অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে নতুন সংবিধান প্রণয়ন করে দ্রুত সংস্কার করাসহ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন পরামর্শ দিয়েছে বাংলাদেশ প্রবাসী ও অভিবাসী পরিষদ, এনআরবি প্রফেশনাল ফর রিফর্ম ও বাংলাদেশ প্রবাসী অধিকার ঐক্য পরিষদ নামের তিনটি সংগঠন।
সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে দেয়া ৩০টি প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে পরামর্শ দেয়া হয়। যেখানে প্রবাসীদের দাবি দাওয়াসহ দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা সংস্কার, নির্বাচন ব্যবস্থা, অর্থনীতি ও দুর্নীতি বন্ধের পাশাপাশি দেশের মানুষের মানসিক স্বাস্থ্য সেবার বিষয়ে সরকারকে পরামর্শ দেয়া হয়।
বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তোফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে আয়োজিত 'একটি আধুনিক ও মানবিক বাংলাদেশ বিনির্মাণের লক্ষ্যে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে রেমিট্যান্স যোদ্ধা ও অভিবাসীদের প্রস্তাবনা পেশ অনুষ্ঠানে এসব বলা হয়।
গোল টেবিল আলোচনায় আন্দোলনে নিহত শহীদ আব্দুর রহমান জিসানের পিতা প্রবাসী বাবুল সরকার বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আমার ছেলে জিসানকে গত ২০ জুলাই সন্ধ্যা ৬ টায় পুলিশ গুলি করে মেরে ফেলেছে। আমি দক্ষিণ সুদানে থাকি। বাংলাদেশে আসার জন্য আমার কাছ থেকে ৮০০ ডলার নিয়েছে। কিন্তু, ভারতে সেইম ভিসার দাম ৪০০ ডলার। এই সিন্ডিকেট ভাঙতে হবে।
গোল টেবিল আলোচনায় প্রবাসী ইঞ্জিনিয়ার সালাউদ্দিন বলেন, আমি দীর্ঘ ১৬ বছর যাবত দুবাইতে গভমেন্ট জব করেছি। আমরা প্রবাসে থেকে এই আন্দোলনে ভূমিকা রাখার চেষ্টা করেছি।
আলোচনায় নাগরিক পরিষদের আহবায়ক মো. শামসুদ্দিন, এই আন্দোলন শুধু ছাত্রদের অভ্যুত্থান নয়, এটা পুরো দেশের মানুষের অভ্যুত্থান ছিল। আমাদেরকে একটি মানবিক বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।
তিনি বলেন, আমাদের অভ্যন্তরে ভারতীয় দালালরা এখনো রয়েছে। তারা দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার জন্য বেকুল হয়ে আছে। আগে দেশ সংস্কার করতে হবে। পরে নির্বাচন দিলে ভালো হবে। দেশের প্রতিটা সেক্টরে দুর্নীতি, তাই আগে এগুলো সংস্কার করতে হবে।
বাংলাদেশ প্রবাসী ও অভিবাসী পরিষদের সমন্বয়ক মো. আবু তোয়েব হাবিলদার বলেন, প্রবাসীরা তাদের শ্রমের টাকা দেশে পাঠায়। রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখে। কিন্তু এই প্রবাসীদের নিয়ে দেশের কোনো সরকারেরই মাথা ব্যথা ছিল না। বাংলাদেশের মাটিতে এবং বিদেশের মাটিতেও প্রবাসীরা সম্মান পায় না। রেমিট্যান্স যোদ্ধারা যদি রেমিট্যান্স না দিতো তাহলে দেশ কখনোই অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে যেতে পারতো না।
সিন্ডিকেট বন্ধ দাবি জানিয়ে প্রবাসী ও অভিবাসী পরিষদের এই সমন্বয়ক বলেন, ভারত থেকে মধ্যপ্রাচ্যে যেতে মাত্র ৭০ হাজার টাকা লাগে। পাকিস্তান থেকে যেতে লাগে ১ লাখ টাকা। কিন্তু, বাংলাদেশ থেকে যেতে কেন ৫ লাখ, ৭ লাখ, ১০ লাখ টাকা লাগবে? এটা সরকারকে জবাব দিতে হবে। এ ধরনের সিন্ডিকেট বন্ধ করতে হবে।
গোলটেবিল আলোচনায় আলোচনায় শ্রমিক নেতা শাহ আলম জানান, বাংলাদেশের শ্রম আইনে প্রবাসী শ্রমিকদেরকে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
আরেক শ্রমিক নেতা মুয়াজ আহমেদ বলেন, প্রবাসে যে শ্রমিকরা মারা গেছেন, তাদের মরদেহ ঠিক মতো দেশে আসছে কিনা এবং তাদের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা করে দেওয়া হয়েছে কিনা সেটা সরকারকে বলতে হবে।