সৌন্দর্য হারাচ্ছে কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকত

, জাতীয়

উপজেলা করেসপন্ডেন্ট, বার্তা২৪.কম, কলাপাড়া, পটুয়াখালী | 2024-09-30 13:15:44

সাগরকন্যা পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় অবস্থিত দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত কুয়াকাটা। এক জায়গায় দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তকে উপভোগ করার জন্য প্রতিবছরই লাখো পর্যটকের সমাগম ঘটে এ সৈকতে। তবে নানা অব্যবস্থাপনার কারণে দিন দিন সৌন্দর্য হারিয়ে যাচ্ছে এ সৈকতটির।

সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, প্রতিবছরের মতো এ বছরও সমুদ্রের ঢেউয়ের ঝাপটায় সৈকতের বালুক্ষয় হচ্ছে। পাশাপাশি সমুদ্র গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে বেশ কিছু স্থাপনা। দিন দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে সৈকত। 

বালুক্ষয় রোধে স্থায়ী সমাধান না খুঁজে প্রতিবছর জরুরি মেরামত প্রকল্প নিচ্ছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। আর এ প্রকল্পের বালুভর্তি জিওটিউব ও জিওব্যাগ সৈকতের সৌন্দর্য নষ্ট করছে। সৈকতের জিরো পয়েন্টের দু’পাশে দুই কিলোমিটার এলাকা এখন জিওটিউব ও জিওব্যাগের দখলে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, অপরিকল্পিতভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা বালুভর্তি এসব জিওব্যাগে শ্যাওলা ধরছে। প্রতিনিয়ত পা পিছলে দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন আগত পর্যটকরা। এমনকি সমুদ্রে গোসল করতে নেমে আহত হচ্ছেন সমুদ্রপ্রেমীরা। পর্যটকদের জন্য বিরক্তিকর পরিবেশ বিরাজ করছে ব্যাপক সম্ভাবনাময় এই সৈকতে। তাই যেখানে-সেখানে পড়ে থাকা জিওটিউব ও জিওব্যাগ দ্রুত অপসারণের দাবি স্থানীয়সহ পর্যটকদের। আর সুপরিকল্পিত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করে সৈকতের সৌন্দর্য রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন সচেতন মহল।


ট্যুর অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) প্রেসিডেন্ট ইমতিয়াজ রুমান তুষার বলেন, বর্তমান সৈকতের যে দূরাবস্থা এটা অত্যন্ত দুঃখজনক। একদিকে অপরিকল্পিত জিও ব্যাগগুলো ছড়ানো ছিটানো, অন্যদিকে ঘুরতে আসা পর্যটকদের দুর্ভোগ, সব মিলিয়ে এ অব্যবস্থাপনা দূর করতে না পারলে এবং সুপরিকল্পিতভাবে সাজাতে না পারলে কুয়াকাটার সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা সম্ভব নয়। অপার সম্ভাবনাময় এ সৈকত থেকে পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নেবে।

টাঙ্গাইল থেকে ঘুরতে আসা পর্যটক দম্পতি (সিয়ামও মিম) বলেন, আমরা তো এরকম সৈকত চাই না, দীর্ঘদিনের ক্লান্তি দূর করার জন্য সৈকতে আসা। এসে দেখি এখানে জীর্ন-শীর্ন জিও ব্যাগগুলো শ্যাওলা ধরা, হাঁটা যাচ্ছে না। আমার ছোট ছেলে পায়ে ব্যথা পেয়েছে। ঘুরতে এসে যদি হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়, তাহলে ঘুরতে এসে কি লাভ?

সৈকতের পুরানো, জীর্ণ শীর্ণ, ছেঁড়া, শ্যাওলা ধরা জিওব্যাগ অপসারণের পক্ষে মত দিয়ে কুয়াকাটা বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) মো. রবিউল ইসলাম বার্তা২৪.কমকে বলেন, বালুর বস্তাগুলো ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকায় সৈকতের সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। আমি ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের নিয়ে সৈকত পরিদর্শন করেছি। জিও ব্যাগগুলো অপসারণ করলে সৈকতের কোনো ক্ষতি হবে কি না, সে বিষয়ে যাচাই বাছাই চলছে। তাদের মতামত পেলেই কুয়াকাটা পৌরসভার সহায়তায় বস্তাগুলো অপসারণ করে সৈকতের সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনা হবে।

এ সম্পর্কিত আরও খবর