দীর্ঘ ৫০ মাস বেতন ভাতা পাচ্ছেন না ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ৭৩৮ জন শিক্ষক। ২০১২ ও ২০১৪ সালে দুই ধাপে স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্টে ( STEP) সারাদেশের ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ১০১৫ জন শিক্ষক নিয়োগ করা হয়েছিল।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) বেলা ১২ টায় বেতন ভাতা পরিশোধ ও চাকরি রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের দাবীতে বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে কর্মরত প্রকল্পের ১৭ জন শিক্ষক মানববন্ধন করে।
মানববন্ধন শেষে বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে কর্মরত শিক্ষক মাজেদুর রহমান এতথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, ২০১৯ সালের ৩০ জুন প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। ওই দিনই শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগর ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের উপসচিব সালেহা আকতার স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখার স্বার্থে প্রকল্পে নিয়োজিত শিক্ষকদের বহাল রেখে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করতে বলা হয়। পরবর্তীতে ২০১৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রওনক মাহমুদের সভাপতিত্বে কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের অধীনে আঞ্চলিক পরিচালক, পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট, টেকনিক্যাল স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষদের সাথে মত বিনিময় সভায় স্টেপ শিক্ষকদের "স্টেপ থেকে রাজস্ব খাতে আনার প্রক্রিয়াধীন" নামে অভিহিত করতে হবে এবং নিয়মিত শিক্ষকদের ন্যায় সকল কার্যক্রমে সম্পৃক্ত করতে হবে মর্মে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।
এরপর এক বছর তারা রাজস্ব খাত থেকে বেতন ভাতা উত্তোলন করেন। ২০২০ সালের জুলাই মাস থেকে তাদের বেতন ভাতা বন্ধ হয়ে যায়। দীর্ঘদিন বেতন ভাতা না পেয়ে অনেকেই চাকরি ছেড়ে দিয়ে অন্য চাকরিতে চলে যান। বর্তমানে সারাদেশের ৪৯টি পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটে ৭৩৮ জন শিক্ষক কর্মরত রয়েছেন।
মানববন্ধনে বলা হয় স্টেপ প্রকল্পের মাধ্যমে শিক্ষক নিয়োগের আগে ২০০৯ সালে কারিগরি শিক্ষার হার ছিল শতকরা এক ভাগ। যা বর্তমানে ২২ ভাগ এবং ভর্তির হার ৩০ ভাগ। এই প্রকল্পের শিক্ষকরা গত পাঁচ বছর ধরে বেতন ভাতা না পেয়েও শিক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন। ৫০ মাস বেতন বিহীন অবস্থায় পরিবার পরিজন নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন। ৭৩৮ জন শিক্ষকের প্রত্যেকের বয়স ৩৬ থেকে ৪০ এর মধ্যে। তাদের অন্য চাকরিতে যাওয়ারও কোন সুযোগ নাই। ইতিমধ্যে অসুস্থ হয়ে সুচিকিৎসার অভাবে বেশ কয়েকজন শিক্ষক অকালে মৃত্যুবরণ করেছেন। মানববন্ধনে আরো বলা হয় প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হওয়ার পাঁচ বছর পরেও রাজস্ব খাতে স্থানান্তর প্রক্রিয়া এখনও শেষ হয়নি। ফলে ৭৩৮ জন শিক্ষক বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন।
এবিষয়ে জানার জন্য কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আজিজ তাহের খানের সাথে যোগাযোগ করার জন্য একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেন নি।