খাবারের সঙ্গে কৌশলে চেতনানাশক মিশিয়ে দেন ডাকাতদলের সদস্যরা। এরপর পরিবারের লোকজনদেরকে অজ্ঞান করে নগদ টাকা-স্বর্ণালঙ্কারসহ দামী জিনিসপত্র নিয়ে চম্পট মেরে স্থান ত্যাগ করেন তারা। পরে সেগুলোকে ভাগ-বাঁটোয়ারা করে নেন নিজেদের মাঝে।
২৮ই মার্চ মধ্যরাতে এমনই এক ঘটনা ঘটে মানিকগঞ্জে। জেলার সিংগাইর উপজেলার জয়মন্টপ ইউনিয়নের কমলনগর গ্রামের প্রবাসী উজ্জ্বল সন্ন্যাসীর বাড়ি থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারসহ ২১ লাখেরও বেশি টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায় কয়েকজন দুর্বৃত্ত। পরদিন সকালে এ ঘটনায় সিংগাইর থানায় অভিযোগ দেন প্রবাসীর স্ত্রী পূজা সরকার।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) দুপুরে প্রেস ব্রিফিং এর মাধ্যমে ডাকাতদেরকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন মানিকগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান।
এসময় তিনি বলেন, ক্লু-লেস এই ঘটনার বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পরপরই তদন্তে নামে পুলিশের একটি চৌকস টিম। অল্প সময়ের মধ্যেই এই ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে গ্রেফতার করা হয় আন্তঃজেলা ডাকাতদলের সদস্য আব্দুল কুদ্দুস (৫০) এবং আরমান (৩৫)-কে। পরে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে রিমান্ডে নিলে বেড়িয়ে আসে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য। যার উপর ভিত্তি করে সিংগাইর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেফতার করা হয় ডাকাতদলের অপরাপর সদস্য মিজান (২৫), সোহাগ (২৫) এবং মনির হোসেন (৩৭)- কে।
ডাকাতির পরিকল্পনাকারী আব্দুল কুদ্দুস এর বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত রামদা, লোহার নাক চিরানী (তালা ও গ্রীল ভাঙ্গার কাজে ব্যবহৃত), বড় সেলাই রেঞ্জ, ধারালো চাকু, প্লাস, টর্চ লাইট উদ্ধার করা হয়।
এছাড়াও স্বর্ণকার আসামি মোঃ মনির হোসেন এর হেফাজত হতে লুণ্ঠিত স্বর্ণালংকারের মধ্য হতে ৫ ভরি ৩ আনা ৫ রত্তি স্বর্ণালংকার ও লুণ্ঠিত স্বর্ণ বিক্রির নগদ ৩ লাখ ৫৩ হাজার টাকা এবং অপর ডাকাত মোঃ মিজান এর হেফাজত হতে লুণ্ঠিত মাল বিক্রয়ের ভাগের নগদ ৪০ হাকার টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতার হওয়া সকল ডাকাতের বাড়ি সিংগাইর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়।
ডাকাত আব্দুল কুদ্দুস, মোঃ মিজান, সোহাগ ও মোঃ মনির হোসেন-গণ স্বেচ্ছায় বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারা মোতাবেক দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করবে। ডাকাত আব্দুল কুদ্দুস এর বিরুদ্ধে ১৭টি, মোঃ আরমান এর বিরুদ্ধে ০৮টি, মোঃ মিজান এর বিরুদ্ধে ০৩টি, সোহাগ এর বিরুদ্ধে ০৩টি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে বলেও জানান পুলিশ সুপার।