গাইবান্ধায় হঠাৎ একাধিক নগদ ও বিকাশ একাউন্টে ঢুকছে টাকা। কোথায় থেকে, কে বা কারা এসব টাকা পাঠাচ্ছে জানা নেই মোবাইল ব্যবহারকারীদের। মোবাইলে হঠাৎ এভাবে টাকা আসার ঘটনায় কেউ কেউ উল্লাসিত হলেও উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন বেশিরভাগ সচেতন ব্যবহারকারীরা। টাকা পাঠানো ওই সকল নম্বরে কল করেও কাউকে পাওয়া যাচ্ছে না।
গাইবান্ধা সদর উপজেলার রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের আকন্দ পাড়ায় সরেজমিনে জানা যায়, মোবাইলে ব্যাংকিং নগদ ও বিকাশ একাউন্টধারী ব্যবহারকারীর অন্তত ১২ জনের মোবাইলে এসেছে এক হাজার ৫০০ টাকা করে। এসব টাকা গত ৬ তারিখ থেকে বিভিন্ন সময়ে তাদের নদগ ও বিকাশে আসতে থাকে। যে টাকা খরচও করেছেন কেউ কেউ। তবে, টাকা পেয়ে কেউ কেউ উল্লাসিত হয়ে খরচ করলেও অনেকেই হঠাৎ এমনভাবে টাকা আসার ঘটনায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন।
এ সময় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই এলাকার এক যুবক জানান, "গত ৬ জুলাই আমার বিকাশ একাউন্টে ১৫০০ টাকা আসে। আমি ভেবেছিলাম কেউ পাঠাইছে হয়তো, পরে জানাবে। কিন্তু আজ পর্যন্ত কেউ যোগাযোগ করেনি। আমি টাকা তুলে খরচও করেছি"। এ সময় ওই যুবক আরো বলেন, টাকা পাঠানো নম্বরে ফোন দিয়েছিলাম। কল ঢুকেনি।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে ওই এলাকার অপর একজন জানান, "আমার নগদ একাউন্টে হঠাৎ করে দেড় হাজার টাকা আসে। আমার সাথে টাকা লেনদেন করে এমন ব্যক্তিদের সাথে আমি যোগাযোগ করেছি, তাদের কেউ পাঠায়নি বলে নিশ্চিত হয়েছি।
পরে হঠাৎ এক সপ্তাহ পড়ে জানতে পারি শুধু আমার না, এই এলাকার অন্তত ১০ থেকে ১৫ জনের মোবাইলে এই টাকা এসেছে। কিন্তু কার টাকা, কিসের টাকা আর কেনইবা এভাবে আমাদের মোবাইলে আসলো বিষয়টি নিয়ে আমি উদ্বিগ্ন।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন মোবাইল ফোনে বলেন, যদি বিকাশে এসব টাকা আসে তাহলে এটা নিশ্চিত যে, ওই টাকা সমাজসেবার নয়। কারণ, গাইবান্ধায় সকল ভাতার টাকা নগদে দেওয়া হয়, বিকাশে নয়।
এ ব্যাপারে গাইবান্ধার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা উম্মে কুলসুম বলেন, ওই ভাবে এ বছর আমাদের অফিস থেকে কোনো টাকা কৃষকদের দেওয়া হয়নি।
এ বিষয়ে সদর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা আবু সাঈদ বলেন " আমরা মার্তৃকালীন একটা ভাতা দিয়ে থাকি। সেটি প্রতিমাসে ৮০০ টাকা করে। কিন্তু এভাবে সবার একাউন্টে যাবে এমনটা নয়।
এ বিষয়ে গাইবান্ধার সহকারী পুলিশ সুপার (বি সার্কেল) আব্দুল্লাহ আল মামুন মুঠোফোনে বার্তা২৪.কমকে বলেন, " আসলে এসব বিষয়ে তদন্ত না করে কিছু বলা মুশকিল। তবে তিনি জানান, এরকম ব্যাপারে প্রতারক চক্র হতে সবাইকে সাবধান থাকতে হবে। কারণ তারা এভাবে টাকা পাঠিয়ে পরে কোনো এক নম্বরে ফোন করে প্রতারণার ফাঁদ পাততে পারে। এ সময় প্রলোভনে পরে যাতে কেউ ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এজন্য সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন তিনি।