টানা ১৬ বছরের শাসনের পর আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছেড়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ক্ষমতা ছেড়ে দেশত্যগের ঘটনায় রাজধানীসহ সারা দেশে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কার্যালয়, থানা ও নেতাকর্মীদের বাসায় অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে।
ফায়ার সার্ভিসের তথ্যমতে, এই মুহুর্তেই রাজধানীতে অগণিত অগ্নিসংযোগের খবর রয়েছে তাদের কাছে। যার নির্দিষ্ট তথ্য নির্ণয় করা কঠিন। এছাড়া এগুলো সংঘাতের পরিকল্পিত আগুন হওয়ায় নেভানোও সম্ভব হচ্ছে না বলে জানা গেছে। ফলে দিশেহারা হয়ে উঠেছেন তারা।
সোমবার (৫ আগস্ট) নাম পরিচয় না জানিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমের এক কর্মকর্তা এ তথ্য বার্তা২৪.কমকে নিশ্চিত করেন।
ওই কর্মকর্তার কাছে আগুনের তথ্য জানতে চাইলে তিনি বার্তা ২৪.কমকে বলেন, এই মুহুর্তে রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অগণিত অগ্নিসংযোগের ঘটনার খবর রয়েছে। এগুলো এখনও জ্বলছে। কত জায়গা আগুন জ্বলছে তার নির্দিষ্ট তথ্য নির্নয় করা কঠিন। আমাদের আগুনের ফোন আসার খবর আসছেই। কিন্তু আমরা সেগুলো নেভাতে যেতে পারছি না। কারণ এগুলো সব সংঘাতের কারনে পরিকল্পিতভাবে লাগানো আগুন। ৯৯ দশমিক ৯৯ শতাংশ লাগানো আগুন। আমরা সেখানে যেতে পারছি না। সেখানে গেলে আমাদের উপর আক্রমণ হবে। আমাদেররও তো নিরাপত্তার বিষয় আছে।
এর আগে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষমতা ত্যাগ করে দেশ ত্যাগের পর সন্ধা নাগাদ ঢাকা মহানগর পুলিশের মোহাম্মদপুর থানায় আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা৷ একই সঙ্গে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয় থানার মালামাল-কাগজপত্র।
জানা যায়, সন্ধা নাগাদ থানায় ঢুকে পরে সাধারণ মানুষ। এ সময় থানাটিতে ব্যাপক ভাঙচুর চালান তারা৷ একই সঙ্গে থানার লকার, চেয়ার-টেবিলসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র বের করে নিয়ে আসেন। থানার পাশাপাশি বাইরে থাকা পরিত্যাক্ত মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কারেও আগুন দেয়া হয়।
তার আগে ঢাকা মহানগর পুলিশের আদাবর থানায় আগুন দেয় বিক্ষুব্ধ জনতা৷ একই সঙ্গে ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয় থানার মালামাল-কাগজপত্র।
এ সময় শুরুতে সাধারণ মানুষকে প্রতিহত করার চেষ্টা চালায় পুলিশ। তবে জনতার রোষানলে কাছে বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি পুলিশ। পরে থানা ছেড়ে চলে যান পুলিশ সদস্যরা। পুলিশ থানা ত্যাগ করার পর থানায় ঢুকে পরে সাধারণ মানুষ। এ সময় থানাটিতে ব্যাপক ভাঙচুর চালান তারা৷
একইভাবে সারাদিন রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরের বঙ্গবন্ধুর বাড়ি, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যালয়, শ্যামলী রাজনৈতিক কার্যালয়, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাসভবন ভাংচুরসহ বিভিন্ন নেতাকর্মীদের বাসভবন, স্থানীয় রাজনৈতিক কার্যালয়, বিভিন্ন ওয়ার্ড ভিত্তিক রাজনৈতিক কার্যালয়ে ও আওয়ামী লীগ নেতাদের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগ করা হয়।