিকানাধীন যানবাহনের ফিটনেসের বিষয়টি নিশ্চিত করে নিবেন ।
যাত্রাকালে নিজ নিজ ব্যক্তি মালিকানাধীন যানবাহনের প্রয়োজনীয় কাগজ ও নথিপত্র অবশ্যই যানবাহনে সুরক্ষিত থাকতে হবে।
গণপরিবহনের ক্ষেত্রেও ফিটনেসের বিষয়টি মালিক/শ্রমিক পক্ষ নিশ্চিত করবেন এবং যানবাহনে তা অবশ্যই সুরক্ষিত রাখতে হবে ।
অনেক সময় টার্মিনালের ঠিক বাইরের সড়কে, বিভিন্ন পাবলিক প্লেসে, খালি ট্রাক/পিকআপ এ যাত্রী বোঝাই করে দূরপাল্লার যাত্রায় যাওয়ার কাজ করা হয়, যা পরিহার করা জরুরি ।
সম্মানিত নগরবাসী এবং বাস মালিকদের অনুরোধ করা যাচ্ছে যে, যানবাহনের চালক যেন অপ্রাপ্ত বয়স্ক এবং অসুস্থ না থাকে, সে বিষয়টিতে বিশেষভাবে নজর দেওয়ার জন্য কেননা চালকের সচেতনতা ও সতর্কতা পারে যাত্রাপথের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ।
চালকদের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানানো যাচ্ছে যে, (ঘুমন্ত অবস্থায় কোনোভাবেই) ঘুম ঘুম চোখে কোন অবস্থাতেই গাড়ি চালাবেন না, কেননা তা নিরাপত্তার জন্য হুমকি স্বরূপ ।
ঈদ শুরুর প্রারম্ভে দেখা যায় যে বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠান, কলকারখানা ছুটি হলে লক্ষ লক্ষ শ্রমিকের বাড়ি ফেরার সুযোগ নিয়ে অনেক ফিটনেসবিহীন গাড়ি অযাচিতভাবে রাস্তায়, মহাসড়কে নামানোর প্রয়াস চালানো হয়। এতে যানজটের তৈরি হয়, আবার দূর-দূরান্তে যাত্রাপথকে ঝুঁকিপূর্ণ করে তোলে। তাই দূরপাল্লার এবং সিটিং সার্ভিস এর বিভিন্ন রুটের গণপরিবহনের মালিকদের এ বিষয়ে সতর্ক থেকে ট্র্যাফিক পুলিশকে সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানানো যাচ্ছে।
যে সকল যানবাহনে গ্যাস সিলিন্ডার ব্যবহৃত হচ্ছে, গ্যাস সিলিন্ডারটি যেন মেয়াদোত্তীর্ণ/ঝুঁকিপূর্ণ না থাকে সে বিষয়টি যাত্রাপথের প্রাক্কালে নিশ্চিত হওয়া জরুরি।
বাস যাত্রীদের বাসের অপেক্ষায় টার্মিনাল সংলগ্ন সড়কে দাঁড়িয়ে না থেকে স্বপরিবারে টার্মিনালের ভিতরে অবস্থান করার জন্য বলা হলো ।
লঞ্চ টার্মিনাল, রেলওয়ে স্টেশন, বিমানবন্দর কেন্দ্রিক যাত্রীদের গমনাগমন সুষ্ঠু করার জন্য ডিএমপির ট্র্যাফিক বিভাগ সচেষ্ট থাকবে ।
রমজানের শেষপ্রান্তে বিভিন্ন মার্কেট কেন্দ্রিক ভিড় পরিলক্ষিত হচ্ছে এবং সেই সাথে পার্কিং এর ক্ষেত্রে চ্যালেঞ্জ তৈরি হচ্ছে। মার্কেটের আশেপাশে সুষ্ঠু ট্র্যাফিক ব্যবস্থাপনার নিশ্চিত করার উদ্দেশ্যে আগত যানবাহনের চালকদের মার্কেট সংশ্লিষ্ট ট্র্যাফিক নির্দেশনা মেনে চলতে আহ্বান জানানো যাচ্ছে।
মার্কেট কেন্দ্রিক পথচারী/ক্রেতা-বিক্রেতাদের রাস্তা পারাপারের ক্ষেত্রে ফুটওভারব্রিজ/জেব্রা ক্রসিং (ক্ষেত্র বিশেষ) এর ব্যবহার নিশ্চিত করা এবং ক্ষেত্র বিশেষে ট্র্যাফিক নির্দেশনাবলি মেনে চলার জন্য বিশেষ ভাবে আহ্বান জানানো যাচ্ছে।
ঢাকা মহানগরীর Entry/Exit পথে যানবাহনে চলাচলে সুষ্ঠু স্বাভাবিক রাখার নিমিত্তে পার্শ্ববর্তী সকল পুলিশ ইউনিটের সাথে প্রয়োজনীয় সমন্বয় সাধন করা হবে।
রমজান এবং আসন্ন ঈদ-উল-ফিতরকে ঘিরে ডিএমপির ট্র্যাফিক বিভাগ আপনার সেবায় সচেষ্ট এবং নিবেদিত সম্মানিত নগরবাসীর সহযোগিতা কাম্য।