নওগাঁয় কোরবানির জন্য প্রস্তুত ৭ লক্ষাধিক পশু

, জাতীয়

শহিদুল ইসলাম, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, নওগাঁ | 2024-05-27 17:00:08

নওগাঁয় ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে কোরবানির জন্য ৭ লাখেরও বেশি গবাদিপশু প্রস্তুত করেছেন প্রান্তিক কৃষক ও খামারিরা। চাহিদার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ হওয়ার কারণে জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলাতে বিক্রির জন্য চলে যাবে এসব পশু। নওগাঁয় এবার অন্তত ২ হাজার ১১ কোটি ১৫ লাখ টাকার বেশি পশু বিক্রির আশা করছে প্রাণিসম্পদ বিভাগ।

নওগাঁ জেলায় কোরবানির পশুর চাহিদা ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৭৫৯টি। এই চাহিদা মিটিয়ে ৩ লাখ ৪৯ হাজার ৭৫৯টি পশু বিভিন্ন জেলায় বিক্রির জন্য চলে যাবে। জেলায় এবছর স্থায়ী ও অস্থায়ী প্রায় ৪০টি হাটে কোরবানির পশু বেচা কেনা হবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের তথ্যমতে, জেলার ১১টি উপজেলায় ৩৪ হাজারের বেশি ছোট-বড় খামারি ও কৃষক ৭ লাখ ২৮ হাজার ১১০টি বিভিন্ন জাতের গরু, মহিষ, ছাগল এবং ভেড়া পালন করছেন। এর মধ্যে ষাঁড় ৯১ হাজার ৪৭টি, বলদ ২৯ হাজার ১১১টি, গাভী ৬৫ হাজার ৬৮টি, মহিষ ২ হাজার ৪০৩টি, ছাগল ৪ লাখ ৬৪ হাজার ৯২৯টি ও ভেড়া ৭৫ হাজার ৫৫২টি।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে প্রতিটি খামারেই ব্যস্ত সময় পার করছেন মালিক-কর্মচারীরা। গরুকে নিয়মিত গোসল করানো, সময় মতো খাবার দেওয়া, ঘর পরিষ্কারসহ বিভিন্ন কাজ করছেন তারা। কোনো রকম ক্ষতিকর রাসায়নিক প্রক্রিয়া ছাড়াই প্রাকৃতিক খাবার খাইয়ে পশু মোটাতাজাকরণে নিচ্ছেন বাড়তি যত্ন যাতে করে ভালো দামে বিক্রি করতে পারেন। তবে এবছর গো-খাদ্যের লাগামহীন দাম বৃদ্ধিতে গরু লালন-পালনে খরচ বেড়েছে কয়েকগুণ। ফলে দাম কিছুটা বাড়তে পারে। এছাড়াও ভালো দামে গরু বিক্রি করতে পারবে কি না তা নিয়েও রয়েছে দুচিন্তা। পাশাপাশি সীমান্তবর্তী জেলা হওযায় সীমান্ত পথে অবৈধভাবে গরু প্রবেশও ভাবিয়ে তুলছে খামারিদের।


নওগাঁ এলাকার খামারি আজিজ বলেন, এবার গোখাদ্যের দাম বেশি তাই গবাদিপশু পালনে খরচ বেড়েছে। প্রতিবছর কোরবানি উপলক্ষে ৩৫ থেকে ৪০টি গরু প্রস্তুত করা হলেও এবছর ২৫টি মতো গরু প্রস্তুত করা হয়েছে। এছাড়াও এসব গরু দেখাশুনার জন্য কাজের মানুষ রাখা হয়েছে। সব মিলিয়ে এবছর গরু লালন-পালনে খরচ অনেক বেশি। এজন্য স্বভাবিকভাবেই গরুর দাম বেশি হওয়ার কথা।

তিনি আরও বলেন- নওগাঁ সীমান্তবর্তী জেলা। তাই একটা ভয় থেকেই যায় ভারতীয় গরু প্রবেশের। সীমান্ত দিয়ে গরু প্রবেশ করলে খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। তার আশা সীমান্ত দিয়ে ভারতীয় পশু না ঢুকলে কিছুটা ভালো দাম পাওয়া যাবে। এজন্য প্রশাসনের কঠোর নজরদারি দাবি করেন তিনি।

বরুণকান্দি এলাকার খামারি লুৎফর রহমান বলেন, তার খামারে ১৫টি গরু আছে। ১৫টি গরুই কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। প্রাকৃতিক সবুজ ঘাস ও দানাদার খাবার দিয়ে লালন-পালন করা হচ্ছে। প্রতিদিন গরুকে গোসল, খাবার ও পরিচর্যা করা হয়। দিনে ২ বার গোসল করানো হয়। তবে এ বছর দানাদার খাবারের দাম বেশি হওয়ায় পশু লালন-পালন করতে খরচ পড়েছে বেশি। গত বছরের তুলনায় দানাদার খাবারের দাম প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। এখন দাম ভালো পেলে লাভবান হওয়া সম্ভব। নাহলে খামারিদের লোকসান হবে।

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. আবু তালেব বার্তা২৪.কমকে বলেন, এবার নওগাঁয় ৭ লাখ ২৮ হাজারের বেশি পশু প্রস্তত করা হয়েছে। চাহিদা রয়েছে ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৭৫৯টি। উদ্বৃত্ত পশু বিভিন্ন জেলায় বিক্রি হয়ে থাকবে। এবার অন্তত ২ হাজার ১১ কোটি ১৫ লাখ টাকার বেশি পশু বিক্রির আশা করা হচ্ছে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর