২০১৮ সালে কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে দেওয়া রায়ের মূল অংশ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট।
রায়ে বলা হয়েছে, সরকার চাইলে কোটা পদ্ধতির পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করতে পারবে। কোটা পূরণ না হলে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ দিতে পারবে।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় প্রকাশ করেন।
কোটা বাতিল করা হাইকোর্টের আলোচিত রায়ের আংশিক প্রকাশ করা হয়েছে জানিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের ডেপুর্টি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ (সাইফুজ্জামান) বলেন, মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের আংশিক প্রকাশ করা হয়েছে। রায়ের অনুলিপি ডেসপাস শাখা আছে।
তিনি জানান, আদালত রায়ে বলেছেন, সরকার প্রয়োজন মনে করলে কোটার শতকরা হার বাড়াতে বা কমাতে পারবে। কোন সরকারি নিয়োগ পরীক্ষায় যদি কোটা থেকে চাকরিপ্রার্থী না পাওয়া যায়, তাহলে সরকার সাধারণ মেধা তালিকা থেকে তা পূরণ করতে পারবে।
২০১৮ সালে সরকার প্রথম শ্রেণি ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে বিদ্যমান কোটা পদ্ধতি বাতিল করে পরিপত্র জারি করে।
আদালতে এ আদেশকে চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট দায়ের করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাত শিক্ষার্থী। ওই বছরের ৭ ডিসেম্বর হাইকোর্ট রুল জারি করেন। গত ৫ জুলাই রুলের চূড়ান্ত শুনানি এ রায় দেন হাইকোর্ট।
হাইকোর্টের এ রায়ের পর কোটাবিরোধী আন্দোলন শুরু হয়। রায় স্থগিত চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করে রাষ্ট্রপক্ষ। ৯ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিক সমিতির সভাপতি আল সাদী ভূঁইয়া এবং উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী আহনাফ সাঈদ খান চেম্বার কোর্টের অনুমতি নিয়ে একটি সিএমপি আবেদন করেন। ওইদিনই আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে সেই আবেদনের শুনানির জন্য বুধবার দিন ধার্য করেন আদালত।
১০ জুলাই বুধবার শুনানি শেষে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিষয়ে চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা দেন প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের আপিল বেঞ্চ। আগামী ৭ আগস্ট এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে।
বুধবার (১০ জুলাই) হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের ওপর একমাসের স্থিতাবস্থা দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। কোটাবিরোধী ছাত্ররা তা অগ্রাহ্য করে কোটা সম্পূর্ণরুপে বাতিলের দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে।