সাম্প্রদায়িক আক্রমণের বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি হিন্দু মহাজোটের

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা ২৪.কম, ঢাকা | 2024-08-13 11:48:45

বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও দোষীদের বিচার, সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন ও সংখ্যালঘু কমিশনের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট।

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক নিয়া হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের মুখপাত্র ও নির্বাহী মহাসচিব পলাশ কান্তি দে এ দাবি জানান।

পলাশ কান্তি দে এক লিখিত বক্তব্যে বলেন, দেশবাসীসহ বিশ্ববাসী জানতে পেরেছে বিগত কয়েকদিন যাবত দেশে কি পরিস্থিতির শিকার হয়েছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাঙচুর, ঘরবাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লুটপাট ও আগুনে পুড়িয়ে দেয়া জোরপূর্বক জমি দখল ও দেশ ত্যাগের হুমকির যে ঘটনা ঘটানো হল তা ৭১ এর পুনরাবৃত্তি। এটা কোনো মানুষের ওপর নয় এটা হিন্দু ধর্মের ওপর সুস্পষ্ঠ আঘাত। সোমবার (১২ আগস্ট) পর্যন্ত ৪৮ টি জেলায় ২৭৮ টি জায়গায় হিন্দু সম্প্রদায় এর ওপর হামলা ও হুমকি এসেছে। অন্তর্বর্তী সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব:) ড. এম সাখাওয়াত হোসেনের সঙ্গে আমরা আমাদের দাবি পেশ করি এবং তিনি  আমাদের সব কথা গুরুত্ব দিয়ে শুনেছেন এবং পরবর্তী ক্যাবিনেট মিটিং এ উনি আমাদের সমস্ত বিষয় তুলে ধরবেন।

তিনি বলেন, বিগত সময়ে যারা সরকারে ছিলেন সে সমস্ত রাজনৈতিক দলের কাছে আমরা বিগত ২৪ বছর বার বার বলার পরেও আমদের কোনো দাবি তারা পূরণ করে নাই। এখন আমরা আশাবাদী এই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের এই সরকার আমাদের দীর্ঘদিনের দাবি পূরন করবেন। একই সাথে আমদের ছাত্ররা দেশব্যাপী যে আন্দোলন করছে আমার তার সাথে একমত ছাত্রদের দাবি মেনে নেয়ার আমরা আহবান জানাই।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট এদেশের হিন্দুদের সমস্যা ও অধিকার নিয়ে কাজ করে। আমাদের সংগঠনের একজন ব্যক্তি যার নাম গোবিন্দ চন্দ্র প্রমানিক তিনি সংগঠনের সাবেক মহাসচিব যিনি সংগঠন বিরোধী কাজ কর্ম জড়িত থাকায় বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের ২০১৬-২০১৮ কেন্দ্রীয় কার্য নির্বাহী কমিটিতে তাকে বাদ দিয়ে কমিটি করা হয় পরে সে তার দোসর দের নিয়ে আরও একটি পাল্টা কমিটি দেয়। পরে আমরা একটি সংবাদ সম্মেলন করে আনুষ্ঠানিক ভাবে তাকে বহিষ্কার ও স্ব- ঘোষিত মহাসচিব হিসাবে ঘোষণা দেই যা দৈনিক পত্রিকা মারফত দেশবাসীকে জানানো হয়।

সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি ড. প্রভাস চন্দ্র রায় বলেন, দেশে সরকার পরিবর্তন হলেই সর্বপ্রথম হিন্দুদের ওপর হামলা করা হয়। অতীতে তেমন আক্রমণ না থাকলেও ইদানীং আক্রমণ বেশি হচ্ছে। আমরা নিরাপত্তা নিয়ে এদেশে বেঁচে থাকতে চাই। এদেশে আমরা জন্মগ্রহণ করেছি। এদেশে আমাদেরও অধিকার রয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা সোমবার (১২ আগস্ট) সরকারের কাছে সাতটি দাবি জানিয়েছি। দাবি গুলো হলো-

দেশজুড়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর সাম্প্রতিক সময়ে ভয়াবহতম সাম্প্রদায়িক আক্রমণের বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে। সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন ও কমিশন করতে হবে। মন্দির ও বসত বাড়ি সরকারি খরচে পুন:স্থাপন করতে হবে। দ্রুত বিচার টাইকুনালে দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে এবং তদন্ত রির্পোট জনসম্মুখে প্রকাশ করতে হবে। ২০০০ সাল থেকে ২০২৪ আজকে পর্যন্ত সংখ্যালঘু নির্যাতনের রির্পোট জনসম্মুখে প্রকাশ করা। আসন্ন দুর্গাপূজা ৩ দিনের ছুটি ঘোষণা করা। সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা।

বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোটের সভাপতি ড. প্রভাস চন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের নির্বাহী সভাপতি সুধাংশু চন্দ্র বিশ্বাস, প্রধান সমন্বয়কারী ড. সোনালী দাস, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রনজিত কুমার মৃধা, প্রভাস চন্দ্র মন্ডল, তপন হাওলাদার, জগন্নাথ হালদার, সুনীল মালাকার, সঞ্জয় কুমার রায়, যুগ্ম মহাসচিব অখিল মন্ডল, শিপন কুমার বিশ্বাস, ফনিভুষন হালদার, শ্যামল রঞ্জন মন্ডল, সমীর সরকার, সুশীল কুমার মিত্র ডা:নিমাই চন্দ্র আর্য্য, কনজ দাস, হারাধন বিশ্বাস, কেনেডি ঘোষ, সাংগঠনিক সম্পাদক আশীষ বাড়ই, সঞ্জয় কুমার সাহা, খগেন সুত্রধর, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মৃদুলা বিশ্বাস, নন্দীতা ঘরামী, জাতীয় হিন্দু যুব মহাজোটের প্রধান সমন্বয়কারী পংকজ হালদার, সভাপতি প্রদীপ কান্তি দে, সাধারন সম্পাদক রাজেস নাহা, সাংগঠনিক সম্পাদক মাধব দাস হিন্দু ছাত্র মাহাজোটের সভাপতি অনুপম দাস, নির্বাহী সভাপতি অভিজিৎ রায়, সাধারন সম্পাদক রাজিব সাহা সহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর