তিন দশক পর যশোরে শুরু হয়েছে লোকজ সাংস্কৃতিক উৎসব ও বৈশাখী মেলা।
শনিবার (১৩ এপ্রিল) বিকেলে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে শহরের টাউন হল ময়দানে মেলার উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার। দশ দিনব্যাপী এই মেলায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ও লোকজ সংস্কৃতিকে তুলে ধরার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
লোকজ সাংস্কৃতিক উৎসব ও বৈশাখী মেলা ১৪৩১’র সদস্য সচিব ও সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট যশোরের সাধারণ সম্পাদক সানোয়ার আলম খান দুলু বলেন, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট ও যশোর ইনস্টিটিউট যৌথভাবে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় ১০ দিনব্যাপী লোকজ সংস্কৃতি উৎসব ও বৈশাখী মেলা ১৪৩১ আয়োজন করেছে। সমগ্র আয়োজনে যশোরসহ জেলা ও উপজেলার মোট ১৩০টি সাংস্কৃতিক সংগঠন অংশগ্রহণ করবে। পরিচয়বাহী কবিগান, পটগান, গম্ভীরা, জারিগান, সঙ যাত্রা, লাঠিখেলা, সাপ খেলাসহ গ্রাম বাংলার লোকজ সংস্কৃতি ধারাবাহিকভাবে প্রদর্শিত হবে মেলায়।
তিনি আরও বলেন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিদিন বিকেল থেকে সমস্ত সংগঠনের শিশুদের নিয়ে শিশুতোষ আয়োজন থাকবে। আগামী প্রজন্মকে এগিয়ে নিয়ে যেতে এটি আমাদের বিশেষ উদ্যোগ। পাশাপাশি প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে যশোরের সর্বস্তরের সংস্কৃতিকর্মীরা অনুষ্ঠান উপস্থাপন করবেন।
লোকজ সাংস্কৃতিক উৎসব ও বৈশাখী মেলা ১৪৩১ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক স্থানীয় সরকার যশোরের উপপরিচালক রফিকুল হাসান জানান, টাউন হল ময়দানের এই বৈশাখী মেলায় ৬০টি স্টল রয়েছে। স্টলগুলোতে গ্রামবাংলার ঐতিহ্য ও লোকজ সংস্কৃতি ফুটে উঠেছে। ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন পণ্য সম্ভার স্টলগুলোতে স্থান পেয়েছে। যশোরের বরেণ্য ব্যক্তিদের নামে ‘প্যাভিলিয়ন’ এবং জেলার প্রয়াত সংস্কৃতিজনদেরও মেলায় নানা আঙ্গিকে সম্মান জানানো হবে।
সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট যশোরের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দীপংকর দাস রতন বলেন, বর্তমান প্রজন্ম বাংলার ইতিহাস ঐতিহ্য ভুলতে বসেছে। আধুনিক এই যুগে নাগরদোলা, লাঠি খেলা, মোরগের লড়াই, সাপ খেলা, বায়োস্কোপ, যাত্রাপালা, লোকজ উৎসব সম্পর্কে তরুণ প্রজন্মের কোনো ধারণা নেই। এই মেলার মধ্য দিয়ে তারা আনন্দ উপভোগের পাশাপাশি দেশীয় সাংস্কৃতিক সম্পর্কে জানতে পারবে।
আয়োজকরা জানিয়েছেন, তাদের জানামতে সর্বশেষ ১৪০১ বঙ্গাব্দে যশোরে সর্বশেষ বৈশাখী মেলা হয়েছে। এরপর এমন আয়োজন এই জেলায় আর হয়নি। সেই হিসেবে তিন দশক পর বৈশাখী মেলা উদযাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার নূরে-আলম সিদ্দিকী, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এস এম শাহীন, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তোফা ফরিদ আহমেদ চৌধুরী, যশোর ইনস্টিউটের সাধারণ সম্পাদক ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ লিটু, জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাহামুদ হাসান বুলুসহ সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।