দিন দিন ঝুঁকির মুখে পড়ছে দেশের সাংবাদিকতা। পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে সাংবাদিকরা প্রায় সন্ত্রাসীদের মারধর ও হুমকির শিকার হচ্ছেন। আন্দোলন এলেই বেশি হামলার শিকার হন তারা।
চলমান কোটা সংস্কার আন্দোলনে সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে রোষানলে পড়ছেন দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকগণ। পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় পুলিশ, ছাত্রলীগ ও শিক্ষার্থীদের ত্রিমুখী হামলায় রোষানলে পড়ে এখন পর্যন্ত সারাদেশে বেশ কয়েকেজন সাংবাদিক হামলার শিকার হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। তাদের মধ্যে কয়েকজনকে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। এছাড়া গণমাধ্যমের ক্যামেরা, গাড়ি ভাঙচুর করার খবরও পাওয়া গেছে।
বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সয়বাদ ও সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ১৫ জুলাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮ জন সাংবাদিক আহত হন, ১৬ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আহত হন ৬ জন। এছাড়াও কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, দিনাজপুর ও বগুড়ায় আরও ১২ জন সাংবাদিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এদিকে বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, বুধবার (১৭ জুলাই) এবং বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে সারাদেশে প্রিন্ট, অনলাইন, ডিজিটাল ও ব্রডকাস্ট মাধ্যমের ২৫জন সাংবাদিক হামলার শিকার হয়েছেন।
আন্দোলনের শুরু থেকেই বস্তুনিষ্ট ও নিরপেক্ষ সংবাদ সংগ্রহ করে আসছেন মাল্টিমিডিয়া নিউজপোর্টাল বার্তা২৪.কম-এর সাংবাদিক খন্দকার আসিফুজ্জান। প্রতিদিনের মতো তিনি বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) সংবাদ সংগ্রহ করতে বের হন। রামপুরা বনশ্রী ইউলুপের মুখে শিক্ষার্থীদের সাক্ষাৎকার নেওয়ার সময় পিছন থেকে কয়েকজন শিক্ষার্থী তাকে দালাল সাংবাদিক বলে ব্যাপক মারধর করে। পরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা তাকে উদ্ধার করে বনশ্রীর ফরাজী হাসপাতালে নিয়ে যায়।
সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সাংবাদিকদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)। বুধবার (১৭ জুলাই) বিএফইউজের সভাপতি ওমর ফারুক ও মহাসচিব দীপ আজাদ এক বিবৃতিতে এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, আন্দোলন কর্মসূচির সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে গত কয়েক দিনে দেশের নানা স্থানে সাংবাদিকরা হামলার শিকার হচ্ছেন। গণমাধ্যমের ক্যামেরা, গাড়ি ভাঙচুর করা হচ্ছে। পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকদের হামলার শিকার হওয়া কোনোভাবেই সাংবাদিক সমাজ মেনে নেবে না। এসব ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তারা। সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার পূর্বক বিচারের দাবি জানানো হয়।
দেশে সাংবাদিকদের সুরক্ষায় বিশেষ কোনো আইন নেই। সাংবাদিকদের ওপর হামলা কমানোর জন্য সরকার ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং সাংবাদিকের সংগঠনগুলোকে এগিয়ে আসতে হবে। সাংবাদিকদের অধিকার আদায় ও তাদের রক্ষার জন্য এগিয়ে আসতে হবে।