একজন চিকিৎসক দিয়েই চলছে রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

, জাতীয়

আমিনুল ইসলাম খন্দকার, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বান্দরবান | 2024-05-26 21:10:57

ম্যালেরিয়া, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি সেই সাথে যুক্ত হয়েছে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) বিরুদ্ধে যৌথ বাহিনীর অভিযান। যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে হতাহত হওয়ার সম্ভাবনা আছে, তাই প্রয়োজন অতিরিক্ত চিকিৎসকের। ৭ জন চিকিৎসকের পদ থাকলেও হাসপাতালে কর্মরত আছেন মাত্র একজন। প্রতিদিন প্রায় ৬০-৬৫ জন বহির্বিভাগে সেবা নিচ্ছে, এই সপ্তাহে প্রায় সবসময় ১৫ জনের মত ভর্তি রোগী ছিলো হাসপাতালটিতে।

ডাক্টার মোহাম্মদ মোস্তফা রুবেল নামের ওই কর্মকর্তাকে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে। একা সেবা দিতে গিয়ে নিজেও শারীরিক এবং মানসিক ভাবে ক্লান্ত। এই চিত্র বান্দরবানের রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের।

জানা যায়, উপজেলায় প্রায় ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ বাস করে। প্রত্যন্ত এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আরো অধিকতর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করতে ১০ শয্যাবিশিষ্ট রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ করে সরকার। নানাবিধ সমস্যায় জর্জরিত এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক সংকট, হাসপাতালের প্যাথলজি, এক্সরে, আল্ট্রাসনোগ্রাফি, ওষুধসহ কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে দুর্গম পাহাড়ের বাসিন্দারা। এতে করে এই এলাকার মানুষজন সেবা পেতে অনেক সমস্যা হচ্ছে।

এই উপজেলায় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কেন্দ্র মিলিয়ে ৭ জন চিকিৎসকের পদ রয়েছে। যার মধ্যে শূণ্য পদ রয়েছে ২ টি। কিন্তু বাকী ৫টি পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন শুধুমাত্র ১ জন। বাকী ৪ জন বিভিন্ন সুবিধাজনক জায়গায় প্রেষণে কাজ করছেন।

সর্বশেষ প্রেষণে যাওয়া রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডাক্টার গুনিজন চৌধুরির সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বার্তা২৪.কম-কে বলেন, আমি ৪ বছর যাবৎ পার্বত্য এলাকায় কাজ করেছি, যার মধ্যে ২ বছর রুমা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে কর্মরত ছিলাম। দূর্গম এলাকা হওয়ায় এই কর্মস্থল ও এলাকায় প্রতি আমার অনেক টান আছে আরো ১ মাস আগেই আমার ট্রেনিং পোস্টের কারনে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে যোগাদান করার কথা। উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুরোধে ও পরিস্থিতি বিবেচনায় যাওয়া হয়নি। আমি রিলিজ নিয়ে আসার সময় উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বলে এসেছি দূর্গম এলাকা হিসেবে এই হাসপাতালে অন্তত ৩ জন চিকিৎসক নিয়মিত রাখার ব্যবস্থা করতে।

বর্তমানে কর্মরত উপজেলার মেডিকেল অফিসার ডাক্তার মোস্তফা রুবেল বার্তা২৪.কম-কে বলেন, তিনি নিজে চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রায় ২ সপ্তাহ ধরে। উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা বিষয়টি দেখবেন। তাছাড়া এই বিষয়ে আর বিস্তারিত কোন মন্তব্য করতে রাজী হননি তিনি।

উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আবদুল্লাহ আল হাসান বার্তা২৪.কম-কে বলেন, ৪ জন ডাক্তার প্রেষণে আছেন। আরও একজন চলে যাচ্ছেন। সর্বশেষ একজন থাকছেন ডাক্তার। আমি সিভিল সার্জনকে বলেছি বিষয়টি। তবে আরেকজন ডাক্তার বান্দরবান সদর হাসপাতালে সংযুক্ত ছিলেন, দুই তিনদিনের মধ্যেই তাকে সেখানে থেকে সংযুক্তি বাদ দিয়ে রুমা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ফেরত আনা হবে। তাহলে রুমায় দু'জনই থাকবেন ডাক্তার। তবে ৫ জন ডাক্তার সবসময় থাকলে সঠিকভাবে সেবা প্রদান করা যাবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর