আমতলীতে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধে ভাঙন, তলিয়ে গেছে ৩ গ্রাম

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরগুনা | 2024-05-26 21:34:55

ঘূর্ণিঝড় রিমলের প্রভাবে বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বরগুনার আমতলী উপজেলার আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বালিয়াতলী গ্রামে নির্মাণাধীন একটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গেছে। এতে পানিতে তলিয়ে গেছে ওই ইউনিয়নের তিনটি গ্রাম।

রবিবার (২৬ মে) দুপুরে পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ ফুট উচ্চে পানি প্রবাহিত হওয়ায় উপকূলীয় এলাকাসহ আমতলীর নিম্নাঞ্চল প্লাবিত এবং আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বালিয়াতলীতে পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীর তীর ঘেষে নির্মাণাধীন বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৪০ মিটার ভেঙে ৩টি গ্রাম বালিয়াতলী, উত্তর ঘোপখালী ও পশুরবুনিয়া গ্রাম তলিয়ে গেছে।

পানিতে ওই তিন গ্রামের মানুষের ঘর-বাড়ি ও পুকুর তলিয়ে ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হওয়ার পাশাপাশি দুই শতাধিক পরিবারের ঘর-বাড়ি পানির নিচে থাকায় তাঁরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আশরাফুল আলম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারেক হাসান ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ জামাল হুসাইন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।

এদিকে ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় উপজেলা প্রশাসন ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছে। সন্ধ্যা পর্যন্ত উপজেলার আশ্রয় কেন্দ্রগুলোতে মানুষজন তেমন যায়নি বলে জানায় ঘূর্ণিঝড় রিমালে কাজ করা কয়েকটি সেচ্ছাসেবী সংগঠনের কর্মীরা।

বঙ্গোপসাগর তৎসংলগ্ন পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীতে স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৩ ফুট পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে।

বালিয়াতলী গ্রামের শহিদুল ইসলাম, খবির উদ্দিন, সাহেদা ও হোসনেআরা বেগম বলেন, নতুনভাবে নির্মাণ করা বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে পানিতে ঘর-বাড়ী, পুকরসহ সবকিছুই তলিয়ে গেছে। তারা আজ দুপুরে রান্না পর্যন্ত করতে পারেননি। ভাটায় পানি নেমে যাওয়ার পরে রান্না করে তারপর তারা খাবার খেয়েছেন। তাদের অভিযোগ দায়সারাভাবে বাঁধ নির্মাণ করে আবার তা অল্প দিনের মধ্যেই নদীতে ভেঙে যায়।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডেও নির্বাহী প্রকৌশলী মো. রাকিব বলেন, বেশ কিছু জায়গায় বেড়িবাঁধে ভাঙনের খবর পেয়েছি ভাঙন রোধে তাৎক্ষনিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অধিক জোয়ার ও বৃষ্টিতে যে সকল এলাকার বেড়িবাধের নাজুক অবস্থা তৈরি হয়েছে সেই এলাকাগুলোতে নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। তাৎক্ষনিকভাবে ভাঙনের হাত থেকে উপকূলবাসীকে রক্ষা করতে জরুরী মেরামতে অংশ হিসেবে ৮০০ জিও ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

আমতলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আফরাফুল আলম বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় যথেষ্ট প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। ১০১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পায়রা (বুড়িশ্বর) নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে আরপাঙ্গাশিয়া ইউনিয়নের বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভাঙে গেছে। ভাঙা এলাকা পরিদর্শন করেছি। বন্যা নিয়ন্ত্রন বাঁধের বাহিরে বসবাসরত মানুষকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসতে কাজ করছি ও বিভিন্ন ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর