ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশে রাষ্ট্র সংস্কারের দাবিতে যাত্রা শুরু হলে সরকার পদত্যাগী আওয়ামী সরকারের সকল চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করছে। সরকারের সে সিদ্ধান্তে পতিত স্বৈরশাসকের দোসর চট্টগ্রাম ওয়াসায় টানা ১৬ বছর ধরে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে থাকা ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) একেএম ফজলুল্লাহর নিয়োগ বাতিল, তার আমলে সংঘটিত সকল দুর্নীতি-অনিয়মের তদন্ত করে শাস্তির আওতায় আনা ও তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারির দাবিতে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা এ এফ হাসান আরিফকে স্মারকলিপি দিয়েছেন বৈষম্য বিরোধী নাগরিক সমাজ চট্টগ্রামের নেতারা।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজে এ স্মারকলিপি দেন নারী নেত্রী জান্নাতুল ফেরদৌস, ছাত্র ও যুব সংগঠক এবং ক্যাব যুব গ্রুপ চট্টগ্রাম মহানগরের সভাপতি আবু হানিফ নোমান।
এ সময় ক্যাব কেন্দ্রীয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন, ক্যাব চট্টগ্রাম মহানগরের যুগ্ম সম্পাদক মো. সেলিম জাহাঙ্গীর, ছাত্র নেতা রাসেল উদ্দীন, রায়হান উদ্দীন ও মানবাধিকার নেতা ওসমান জাহাঙ্গীর, উপদেষ্টার একান্ত সচিব মোহাম্মদ নাছির উদ্দীন ও সহকারী একান্ত সচিব মো. আবিদ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।
স্মারকলিপিতে, যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই ওয়াসা এমডির ব্যবস্থাপনায় তদন্ত টিমের তদন্ত সম্পাদনের এমন কাজে বিস্ময় প্রকাশ করেন। তাঁরা যার বিরুদ্ধে দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ তাকে স্বপদে বহাল রেখে ও অভিযুক্ত ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে তদন্ত টিমের তদন্ত সম্পাদনের হাস্যকর রীতি অব্যাহত রাখার মতো কালো অধ্যায় সংস্কারের দাবি জানান। এমডি ফজলুল্লাহকে চেয়ারে বসিয়ে রেখে তার দুর্নীতি তদন্ত সঠিকভাবে সম্পাদন সম্ভব নয় জানিয়ে স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, তার অধীনে থেকে কেউ অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে তথ্য দিতে সাহস করবেন না। অনিয়মের সুষ্ঠু তদন্তের জন্য আগে তাকে পদ থেকে অব্যাহতি দিতে হবে। পদ ছাড়লে তখনই সঠিক তদন্ত সম্ভব এবং সকল অনিয়ম-দুর্নীতির তথ্য বেরিয়ে আসবে।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, সরকারিভাবে সিদ্ধান্ত আছে আওয়ামী সরকার আমলে নিয়োগ পাওয়া সকল চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হবে। চট্টগ্রাম ওয়াসার এমডি বিগত সরকার আমলে ৮ দফায় ১৬বছর চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে নিয়োজিত। ১৬বছর স্বৈরশাসকের পক্ষ অবলম্বন করে অনিয়ম দুর্নীতির স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে ওয়াসাকে। এই সময়ের মধ্যে ১৪ বারের বেশি পানির দাম বাড়িয়ে চট্টগ্রামবাসীর ওপর বোঝা চাপিয়েছে। এখনো শহরের এক তৃতীয়াংশ মানুষ পানি বঞ্চিত রয়েছে। ওয়াসার বাস্তবায়ন করা ও চলমান প্রতিটি প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে। এমনকি নিজের মেয়ের প্রতিষ্ঠানকে সুয়্যারেজ প্রকল্পের ঠিকাদার নিয়োগ দিয়েছেন।
অনিয়মে জড়িত, তার আত্মীয় ও ওয়াসা কর্মকর্তারা ইতোমধ্যেই দেশত্যাগ করতে শুরু করেছে জানিয়ে স্মারকলিপিতে আরও বলা হয়, এমডি ফজলুল্লাহ যে কোনো সময় দেশ ত্যাগ করতে পারেন। তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারির দাবি জানাই।