রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণকৃত ভূমির ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫১ কোটি ২৮ লাখ ৭৪ হাজার ৪৩২ টাকার চেক পেয়েছেন ২৭ ভূমি মালিক।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে তাদের চেক তুলে দেয় রাজশাহী জেলা প্রশাসন। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ।
জেলা প্রশাসক বলেন, সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়ে থাকে। রাজশাহীতে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে জনগণ তাদের জমি সরকারকে দিয়েছে। এক্ষেত্রে ভূমি অধিগ্রহণ করলে ওই এলাকায় প্রকৃত মূল্যের তিনগুণ টাকা ভূমি মালিককে দেওয়া হয়। সে সময়ে দলিলে মূল্য কম থাকলে কম পাবেন। সেজন্য জমি ক্রয় করে প্রকৃত মূল্য দলিলে উল্লেখ না করা পর্যন্ত ভূমির ক্রেতা ও বিক্রেতাদের দলিলে স্বাক্ষর না করার জন্য অনুরোধ জানান তিনি।
এছাড়াও তিনি ক্ষতিপূরণ পাওয়ার জন্য কেউ কোনো প্রকারের টাকা দাবি করে থাকলে তা সরাসরি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অবহিত করার জন্যও নির্দেশনা দেন।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সরকার অসীম কুমার বলেন, রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ প্রকল্পের জন্য ভূমি অধিগ্রহণের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হন ২৭ জন ভূমির মালিক। আজকে তাদের হাতে ৫১ কোটি ২৮ লাখ ৭৪ হাজার ৪৩২ টাকার চেক দেওয়া হয়েছে। ক্ষতিপূরণের টাকা পাইয়ে দেওয়ার জন্য যদি কোনো ব্যক্তি বা কর্মকর্তা ঘুষ দাবি করে তাহলে সরাসরি জেলা প্রশাসককে জানানোর অনুরোধ করেন তিনি।
রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমি অধিগ্রহণে ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিক রাসিক ১৭নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহাদত আলী শাহ্’র সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় নির্মাণ প্রকল্প প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একটি উন্নয়ন প্রকল্প। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে রাজশাহীর জেলার ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হবে। তাই আমার মূল্যবান জমি এই প্রকল্পে দিতে পেরে আনন্দিত হয়েছি। আমি এই ওয়ার্ড কাউন্সিলর, তাই রাসিক মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন মহোদয় আমাকে এই প্রকল্পের ভূমি অধিগ্রহণসহ সকল বিষয়ে সহযোগিতার দায়িত্ব দিয়েছেন।
তিনি আরো জানান, কোন দালালদের মাধ্যম ছাড়া আমি নিজে গিয়ে আমার জমির সকল কাগজ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জমা দিয়েছিলাম। কোনো প্রকার হয়রানি ছাড়াই আজ ক্ষতিপূরণের ১২ কোটি ১৬ লাখ ৯ হাজার ৬৪২ টাকার চেক হাতে পেলাম। এসময় জেলা প্রশাসক মহোদয় নিজে উপস্থিত থেকে আমাকে চেক তুলে দেন।
আরেক ভূমি মালিক সাঈদ আলী সনেটের সাথে কথা হলে তিনি জানান, একটা সময় জমির ক্ষতিপূরণের চেকের জন্য দালালসহ বিভিন্ন জায়গায় ছোটাছুটি করতে হতো। এতে আমাদের অনেক সময় ও অর্থের অপচয় হয়েছে। এখন আর সেই হয়রানি নেই। জেলা প্রশাসকের হাত থেকেই আমার জমির ক্ষতিপূরণের ৪ কোটি ৭০ লাখ ১ হাজার ৫৯৫ টাকার চেক পেলাম। রাজশাহী জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ স্যারের জন্য দ্রুত সময়ের মধ্যে এলএ চেক পাওয়া সম্ভব হয়েছে।
এতে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) সরকার অসীম কুমারের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা শাম্মী আক্তার, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মো. শামসুল ইসলাম, কানুনগো জাকির হোসাইন সরদার ও এলএ চেক গ্ৰহণের জন্য আগত ক্ষতিগ্রস্ত ভূমি মালিকগণ।