দেশের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় কোটার প্রয়োজন আছে: কাদের

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম | 2024-07-13 14:56:57

দেশের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতায় কোটার প্রয়োজন আছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।

শনিবার (১৩ জুলাই) রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

সেতুমন্ত্রী বলেন, কোটা বিরোধী আন্দোলনকারীদের দাবি ও অনেক বক্তব্য আমাদের সংবিধানের, সাংবিধানিক রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি বিরোধী। সাংবিধানিক রাষ্ট্র পরিচালনায় সরকারি আলোকেই হবে, কাজেই রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্য প্রণোদিত হতে শিক্ষার্থীদের একটি অংশের দাবির প্রেক্ষিতে পরিণত হতে পারে, কারণ উচ্চ আদালতের নির্দেশনা পবিত্র সংবিধানের আলোকেই কেবলমাত্র রাষ্ট্র পরিচালনা হয়।

কাদের বলেন, রাষ্ট্র পরিচালনা সম্পর্কিত সংবিধানের ১৯ অনুচ্ছেদে সকল নাগরিকের সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করবে রাষ্ট্র। সেখানে আরও বলা হয়ছে, মানুষে মানুষের সামাজিক অর্থনৈতিক অসাম্য নিরোধের জন্য নাগরিকদের মধ্যে সুষম বন্টন নিশ্চিত করার জন্য এবং প্রজাতন্ত্রের সর্বত্র অর্থনৈতিক উন্নয়নে সমান সুযোগ সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

জাতীয় জীবনের সর্বক্ষেত্রে নারীদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে উল্লেখ করে কাদের বলেন, অথচ গত কয়েক বছরে সরকারি চাকরিতে মেয়েদের অন্তর্ভুক্তি হতাশাজনকভাবে কমেছে। কোটা না থাকায় পুলিশে মাত্র চারজন নারী অফিসার সুযোগ পেয়েছে, ফরেন সার্ভিসে সুযোগ পেয়েছে দুজন মাত্র। ৫০টি জেলায় নারীরা ক্যাডার সার্ভিসে যোগদানের সুযোগ পায়নি। ২৩টি জেলায় একজনও পুলিশে চাকরি পায়নি। সংবিধানের উল্লেখিত বিধানের উদ্দেশ্য হচ্ছে যাতে সরকারি চাকরিসহ সকল ক্ষেত্র সবাই যেন সমানভাগে সুযোগ পায় রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে। সেজন্যই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

তিনি বলেন, বিসিএস পরীক্ষা নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধা তালিকায় নিযোগ প্রায় ৭০ শতাংশের মত, ৩৩, ৩৪, ৩৫ এই তিনটি বিসিএসে ৭২ শতাংশ প্রার্থীকে মেধার ভিক্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, যেখানে কোটায় নিয়োগ পেয়েছে ২৮ শতাংশ। শূন্য পদগুলোতে মেধা তালিকা থেকে নেওয়া হয়েছে। কোটায় প্রার্থী না পাওয়া গেলে যেখানে মেধা তালিকা থেকে পূরণ করা হচ্ছে সেখানে আন্দোলনের যৌক্তিকতা নেই।

দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশেই কোটার ভিত্তিতে সবচেয়ে কম নিয়োগ দেওয়া হয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বর্তমানে ভারতে ৬০ শতাংশ কোটা, পাকিস্তানে ৯২.৫ শতাংশ, নেপালে ৪৫ শতাংশ , শ্রীলঙ্কায় ৫০ শতাংশ। এই পরিসংখ্যান থেকে দেখা যায় আমাদের আর্থ সামাজিক বাস্তবতায় কোটার প্রয়োজন আছে। বিদ্যমান অন্তর্ভুক্তি এটা যৌক্তিক।

তিনি বলেন, কোমলমতি শিক্ষার্থীদের পুঁজি করে একটি কুচক্রী মহল, রাষ্ট্রকে অস্থির করার ষড়যন্ত্র করছে। এই অশুভ শক্তি এর আগেও আমাদের কাছে তথ্য আছে, ২০১৮ সালে যখন কোটাবিরোধী আন্দোলন হয়, তখন এই রাজনৈতিকভাবে পরাজিত অশুভ শক্তি কোটার ওপর ভর করেছিল এবং সড়কে যে আন্দোলনে ভর করে রাজনৈতিক রূপ নেওয়ার ষড়যন্ত্র করেছে। তখন এই অশুভ শক্তির হাতে আমাদের ধানমন্ডি পার্টি অফিসও আক্রন্ত হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, ঐ মহলটি রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ অকার্যকর করার জন্য এবং ইতিহাস ঐতিহ্যের প্রতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরূপ মনোভাব তৈরির ক্ষেত্র প্রস্তুতের চেষ্টা করেছিল।

আমরা তারুণ্যের শক্তিতে আস্থা রাখি আমরা বিশ্বাস করি তারুণ্যের সবাইকে নিয়ে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়তে সমান সুযোগ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণ করবে।

সংবিধানের বিরুদ্ধে বা আদালতের বিরুদ্ধে যাওয়ায় আওয়ামী লীগ কোন ব্যবস্থা নিবে কি না এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর