বরিশালে পুলিশ ভ্যানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর, আহত ২

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, বরিশাল | 2024-08-03 17:15:48

বরিশাল নগরীর চৌমাথা এলাকায় শনিবার (৩ আগষ্ট) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশের একটি ভ্যান উল্টে ফেলে ব্যাপক ভাঙচুর করেছে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। একইসময় সেখানে অবস্থিত বীর মুক্তিযোদ্ধা সুলতান মৃধা পুলিশ বক্স ভাঙচুর করা হয়েছে। হামলায় দুইজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

সূত্রমতে, সারাদেশে ছাত্র-নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা ও হত্যার প্রতিবাদ এবং নয় দফা দাবিতে শিক্ষার্থীরা বেলা ১১টা থেকে বিএম কলেজের মসজিদ গেটে জড়ো হতে থাকে। পরে সেখান থেকে মিছিল সহকারে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় এসে শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের দুইপাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। অবরোধ চলাকালীন এক ছাত্রলীগ কর্মীকে শিক্ষার্থীরা ধাওয়া করে মারধর করেন। ঘণ্টাব্যাপী বৃষ্টির মধ্যে সড়কে বসে আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ করেন। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীরা সিএন্ডবি সড়কের দিকে চলে যায়।

সূত্রে জানা গেছে, শত শত আন্দোলনরত শিক্ষার্থী ও তাদের সাথে থাকা বেশ কিছু অভিভাবকরা বৃষ্টি উপেক্ষা করে মিছিল সহকারে নগরীর চৌমাথা এলাকার সড়ক অবরোধ করে। একপর্যায়ে বিক্ষুব্ধ আন্দোলনকারীরা চৌমাথা এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. সুলতান মৃধা পুলিশ বক্সে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করে। একইসময় পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান ভাঙচুর করা হয়। হামলায় দুই পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. ফারুক হোসেন জানান, শিক্ষার্থীদের হামলায় আহতদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি পুলিশের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।

ববি’র ৩৫ শিক্ষকের বিবৃতি: দেশে চলমান শিক্ষার্থী নিপীড়ন ও হয়রানির প্রতিবাদে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষক সমাজের পক্ষ থেকে বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার রাতে দেওয়া ওই বিবৃতিতে প্রতিবাদ ও নিন্দা জ্ঞাপন করেছেন ৩৫ জন শিক্ষক। তবে দুইজন শিক্ষক প্রতিবাদ লিপিতে স্বাক্ষর করে একাত্মতা প্রকাশ করলেও পরে তারা সরে যান।

বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষকরা বলেন, গত ১৫ জুলাই থেকে দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে এবং পরে দেশের সর্বত্র বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজের ওপর হত্যা, নিপীড়ন ও নির্যাতনের নজিরবিহীন ঘটনা ঘটছে। এযাবৎ অন্তত দুইশতাধিক মৃত্যুর খবর দেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম কর্তৃক নিশ্চিত করা হয়েছে। গুলিতে ও আঘাতে অনেকে ইতোমধ্যে চোখ হারিয়েছেন এবং পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন। দেশের ইতিহাসে এমন ছাত্রহত্যা ও ছাত্রনিপীড়নের ঘটনা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ব্যতীত কোনো সময়ে এমনকি কোনো সামরিক সরকারের সময়েও ঘটার নজির নেই।

বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়েও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীরা একইরূপ হামলার শিকার হয়েছে। এমন নিপীড়নের ব্যাপকতায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা আজ দিশেহারা। তাই অবিলম্বে এই সকল নিপীড়ন বন্ধের দাবি জানিয়েছেন বিবৃতিদাতা ৩৫ জন শিক্ষক। একইসাথে শিক্ষার্থী হয়রানি ও শিক্ষার্থী নিপীড়ন বন্ধ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলসমূহ খুলে দিয়ে অতিসত্বর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার পরিবেশ ফিরিয়ে আনার দাবি জানানো হয়। শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রসমাজের দাবির সাথে তারা একাত্মতা প্রকাশ করেন।

বৃষ্টি উপেক্ষা করে রাজপথে আওয়ামী লীগ: প্রবল বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে জনগনের যানমাল রক্ষাসহ সকল প্রকার ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি প্রতিহতের জন্য শনিবার দিনভর ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের গৌরনদী উপজেলা অংশে শান্তি মিছিল করে অবস্থান করেছেন আওয়ামী লীগ ও তার সকল সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা।

এ সম্পর্কিত আরও খবর