রাঙামাটিতে পানিবন্দী ৩০ হাজার বাসিন্দা

, জাতীয়

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, রাঙামাটি | 2024-08-23 16:53:00

দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় কয়েকদিনের টানা বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে কাপ্তাই হ্রদের পানিতে এক শিশুর মৃত্যুসহ ৩০ হাজার মানুষ পানিবন্দী হয়ে আছে রাঙামাটিতে।

নানিয়ারচর উপজেলায় বুড়িঘাট ইউনিয়নের কুকুর মারা এলাকায় চেঙ্গী নদীতে ঢলের স্রোতে মারা যাওয়া শিশুর নাম শ্রেষ্ঠ চাকমা। তার বয়স ছিল মাত্র তিন বছর। নানিয়ারচর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আরাফাত হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।  

টানা বর্ষণের ফলে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি, লংগদু, বিলাইছড়ি, কাউখালী, নানিয়ারচর ও সদর উপজেলার নিন্মাঞ্চল পানির নীচে তলিয়ে গেছে।


অভ্যন্তরীণ বেশ কয়েকটি সড়কে পাহাড় ধস, রাস্তা ভেঙ্গে এবং ঢলের পানিতে তলিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এছাড়াও প্রবল বর্ষণের ফলে ঘাগড়া-বড়ইছড়ি-বান্দরবান এবং রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের ২১টি স্থানে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে। রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি সড়কের কেঙ্গেলছড়ি এলাকা প্লাবিত হওয়ায় ওই সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। টানাবৃষ্টিপাতের ফলে জেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড়ধসের ঘটনা ঘটেছে বলে নিশ্চিত করেছেন রাঙামাটি সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী সবুজ চাকমা।


বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শিরিন আক্তার জানিয়েছেন, কয়েকদিনের ভারী বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে বাঘাইছড়ি উপজেলা। ৫৫টি আশ্রয় কেন্দ্রে তিন হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছে। তবে বন্যার পানি বাড়তে থাকায় উপজেলার নতুন নতুন গ্রাম প্লাবিত হতে থাকায় এলাকাবাসী আশ্রয় কেন্দ্রমুখী হচ্ছে বলে জানা গেছে।


রাঙামাটি জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ভারি বৃষ্টিপাতে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি মোকাবিলায় পুরো রাঙামাটি জেলায় মোট ২৬২টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। রা

রাঙামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান জানিয়েছেন, অতি ভারি বর্ষণের পূর্বাভাসে রাঙামাটিতেও পাহাড়ধসের আশঙ্কা রয়েছে। পাহাড়ের পাদদেশে ঝুঁকিপূর্ণভাবে বসবাসকারীদের ক্ষতি এড়াতে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রে সরে যেতে শহরজুড়ে মাইকিং করা হচ্ছে।
জেলার সার্বিক দুর্যোগ ও  বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান জানান, জেলার বাঘাইছড়ি, কাউখালী, লংগদুসহ কয়েকটি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। রাঙামাটি সদরে পাহাড়ধসের ঝুঁকি থাকায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকলকে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। জেলার শহর এলাকায় ৭৫টি আশ্রয় কেন্দ্রসহ পুরো জেলায় সর্বমোট ২৬৭টি আশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এদিকে কাপ্তাই হ্রদের পানি হু-হু করে বাড়তে থাকায় নিন্মাঞ্চলে বসবাসরতদের মানুষজনের মাঝে চরম উৎকন্ঠা বিরাজ করছে। হ্রদে পানি বেড়ে সর্বোচ্চ ধারণক্ষমতার কাছাকাছি পৌঁছেছে। কর্ণফুলী পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদনও বেড়েছে। কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এ টি এম আব্দুজ্জাহের বলেন, শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত হ্রদে পানির উচ্চতা রয়েছে ১০৬.০৬ ফুট এমএসএল। যা বৃহস্পতিবার ছিল ১০৫.৮৪ ফুট এমএসএল। তিনি জানান, কাপ্তাই হ্রদে সর্বোচ্চ পানি ধারণ ক্ষমতা ১০৯ ফুট এমএসএল (মিন সি লেভেল)। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রতি সেকেন্ডে ৩০ হাজার কিউসেক পানি ছেড়ে দেওয়া হয়। আর সাধারণত পানির উচ্চতা ১০৮ এর বেশি হলে গেইটগুলো খুলে দেওয়া হয়।  

এ সম্পর্কিত আরও খবর