বান্দরবনের রুমায় মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাতে সোনালী ব্যাংকের পর বুধবার (৩ এপ্রিল) দিনদুপুরে কমান্ডো স্টাইলে থানচির দুই শাখায় ডাকাতির পর সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দির সরকারি ও বেসরকারি ১৫ টি ব্যাংক।
ব্যাংকগুলোর নিরাপত্তা ও স্বাভাবিক লেনদেন এবং গ্রাহকদের সেবা নিশ্চিত রাখতে প্রতিটি ব্যাংক ও তাদের শাখাগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে বলে বার্তা২৪.কমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন একাধিক ব্যাংক কর্মকর্তারা।
আসন্ন ঈদে রুমার ঘটনার কোন ধরণের প্রভাব যাতে ব্যাংক ও গ্রাহকদের ওপরে না পড়ে সে জন্য ব্যাংকগুলোতে নেওয়া হয়েছে বাড়তি নিরাপত্তা। স্ব স্ব ব্যাংকের ব্যবস্থাপকরা তাদের পরিবেশ-পরিস্থিতি বিবেচনা করে নিজ উদ্যোগে তারা এ সকল নজরদারি বাড়িয়েছেন। তাছাড়া ব্যাংকের নিরাপত্তা নিশ্চিতকল্পে মুখোশ/হেলমেট পরা ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করার লক্ষ্যে সোনালী ব্যাংকের ফরিদপুর জেনারেল ম্যানেজারস অফিস থেকে একটি চিঠিও ইস্যু করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) জেনারেল ম্যানেজার জাহিদুল ইসলাম মোল্লা স্বাক্ষরিত সেই চিঠিটি বৃহত্তর ফরিদপুরের কুষ্টিয়া, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ ও রাজবাড়ী জেলার সকল সোনালী ব্যাংকের অফিস ও শাখা কর্মকর্তাদের কাছে ই-মেইলে যোগে প্রেরণ করছেন। তাতে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে সোনালী ব্যাংকের অফিস/ শাখাসমূহের সুরক্ষায় নিরাপত্তা জোড়দার ও নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকলকে ১২ টি পদক্ষেপ গ্রহণ করার পরামর্শ দিয়েছেন।
সোনালী ব্যাংক বালিয়াকান্দি উপজেলা শাখার প্রিন্সিপাল অফিসার মো: সোহেল রানা বার্তা২৪.কমকে জানান, বালিয়াকান্দিতে তাদের দুটি শাখায় প্রায় ৫০ হাজার নিয়মিত গ্রাহক রয়েছেন। রুমার ঘটনার পর তারা দুটি শাখাতেই বাড়তি নজরদারি নিয়েছেন। ব্যাংকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য জেনারেল ম্যানেজার যে নির্দেশনা দিয়েছেন সেটি তারা বাস্তবায়ন করছেন।
জনতা ব্যাংকের বালিয়াকান্দি শাখা ব্যবস্থাপক পুলক কুমার দাস বার্তা২৪.কমকে জানান, রুমায় ব্যাংক ডাকাতির ঘটনার পর তারা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছেন। নিয়মিত ঊর্দ্বত্বন কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ রেখে তাদের দিক নির্দেশনা অনুযায়ি ব্যাংক ও গ্রাহকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করে ব্যাংকের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। ব্যাংকের চারপাশে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করেছেন।
পূবালী ব্যাংক উপশাখার ব্যবস্থাপক অমরেশ বিশ্বাস বার্তা২৪.কমকে জানান, বাড়তি নিরাপত্তার স্বার্থে তারা নিয়মিত থানায় যোগাযোগ রাখছেন। পুলিশও সকল ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ রাখছেন। থানার ওসি আলমগীর হোসেন নিজে ব্যাংকগুলো যাচ্ছেন।
অগ্রণী ব্যাংকের শাখা ব্যবস্থাপক মো: রেজাউল শেখ বার্তা২৪.কমকে জানান, বান্দরবনের ঘটনার পর তার শাখায় কর্মরত সকল আনসার বাহিনীকে বিশেষ দিক নির্দেশনা দিয়েছেন। সেই সাথে ব্যাংকের সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারিদেরকে অধিক সচেতন থাকার জন্য বলেছেন। তার শাখায় স্থাপিত সকল সিসি ক্যামেরাসমূহ সার্বিক সময়ে পর্যবেক্ষণে রাখছেন।
বালিয়াকান্দি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন আশা প্রকাশ করে বার্তা২৪.কমকে বলেন, বান্দরবনের ঘটনার প্রভাব আশা করছি কোন ভাবেই এ অঞ্চলে পড়বে না। তারপরেও পুলিশবাহিনী বিশেষ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে। সকল ইউনিয়নে দায়িত্বরত পুলিশ কর্মকর্তাদেরকে তাদের স্ব স্ব দায়িত্বরত ইউনিয়নে প্রতিষ্ঠিত ব্যাংকগুলোর প্রতি বাড়তি নজরদারির আওতায় আনতে নির্দেশনা প্রদান করেছেন। তাছাড়া ওসি নিজেই প্রতিটি ব্যাংক কর্মকর্তার সাথে প্রতি মূহূর্তে যোগাযোগ রাখছেন বলে জানিয়েছেন।
উল্লেখ্য, বালিয়াকান্দিতে সোনালী, অগ্রণী, কৃষি, জনতা, পূবালী, ইসলামী, এনআরবিসি, আইএফআইসি ব্যাংক রয়েছে। এসকল কয়েকটি ব্যাংকের আবার দুটি করে শাখাও রয়েছে।