মেহেরপুরে এক লিচুর দাম ৯ টাকা

, জাতীয়

মাজেদুল হক মানিক, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, মেহেরপুর | 2024-05-19 13:58:56

মেহেরপুরের হাট বাজারে পাওয়া যাচ্ছে টসটসে রসালো লিচু। স্বাদ আর মানে ভোক্তাদের কাছে অতুলনীয় এই লিচুর দামও এবার আকাশচুম্বী। চায়না থ্রি জাতের একটি লিচু বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৯ টাকা পর্যন্ত। তবুও ব্যবসায়ীরা বলছেন তারা লোকসানে পড়েছেন।

বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেহেরপুর জেলার লিচু বিক্রি হয় পণ হিসেবে। এক পণ সমান ৮০ পিস। এক পণ চায়না থ্রি বা আতা বোম্বাই জাতের লিচুর দাম ৬৫০-৭০০ টাকা পর্যন্ত। যার প্রতি পিসের দাম প্রায় ৯ টাকা। অভিযোগ রয়েছে, বেশি দর পেতে অনেক ব্যবসায়ী অপরিপক্ক লিচু সংগ্রহ করে বিক্রি করছেন।

গাংনী বাজারের লিচু ব্যবসায়ী আলফাজ উদ্দীন জানান, চায়না থ্রি জাতের লিচু স্থানীয়ভাবে আতা বোম্বাই হিসেবেও পরিচিত। অন্যান্য জাতের লিচুর চেয়ে এ জাতের লিচুর আকার বেশ বড় এবং আঁটি ছোট। লিচুর খোসা ছাড়ানোর পর এর শাস অনেক বেশি পরিমাণে পাওয়া যায়। অন্যদিকে এর স্বাদও ভিন্ন। তাই এই লিচুর কদর সবচেয়ে বেশি। তবে এ মৌসুমে খুব সামান্য পরিমাণ লিচুর জোগান থাকায় এর দাম বেড়েছে কয়েকগুণ।


ক্রেতারা জানান, মৌসুমি ফল লিচুর প্রতি অন্যরকম এক আকষর্ণ থাকে মানুষের। তাই দামের বিষয়টা খুব বেশি পাত্তা দেন না সামর্থ্যবান ক্রেতারা। বাজারে আতা বোম্বাই লিচু কম থাকায় আকর্ষণ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

অভিযোগ রয়েছে, বেশি দাম পেতে অনেক ব্যবসায়ী কোনো কোনো ক্ষেত্রে অপরিপক্ক লিচু সংগ্রহ করছেন। ফলে এর স্বাদ ও পুষ্টিগুণ পরিবর্তন হচ্ছে। চাহিদার তুলনায় লিচুর সরবরাহ কম থাকায় ভোক্তাদের অনেকেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন লিচুর স্বাদ নিতে।

জেলার বিভিন্ন হাট বাজারে পাওয়া যাচ্ছে আঁটি, বোম্বাই ও আতা বোম্বাইসহ বিভিন্ন জাতের লিচু। এর মধ্যে আঁটি ও বোম্বাই লিচুর দাম একটু কম। প্রতি পণ আঁটি ১৮০ টাকায় পাওযা যাচ্ছে। অন্যদিকে বোম্বাই লিুচর দাম আঁটির থেকে আর একটু বেশি। প্রতি পণ বিক্রি হচ্ছে ২০০-২৪০ টাকা পর্যন্ত।

বাগান মালিকরা জানান, চলতি মৌসুমে অতি তীব্র তাপ প্রবাহের কবলে পড়েছে ফল বাগান। এবছর লিচুর বাগানগুলোতে ছিল না কাঙ্খিত পরিমাণ মুকুল। অন্যদিকে রোদের কবলে বাগানেই নষ্ট হয়েছে অনেক লিচু এবং আকারেও বেশ ছোট এবারের লিচু। এতে বাগান মালিক ও ব্যবসায়ীরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন।


ব্যবসায়ীরা জানান, মুকুল আসার সময় থেকেই মূলত বাগানের ফল বিক্রি শুরু হয়। ব্যবসায়ীরা পুরো বাগানের লিচু কিনে ফেলেন আগে থেকেই। একটি বাগানে কি পরিমাণ ফল পাওয়া যেতে পারে তার আনুমানিক হিসেবেই মূলত কেনাবেচা হয়।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক বিজয় কৃষ্ণ বলেন, এ জেলার লিচু স্বাদ ও মানে অতুলনীয়। ফলে সারা দেশেই মেহেরপুর জেলার লিচুর কদর রয়েছে। এ অবস্থান ধরে রাখতে অপরিপক্ক লিচু সংগ্রহ থেকে বিরত থাকার জন্য ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকদের পরামর্শ দিলেন তিনি।

এ সম্পর্কিত আরও খবর