ফেনীর সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন সেন্টুকে অপেক্ষা করতে বলায় থানায় যোগদানের প্রথম দিনেই হেনস্থার শিকার হয়েছেন ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান।
শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাতে এ ঘটনা ঘটে।
জানা গেছে, সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান প্রথম কর্মদিবসে উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে এক সেবাপ্রত্যাশীর সঙ্গে কথা বলছিলেন। এ সময় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন সেন্টু ওসির কক্ষে প্রবেশ করে নিজের পরিচয় দিয়ে কথা বলতে চান। ওসি তাকে পরে আসতে বলায় ক্ষিপ্ত হয়ে থানা ত্যাগ করেন সেন্টু।
তার পরপরই উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সোহাগ নূর ও সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মেজবাহ উদ্দিন পিয়াসের নেতৃত্বে ১০-১৫ জনের একটি দল থানায় গিয়ে ওসির কক্ষে সরাসরি ঢুকে পড়ে। সেখানে ওসিকে শাসিয়ে জামাল উদ্দিন সেন্টুকে অসহযোগিতা ও অসম্মানের কারণ জানতে চান তারা। একপর্যায়ে বাকবিতণ্ডায় ওসির কক্ষে হট্টগোল শুরু হয়। পরে থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাকসুদ কামাল ও সদ্য বিদায়ী ওসি সুদ্বীপ রায় এগিয়ে এসে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের শান্ত করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন সেন্টু বলেন, পুলিশ, ডিসি, এসপিসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা এখনো আওয়ামী লীগের লোকজনই রয়ে গেছে। এখনো বিএনপি বা জামায়াত মাইন্ডের লোকজন আসেনি। ভাইয়ের টান ভাইয়ের প্রতি তো থাকবেই। সে হিসেবে থানায় ওবায়দুল কাদেরের ঘনিষ্ঠ লোক আসায় ওসি তাকে নিয়ে অনেক ব্যস্ত হয়ে পড়েন। ওসি নিজেও আওয়ামী লীগের লোক। সেখানে আমার চেয়েও ওবায়দুল কাদেরের ওই লোক ওসির কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তাকে সময় দিলেও তিনি আমাকে দেননি।
থানায় হট্টগোল প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপির এ নেতা বলেন, নেতাকর্মীরা ওসির কাছে সালিশ করতে পারেন কিনা জানতে চেয়েছেন, কোন হট্টগোল করেনি। পারিবারিক সমস্যা নিয়ে ওসি সালিশ করবে এটি হয় নাকি। সালিশে গুরুত্ব দিলে রাজনৈতিক দলের নেতারা আসলে তাদের গুরুত্ব দিবে কিভাবে।
এ ব্যাপারে সোনাগাজী মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুজ্জামান বলেন, সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা শেষ করার পর এক সেবা প্রত্যাশীর অভিযোগ শুনছিলাম। এমন সময় আমার কক্ষে জামাল উদ্দিন সেন্টু আসলে শুভেচ্ছা বিনিময় করে বসতে বলি। তখন সেবা প্রত্যাশী ওই ব্যক্তির সঙ্গে আমি কথা বলাতে উনাকে (সেন্টু) দুই মিনিট অপেক্ষা করতে বলি। কিন্তু তিনি না বসে থানা থেকে চলে যান।
ওসি বলেন, তিনি যাওয়ার পরপরই ১০ থেকে ১৫ জনের একটি দল এসে হট্টগোল শুরু করে। একপর্যায়ে আমার টেবিলে এসে উচ্চস্বরে বাক্যবিনিময় করেন। তবে বিএনপি নেতাকে সময় না দেওয়া বা কথা না বলার যে অভিযোগ উঠেছে তা সত্য নয়।