মাজারের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি

, জাতীয়

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, ঢাকা | 2024-09-10 17:06:24

মাজারের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে তরিকতপন্থী ছাত্র সংগঠন। তারা জানায়, ১২ আউলিয়ার দেশে মাজার ভেঙে নিঃশেষ করে দেয়া হচ্ছে। কিন্তু যে যার ধর্ম পালন করবে, এটাইতো স্বাধীনতা। কোনো কিছু চাপিয়ে দেয়াতো স্বৈরাচার মনোভাব। কিন্তু এখন দেশের বিভিন্ন জায়গায় মাজারে হামলা করা হচ্ছে, ভাঙচুর করা হচ্ছে। তাই যে সকল দরবার ও মাজারে চরমপন্থীদের হামলার হুমকি রয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই সকল দরবার ও মাজারে সেনাসদস্য মোতায়েন করতে হবে বলে দাবি জানান তারা।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর ) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মাজার ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রতিবাদে সার্বজনীন তরিকত সূফী ফাউন্ডেশন বাংলাদেশ ও তরিকতপন্থী ছাত্র সংগঠন আয়োজিত মানববন্ধনে তারা এই দাবি জানান তারা।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, তোমার ধর্ম তুমি করবে, আমি করব আমার। নিজ ইচ্ছা চাপায় যে সে হচ্ছে স্বৈরাচার। আজকে শাহজালালের মাজারে হামলা চালানো হচ্ছে, শাহ পরানের মাজারে হামলা চালানো হচ্ছে। মাজার ধ্বংসের একটা নীল নকশা করা হচ্ছে। আমরা বলতে চাই, আপনারা এর থেকে সরে আসুন। আমাদের অস্থির করলে আপনারা পালানোর সময় পাবেন না। তাই বলছি মাজারওয়ালাদের খেপাবেন না।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ্য করে তারা বলেন, আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে বলতে চাই, আপনারা যদি মন্দির রক্ষা করতে পারেন, প্যাগোডা রক্ষা করতে পারেন, তাহলে মাজার রক্ষায় কী সমস্যা আপনাদের?

এসময় মানববন্ধনে তরিকতপন্থী ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে ১০ দফা দাবি জানানো হয়। তাদের দাবিগুলো হলো-অবিলম্বে দেশের মাজার, দরবার ও খানকাহ শরীফ ভাঙার সাথে জড়িত সকল ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে তাদের বিচারের আওতায় আনতে হবে; যে সকল মসজিদে উগ্রবাদ ও জঙ্গিবাদ প্রচার করার মাধ্যমে তরিকতপন্থী মাজার ও দরবার ভাঙচুরে উসকানি দেওয়া হচ্ছে, অতি শীঘ্রই তাদের শাস্তি প্রদান করতে হবে; উগ্রবাদীদের হামলায় যে সকল তরিকতপন্থী আহত হয়েছে, তাদের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করতে হবে; উগ্রবাদীদের হামলায় যারা নিহত হয়েছে, প্রতিটি হত্যার সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে দোষী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে বিচার করতে হবে; দেশের সকল মাজার, দরবার ও খানকাহ শরীফের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে।

এছাড়াও, দেশের এ ক্রান্তিলগ্নে যে সকল ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উসকানিমূলক বিবৃতি দিয়ে ধর্মীয় দাঙ্গা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে, অবিলম্বে তাদেরকে গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে হবে; দেশের সকল তরিকতপন্থীর নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে প্রকৃত অর্থে স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করতে হবে; যে সকল দরবার ও মাজারে চরমপন্থীদের হামলার হুমকি রয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ওই সকল দরবার ও মাজারে সেনাসদস্য মোতায়েন করতে হবে; যে সকল দরবার এবং মাজার শরীফে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট হয়েছে, মাননীয় ধর্ম উপদেষ্টা ও স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঐ সকল প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন করে এগুলোর নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বিবৃতি প্রদান করতে হবে; এবং যেহেতু ইতোমধ্যে অনেক দরবার ও মাজারে নৃশংস হামলা হয়েছে, তাই অবিলম্বে দরবার ও মাজারগুলোর নিরাপত্তার স্বার্থে বিশেষ নিরাপত্তাসংক্রান্ত সেল গঠন করতে হবে। এই সেলে একাধিক হটলাইনের মাধ্যমে সপ্তাহে ৭ দিন ২৪ ঘণ্টা দরবার ও মাজারসমূহকে নিরাপত্তা সেবা প্রদান করতে হবে।

এসময় মানববন্ধনে জাকির হোসেন চিশতী, খাজা বেনজীর হক চিশতী নিজামী, শাহ সুফি কিরন চিশতী নিজামী, সামসুজ্জামান চৌধুরী সবুজ, আবুল বারেক চিশতী, বেনজীর নূরী সুরেশ্বরী, আরিফ দেওয়ানসহ সারাদেশের বিভিন্ন মাজার, দরবার শরীফের অনুসারীরা উপস্থিত ছিলেন।

এ সম্পর্কিত আরও খবর