কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে যে সংঘর্ষ হয়েছে, তার অন্যতম হটস্পট ছিল রামপুরা ও বাড্ডা সড়ক।
বুধবার (১৭ জুলাই) থেকে শনিবার (২১ জুলাই) পর্যন্ত রণক্ষেত্রে পরিণত হয় এই সড়ক।
দফায় দফায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ বাঁধে। এসময় সড়কের পাশে থাকা ফুটপাতে হকারদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে অনেক ক্ষতি হয়েছে বলে জানায় এলাকাবাসী। সংঘর্ষ ও সহিংসতা শেষে জনজীবন স্বাভাবিক হলেও আগের সড়কের পাশের ফুটপাত হকারশূন্য রামপুরা ও বাড্ডা এলাকার প্রধান সড়ক।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত রামপুরা বাজার থেকে বাড্ডা এলাকার সড়ক ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
এলাকাবাসী ও ব্যবসায়ীরা বলছেন, সংঘাত শেষ হয়ে জনজীবন স্বাভাবিক হলেও অনেক হকার ও ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা আতঙ্কে বসছেন না। এতে ফুটপাতে চলাচলকারী পথচারীরা যেমন নির্বিঘ্নে যাতায়াত করছেন তেমনি দোকানিদের স্বস্তি প্রকাশ করতে দেখা যায়।
রামপুরা মোল্লা টাওয়ায়ের সামনের মোবাইল ব্যবসায়ী আকবর হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, আন্দোলনের সময় গত বৃহস্পতিবার (১৮ জুলাই) অনেক ফুটপাতের ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ শুরু হলে অনেকে নিরাপদ জায়গায় চলে গেলে তাদের মাচা ও চকিতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। অনেকে ভয়ে নিজ নিজ জেলা চলে গেছেন বলে শোনা যাচ্ছে।
একই কথা বলেছেন, রামপুরা বাজারে অবস্থিত বাটা শোরুমের কর্মচারী মোজাম্মেল হোসেন।
মোজাম্মেল হোসেন বার্তা২৪.কমকে বলেন, আমাদের এই শোরুমের সামনে সাতটা ছোট ছোট মাচার দোকানি ছিল। সংঘর্ষের পর থেকে কারফিউ চলায় আমাদের শোরুম বন্ধ ছিল। বুধবার (২৪ জুলাই) থেকে শোরুম খোলার পর থেকে কাউকে দেখছি না। সড়কের ফুটপাত যেখানে আগে থাকতো হকারদের দখলে, সেই হকাররা না থাকায় নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারছেন সাধারণ পথচারীরা।
মেরুল বাড্ডা এলাকায় ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের ফুটপাত দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন আল-আমিন। বার্তা২৪.কমকে আল-আমিন বলেন, বুধবার কারফিউ শিথিল হওয়ায় পর থেকে এই সড়কের দুই পাশে ফুটপাতে কোনো হকার নেই। গতকাল কেউ না বসলেও আজকে গুটি কয়েকজন বসেছেন। ফুটপাতে হকার না থাকায় নির্বিঘ্নে হাঁটাচলা করা যাচ্ছে।
এদিকে, কোটা সংস্কার আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এই সড়কে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ব্যাপক সংঘর্ষ হয় গত সপ্তাহের বুধ ও বৃহস্পতিবার। এই সংঘর্ষে কয়েকজন শিক্ষার্থী নিহতের খবর পাওয়া যায়।
একপর্যায়ে পরেরদিন শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করলে ফের সংঘর্ষ বাঁধে।